ব্রাত্য বসু। সংগৃহীত ছবি।
কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে খুশি রাজ্যগুলি। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এ নিয়ে টুইট করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ব্রাত্য জানান, রাজ্যের অবস্থানকেই তুলে ধরেছে দেশের শীর্ষ আদালত।
শিক্ষামন্ত্রী তাঁর টুইটে বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট আবারও জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে রাজ্য সরকারের অবস্থানকেই মান্যতা দিয়েছে। দেশের বৈচিত্রের কথা মাথায় রেখে শিক্ষানীতি নিয়ে কেন্দ্র একটি বিশদ রূপরেখা স্থির করতে পারলেও বিভিন্ন রাজ্য সরকারই তাদের মতো করে সেই শিক্ষানীতির বাস্তবায়ন করতে পারবে।” এর জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই কেন্দ্রের শিক্ষানীতির মূল কাঠামোকে অক্ষুণ্ণ রেখে রাজ্যের জন্য পৃথক শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।
জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া তৈরি হয়েছিল ২০২০ সালে। জাতীয় শিক্ষানীতি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ করে পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরালা-সহ একাধিক রাজ্য। মূলত অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিই এর তীব্র বিরোধিতা জানায়। পাশাপাশি, সমস্ত রাজ্য মিলে এই দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলাও করে।
সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যগুলির বক্তব্য ছিল,ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী শিক্ষাব্যবস্থা যৌথ তালিকাভুক্ত। তবে নয়া শিক্ষানীতি নিয়ে কেন্দ্র একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সংবিধানবিরোধী। তাই এখনও পর্যন্ত নয়া শিক্ষানীতি চালু করেনি রাজ্যগুলি। শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতেই সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতি মানতে কোনও রাজ্যকে বাধ্য করা যাবে না। বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ জানায়, রাজ্যের পদক্ষেপ যদি নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে, তবে শুধু সে ক্ষেত্রেই আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে।
সাম্প্রতিককালে জাতীয় শিক্ষানীতিকে কেন্দ্র করে তামিলনাড়ুর সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাত চরমে উঠেছে। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের অভিযোগ, সমস্ত রাজ্যের উপর জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। অন্য দিকে, ‘অবাধ্য’ তামিলভূমিকে সাজা দিতে শিক্ষাবিস্তারে আর্থিক অনুদান বন্ধ করছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী প্রশাসন বলেও অভিযোগ তাঁর। সমস্যার সূত্রপাত ২০২০ সালে। ওই বছর নতুন শিক্ষানীতি চালু করে কেন্দ্র। নতুন শিক্ষানীতির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, দেশের সমস্ত রাজ্যে প্রথম ভাষা হিসাবে স্কুলপড়ুয়াদের বাধ্যতামূলক ভাবে শিখতে হবে মাতৃভাষা। দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে বেছে নিতে হবে হিন্দি বা ইংরেজিকে। এ ছাড়া, তৃতীয় একটি ভাষা-ও বাছতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে। সেটি হবে কোনও প্রাচীন ভারতীয় ভাষা। নতুন শিক্ষানীতির এই বিষয়টিতেই প্রবল আপত্তি রয়েছে তামিলনাড়ু-সহ দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যের।