প্রতীকী চিত্র।
অতিরিক্ত ৭০টি নজরদারি ক্যামেরা বসানো হবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি ক্যাম্পাসে। অর্থ মঞ্জুর করছে সরকার, সিদ্ধান্ত নবান্নের বৈঠকে।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বুধবার নবান্নে রাজ্য সরকার ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বৈঠকে উঠে আসে নজরদারি ক্যামেরা ও নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগের প্রসঙ্গ। যদিও, আর্থিক অনুমোদন পেয়েছে শুধু নজরদারি ক্যামেরাই। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবারই অনুমোদিত ফাইল পৌঁছে যাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে।
বুধবার দুপুরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, উচ্চশিক্ষা দফতর এবং অর্থ দফতরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে অন্যতম বিষয় ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’’টি ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ৭০টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর প্রস্তাব রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় তরফে। এ জন্য ৬৮.৬২ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল। নবান্নের বৈঠকের পর সে প্রস্তাব অনুমোদন করেছে অর্থ দফতর।
জানা হয়েছে, ৭০টি নজরদারি ক্যামেরার মধ্যে ৩০টি বসানো হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাসে। আর ২০টি বসানো হবে সল্টলেক ক্যাম্পাসে।
তবে শুধু, নজরদারি ক্যামেরাই নয়। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার স্বার্থে যাদবপুরে ৩২ জন প্রশিক্ষিত নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ বিষয়েও আলোচনা হয়। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাসে ৭.৫১ লক্ষ টাকা লাগবে বলে জানিয়েছেন। নবান্ন সূত্রে খবর, এই প্রস্তাবে এ দিন অনুমোদন মেলেনি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে স্থায়ী নিরাপত্তারক্ষীর পদ রয়েছে ১৩০টি। কিন্তু কর্মরত মাত্র ৭৮ জন। শূন্য ৫২টি পদের মধ্যে রয়েছে দু’টি সুপারভাইজার পদও। ওই শূন্যপদগুলিতে অবিলম্বে কর্মী নিয়োগের দাবি উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে। তা ছাড়া, বেসরকারি সংস্থা মারফত অস্থায়ী নিরাপত্তারক্ষীরাও নিয়োগ করার প্রস্তাব এসেছে। এই মুহূর্তে তিনটি শিফ্টে মোট ১১ জন অস্থায়ী নিরাপত্তারক্ষী ৮ ঘণ্টা করে কাজ করছেন। সেই সংখ্যাও শিফ্ট-প্রতি ১০ জন করে বাড়ানোর কথা ভাবছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যাদবপুরের দু’টি ক্যাম্পাসেই অস্থায়ী নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। এ জন্যও প্রতি বছর একটি মোটা অঙ্কের টাকা প্রয়োজন।
নবান্ন সূত্রের খবর, নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তাব মঞ্জুর না হলেও উচ্চশিক্ষা দফতরকে এই সংক্রান্ত ফাইল পাঠাতে বলা হয়েছে অর্থ দফতরের কাছে। আর সেখানেই গাফিলতির অভিযোগ তুলছেন অধ্যাপকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, এত দিন ফাইল পাঠাতেই পারেনি উচ্চশিক্ষা দফতর। তাতেই বিস্তর দেরি হয়ে গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে, জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “২০২৩ সালের ছাত্র মৃত্যুর পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় তরফে নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগের কথা সরকারকে জানানো হচ্ছে। কিন্তু এই বিষয় বিকাশ ভবন গড়িমসি করেছে, তারা এত দিন কোনও ফাইল পাঠায়নি নবান্নে। এর থেকেই পরিষ্কার উচ্চশিক্ষা দফতরের মনোভাব।”
তবে এ দিনের বৈঠকে যাদবপুর ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বিষয়ে আরও কিছু আলোচনা হয়েছে। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, জলাশয় চারপাশে সুরক্ষিত বেড়া দেওয়া কথাও উল্লেখ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় তরফ থেকে।