বিবেকানন্দ কলেজ, ঠাকুরপুকুর। ছবি: সংগৃহীত।
ঠাকুরপুকুরের বিবেকানন্দ কলেজের মুকুটে এ বার নাকের এ+ স্বীকৃতি। কলেজের প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী বর্ষে এই স্বীকৃতি মিলল ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল (নাক)-এর তরফে। কলেজের সামগ্রিক পরিকাঠামো এবং শিক্ষাদানের ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে শ্রেষ্ঠত্বের এই শিরোপা প্রাপ্তি, জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
পাঁচ বছর অন্তর দেশের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সামগ্রিক মূল্যায়ন করে নাক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চালু বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্যক্রম, শিক্ষণ পদ্ধতি, গবেষণা, পরিকাঠামো, পড়ুয়াদের শেখার সুযোগ, পড়াশোনায় পড়ুয়াদের অগ্রগতি, কলেজ পরিচালনা এবং ব্যবস্থাপনা, বিভিন্ন অভিনব উদ্যগ-সহ একাধিক বিষয় খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানকে। এই সামগ্রিক মূল্যায়নেই এ বার এ+ গ্রেড প্রাপ্তি হয়েছে বিবেকানন্দ কলেজের। প্রাপ্ত সিজিপিএ স্কোর ৩.২৮।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সাহায্যপ্রাপ্ত এই কলেজের টিচার-ইন-চার্জ, নবকিশোর চন্দ বলেছেন, “কলেজের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী থেকে পড়ুয়া— সকলেই খুশি এই ফলাফলে। নতুন ভাবে আরও কাজ করার উৎসাহ পাচ্ছি।” তিনি জানিয়েছেন, এই নিয়ে তৃতীয় ‘সাইকেল’-এর মাধ্যমে কলেজের সামগ্রিক মূল্যায়ন করল নাক। প্রথম দুই পর্বে কলেজের গ্রেড ছিল বি++ এবং এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে, কলেজ পরিদর্শনে এসে নাক পরিদর্শক দল। প্রথমে এ গ্রেড দেওয়া হয়। শিক্ষা ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের অগ্রগতি এবং কলেজের আর্থিক দিক খতিয়ে দেখে কম গ্রেড দেওয়া হয় বলে তাঁরা পুনর্বার মূল্যায়নের আবেদন জানান। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই তাঁদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার পর কলেজের এই এ+ গ্রেড-এর স্বীকৃতি।
নবকিশোর বলেন, “নাকের তরফে কলেজকে স্বশাসিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। আমরা পূর্ণ উদ্যমে সেই চেষ্টা করব।” তিনি জানান, কলেজের তরফে ইতিমধ্যে একাধিক কর্মমুখী কোর্স চালু করা হয়েছে। আগামী দিনে প্যাথোলজিক্যাল ট্রেনিং, নার্সিং ট্রেনিং-এর মতো আরও কিছু পাঠক্রম চালু করা হবে। পাশাপাশি, চালু করা হবে বৃত্তিমূলক কোর্সও। জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে পড়ুয়ারা যাতে স্বনির্ভর হতে পারেন, সে জন্য মোবাইল মেরামত, নানাবিধ জিনিস তৈরির মতো কাজও শেখানো হবে তাঁদের। এ ছাড়া, কলেজে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরেও মাইক্রোবায়োলজি, এডুকেশন, ফিজ়িক্যাল এডুকেশন-এর মতো নানা বিষয় পড়ানো হবে। যাতে কলেজে বিএড কোর্স এবং আইনের নানা বিষয় পড়ানো যায়, তার জন্য আবেদন জানানো হবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের ২১ অগস্ট কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়। প্রথমে এই প্রতিষ্ঠান পরিচিত ছিল বরিষা কলেজ নামে। এর পর ডিগ্রি কলেজে উন্নীত করা হয় এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।