প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের সমগ্র শিক্ষা মিশনের অধীনের স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্মার্ট ক্লাস নেই। নেই কম্পিউটার ল্যাব, গবেষণাগার। এমনই অভিযোগ শিক্ষা মহলের একাংশের। দাবি, পড়ুয়াদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এর ফলে আগামিদিনে ডিজিটাল ও বাস্তবমুখী ক্লাসের ব্যবহার, প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল থেকে দেশের অন্য রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে বাংলার পড়ুয়ারা।
কিন্তু কেন নেই রাজ্যের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্মার্ট ক্লাস-কম্পিউটার ল্যাব, গবেষণাগার!
সমগ্র শিক্ষা মিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কেন্দ্রের কাছে আটকে রয়েছে সমগ্র শিক্ষা মিশনের অধীনে স্মার্ট ক্লাসের টাকা। গত অর্থবর্ষে কেন্দ্রের কাছ থেকে খাতায় কলমে ৩৪২টি স্মার্ট ক্লাস করার অনুমোদন পেলেও রাজ্যে তৈরি হয়েছে মাত্র ১০০টি স্মার্ট ক্লাস। চলতি বছর অর্থবর্ষেও কেন্দ্রের কাছে দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। কিন্তু সমগ্র শিক্ষা মিশনের এক আধিকারিকেরা জানিয়েছেন গত দু’বছরেও কেন্দ্রের কাছ থেকে কোনও টাকা আসেনি রাজ্যে। মোট ৩ হাজার কোটি টাকা পায় রাজ্য।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘ইদানীং কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার জন্য নানারকম শর্ত চাপাচ্ছে। তার ফলে অবধারিত সংঘাত তৈরি হচ্ছে। কেন্দ্রের টাকায় যদি স্মার্ট ক্লাস হত তা হলে ছাত্রছাত্রীরাই তো সবচেয়ে বেশি লাভবান হত। কিন্তু কেন্দ্র রাজ্যের নকল যুদ্ধে ছাত্র ছাত্রীদেরই তো ক্ষতি হচ্ছে। আমরা দাবি করব, রাজ্য কেন্দ্রের সঙ্গে বসে বিষয়গুলো সমাধান করুক এবং শিক্ষা পরিকাঠামো খাতে যে টাকা পাওয়ার কথা তা আদায় করে নিয়ে আসুক রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার স্বার্থে।’’
সূত্র, সমগ্র শিক্ষা মিশনের প্রকল্পের কাজের জন্য ৬০:৪০ অনুপাতে টাকা পাওয়া যায় কেন্দ্রের তরফে। অর্থাৎ কেন্দ্র ৬০ শতাংশ টাকা দেয়। শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের দাবি এই টাকা আগে ৮০:২০ অনুপাতে পাঠাত কেন্দ্র। তা পরে ৬০ শতাংশ দিত। কিন্তু এখন পিএমশ্রী প্রকল্প রাজ্যে কার্যকর না হওয়ার দু’বছর ধরে কোনও টাকা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
পিএমশ্রী প্রকল্প হল কেন্দ্রীয় সরকারের একটি উদ্যোগ। যেখানে বলা হয়েছে, প্রতিটি রাজ্যেকে ব্লকে ব্লকে একটি করে উন্নত মানের মডেল স্কুল তৈরি করতে হবে। যেখানে স্মার্ট ক্লাস, ডিজিটাল ল্যাব, লাইব্রেরি-সহ উন্নত মানের পরিকাঠামো থাকবে। তবে দেশের বেশির ভাগ রাজ্যে পিএমশ্রী প্রকল্প শুরু হয় গেলেও বাংলা এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে নারাজ। তাই সমগ্র শিক্ষা মিশন টাকা পাচ্ছে না বলেই অভিযোগ।
তবে শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের দাবি, পিএমশ্রী প্রকল্পের সঙ্গে সমগ্র শিক্ষা মিশনের প্রকল্পের কোনও যোগাযোগই নেই। কারণ সমগ্র শিক্ষা মিশন শুরু করা হয় প্রথম ২০০৩ সালে। অনেক আগে থেকে সমগ্র শিক্ষা মিশন পড়ুয়াদের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। বারংবার দিল্লিতে গিয়েও ফিরে আসতে হয়ছে আধিকারিকদের। গত দু’বছর টাকা না পাওয়ার কারণে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ কী হবে তার উত্তর শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের কাছেও নেই।