ছবি: সংগৃহীত।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কর্মীদের কাঁধে রয়েছে প্রচুর দায়িত্ব। অতিরিক্ত ভোটের দায়িত্ব পালন করতে তাঁরা অপারগ। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে যাতে তাঁদের যে কোনও রকম দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়, তার অনুরোধ জানিয়ে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে চিঠি দিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের তরফে চিঠি আসতে শুরু করেছে কর্মীদের কাছে। সেখানে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মীকে বিএলও হিসাবে নিযুক্ত করা হচ্ছে। তিনি তাঁর নিজস্ব কাজের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের এই কাজটিও করতে বাধ্য থাকবেন। প্রয়োজন অনুসারে নির্বাচন কমিশন তাঁকে ডেকে নেবে।
এ দিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নতুন করে এসএসসি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য সরকার। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে পর্ষদকে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে ৩৫ হাজার ৭২৬টি শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।
তার পর মাস ঘুরতেই ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সামলানোর জন্য প্রয়োজন কর্মী ও আধিকারিকদের। এরই মধ্যে যদি নির্বাচনী দায়িত্ব এসে পড়ে, তা হলে সমস্ত কাজে সমস্যা হতে পারে বলে পর্ষদের আশঙ্কা।
এ ছাড়াও তারা মনে করছে, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ একটি স্বশাসিত সংস্থা। তাদের অন্ধকারে রেখে কেন কর্মীদের নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে নির্বাচনের কমিশনের তরফে, তা নিয়েও আপত্তি তুলেছে পর্ষদ। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক কর্তা জানান, ২ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্য জুড়ে প্রায় ১০ লক্ষ পড়ুয়া মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে। প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। এনরোলমেন্ট, রেজিস্ট্রেশন, অ্যাডমিট কার্ড তৈরি থেকে সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা গ্রহণ বা ফলাফল প্রকাশের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পর্ষদের কর্মীরাই পালন করেন। কমিশনকে দেওয়া চিঠিতে জানানো হয়েছে, ২০০০ সালের পর থেকে নতুন করে কোনও কর্মী বা আধিকারিক নিয়োগ হয়নি পর্ষদে। কর্মী সঙ্কট রয়েছে। তাই তাঁদের সমস্ত কর্মীকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি।
একই সমস্যায় ভুগছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদও। ৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক তৃতীয় সেমেস্টার। সেই সময় রাজ্যের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের বুথ লেভেল অফিসার পদে যাতে নিয়োগ না করা হয়, নির্বাচন কমিশনে সেই আর্জি জানিয়েছে সংসদও। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা উদ্বিগ্ন। জেলাশাসক ও বিদ্যালয় পরিদর্শকদের কাছে আবেদন করা হয়েছে যাতে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের নির্বাচনী কাজে যুক্ত না করা হয়। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককেও মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে।” লিখিত চিঠিও দেওয়া হবে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে, জানিয়েছেন সংসদের এক কর্তা।