প্রতীকী চিত্র।
কৃত্রিম মেধার(এআই) ব্যবহার করে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা আটকালো উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। ওএমআর পূরণ করা থেকে সঠিক প্রশ্ন চিহ্নিতকরণের ক্ষেত্রে মূল্যায়নে সাহায্য করবে কৃত্রিম মেধা।
এ বছরই প্রথম সেমেস্টার পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী প্রথম পর্বের পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত ২২ সেপ্টেম্বর। তার ফল ঘোষণা হবে আগামী ৩১ অক্টোবর, জানিয়ে দিয়েছে শিক্ষা সংসদ।
এই পর্বের প্রশ্ন করা হয়েছিল সম্পূর্ণ নৈর্ব্যক্তিক বা এমসিকিউ ধরনের। পরীক্ষা দিতে হয়েছিল ওএমআর শিট-এ। এ বার এই খাতা দেখার মূল্যায়ন করার জন্যই কৃত্রিম মেধা ব্যবহার করেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে পরীক্ষা বাতিল হওয়া আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যাবে। সঠিক উত্তর বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও অনবধানতাবশত কোথাও কালির দাগ পড়ে গেলে সমস্যা নেই। কৃত্রিম মেধার মাধ্যমে তা বিশ্লেষণ করে নম্বর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পড়ুয়াদের স্বার্থেই এই প্রযুক্তির ব্যবহার।”
শিক্ষা সংসদের এক আধিকারিক জানান, একটি বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় এই প্রযুক্তি কাজে লাগানো যাচ্ছে। এর মধ্যে অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রেকগনিশন বা ওসিআর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। যা হাতের লেখা স্ক্যান করে তা ‘ডিজিটাল টেক্সট’-এ রূপান্তর করবে। এটি ওএমআর শিটের ভেতরে থাকা হাতে লেখা অক্ষরগুলি চিনে কম্পিউটার ডেটা হিসেবে চিহ্নিত বা সংরক্ষিত করবে।
ওএমআরশিট-এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর। যে কোনও প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় এই দু’টি ক্ষেত্রে সামান্য ত্রুটি থাকলেও সম্পূর্ণ পরীক্ষা বাতিল করা হয়। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে তা হবে না। কৃত্রিম মেধার সাহায্যে হাতে লেখা রোল নম্বর বা গোলকার চিহ্নিত নম্বর— যে কোনও একটি সঠিক হলেই কাজ হবে। উত্তরপত্র বাতিলের আশঙ্কা থাকবে না।
তবে শুধু রোল বা রেজিস্ট্রেশন নম্বর পূরণের ক্ষেত্রেই নয়। প্রশ্নের উত্তরের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হবে। অনেক সময়ই দেখা যায় সঠিক উত্তর চিহ্নিত করার পাশপাশি অন্য কোনও উত্তরও ভুলবশত চিহ্নিত করে ফেলে পরীক্ষার্থী। সাধারণত কম্পিউটার এ ধরনের উত্তরপত্র মূল্যায়নের সময় তা বাতিল করে দেয়। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ব্যবহার করা প্রযুক্তি তা হতে দেবে না বলে দাবি। কৃত্রিম মেধা নিজেই খতিয়ে দেখবে দু’টি দাগের মধ্যে কোনটিতে বেশি কালি পড়েছে, কোনটিতে চাপ বেশি। সেই উত্তরকেই পরীক্ষার্থীর কাঙ্ক্ষিত উত্তর হিসাবে ধরে নেবে প্রযুক্তি।
চিরঞ্জীব বলেন, “অনেক সময় পড়ুয়ারা কম সময়ের জন্য ভুল করে হয়তো একটি ভুল উত্তরের অপশন হালকা দাগ দিয়ে ফেলেছিল। পরে সঠিক উত্তর বেছে নিয়েছে কৃত্তিম মেধা সেই সঠিক উত্তরটি বেছে নেবে।”