গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম
নতুন উপাচার্য এলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে, সরে গেলেন রাজ্যপাল মনোনীত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত দে। তা হলে কি এ বার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে টিএমসিপি নেতা অভিরূপ চক্রবর্তীর উপর থেকে? প্রশ্ন উঠল নতুন উপাচার্য কাজে যোগ দেওয়ার প্রথম দিনেই।
দীর্ঘ টালবাহানার পর স্থায়ী উপাচার্য পেল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। গত তিন বছর রাজ্য ও রাজ্যপালের নজিরবিহীন সংঘাতের সাক্ষী হয়ে রইল ১৬৮ বছরের প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। বৃহস্পতিবার রাজভবনের অনুমতিক্রমে স্থায়ী উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব নিলেন রাজ্যের সুপারিশ করা প্রার্থী আশুতোষ ঘোষ। এ দিনই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তবে কি এ বার অভিরূপের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবেন?
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আশুতোষ বলেন, “এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। এ সিদ্ধান্ত তো তৎকালীন উপাচার্য একা নেননি। এটি একটি সংগঠিত সিদ্ধান্ত।” তিনি দাবি করেন, পুরো বিষয়টি জেনে তবেই কোনও মন্তব্য করবেন। কারণ, এ বিষয়ে কোনও কমিটি গঠন করা হয়েছে কি না, অভিরূপের বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত হয়েছে কি না, কী রিপোর্ট জমা পড়েছে তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
গত ২৮ অগস্ট, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে নির্ধারিত পরীক্ষার সূচি বদলাতে রাজি ছিলেন না তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত দে। তা নিয়েই সংঘাত শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছোয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা ক্যাম্পাসেই উপাচার্যের নামে কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ। গত ১১ সেপ্টেম্বর তাঁকে ‘সেন্সর’ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। শান্তা দত্ত দে সে দিন সাফ জানিয়ে দেন, রাজ্য সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি বলেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ‘শাস্তি’র ব্যবস্থা করতে হয়েছে।
এই ঘটনার পর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য দাবি করেছিলেন, এই শাস্তি সাময়িক। উপাচার্য বদলে গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে বলে আশাবাদী ছিলেন তিনি। গত সেপ্টেম্বরে অভিরূপ প্রসঙ্গে ব্রাত্য বলেছিলেন, “আমি ওই ছাত্রকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই, এই নিয়ম সাময়িক। এতে যদি কেরিয়ার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তা হলে আমরা তার পাশে আছি। নতুন উপাচার্য যিনি আসবেন তাঁকে আমরা অনুরোধ করব, যাতে এই শাস্তি প্রত্যাহার করা হয়।”
নতুন উপাচার্য কাজে যোগ দেওয়ার পর ব্রাত্যের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। মেলেনি মেসেজ-এর উত্তরও। যদিও অভিরূপ এ দিন দাবি করেন, তিনি জানতেন না ‘সেন্সর’ হওয়ার বিষয়টি। ছাত্রনেতা বলেন, “আমি তো বিষয়টি সংবাদমাধ্যম থেকেই জানতে পেরেছি। আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি। তবে তার পর থেকে আমি আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাইনি। ভবিষ্যতে যাব কি না, সে সিদ্ধান্ত পরে নেব।”