চিকিত্সার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আহত বিএসএফ জওয়ানকে। ছবি: এএফপি।
জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে একনাগাড়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে পাক রেঞ্জার্স বাহিনী। তাদের ছোড়া মর্টার এবং গুলিতে বুধবার নিহত হলেন একই পরিবারের দুই মহিলা। তাঁদের বাড়ি সাম্বা জেলার চিল্লারি গ্রামে। আহত হয়েছেন ১৫ জন। মঙ্গলবার রাতভর আন্তর্জাতিক সীমান্তে হামলা চালানো হয়। বুধবার সকাল পর্যন্ত সেই হামলা চলে বলে জানিয়েছেন সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএএসএফ)-র এক মুখপাত্র। কয়েকটি জায়গা নতুন করে এ দিন পাক-নিশানা হয়ে ওঠে। সকালে বিএসএফের ডিজি দেবেন্দ্র পাঠক জম্মু পৌঁছেছেন বলেও জানিয়েছেন ওই মুখপাত্র। বিএসএফ সূত্রে খবর, ওই রাতে ৫০টি বর্ডার আউটপোস্ট এবং সীমান্তের প্রায় পঁয়ত্রিশটি গ্রাম লক্ষ্য করে মর্টার ও গুলি ছোড়ে পাক রেঞ্জার্সরা।
সাম্বার পুলিশ সুপার অনিল মঙ্গোত্রা জানিয়েছেন, রাতভর হামলা চালানোর পর এ দিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ চিল্লারি গ্রামে ফের হামলা চালায় পাক রেঞ্জার্সরা। সেই সময় মর্টারের একটি শেল এসে পড়ে স্থানীয় শকুন্তলাদেবীর বাড়িতে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। শেলের আঘাতে মৃত্যু হয় তাঁর পুত্রবধূরও। ঘটনায় আহত হয়েছেন শকুন্তলাদেবীর স্বামী-পুত্র এবং দু’টি শিশু। পুলিশ সূত্রে খবর, সীমান্ত লাগোয়া ওই গ্রামের প্রায় ১৭০০ বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেনা সূত্রে খবর, পাল্টা জবাব দেওয়ার ফলে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর যে হামলা চালাচ্ছিল পাকিস্তান, মঙ্গলবার রাতেই তা থেমে যায়। এ দিনের হামলায় যে ১৫ জন আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে তিন জন বিএসএফ জওয়ান রয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে বিএসএফ সূত্রে খবর।
অন্য দিকে, সকাল ৯টা নাগাদ সীমান্ত লাগোয়া জোরদা ফার্ম গ্রামে মর্টারের শেল ছোড়ে পাক রেঞ্জার্সরা। এই ঘটনায় ৬ জন গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। সারা রাত ত্রাণ শিবিরে কাটিয়ে তাঁরা ওই সময়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। আহতদের প্রত্যেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত সোমবারই পাক রেঞ্জার্সদের গুলিতে নিহত হন পাঁচ জন, আহত ৩৪ জন গ্রামবাসী। বিএসএফের তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত জম্মুর সাম্বা এবং কাঠুয়া জেলার বিভিন্ন বর্ডার আউটপোস্ট লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। পাল্টা জবাব দেওয়া হয় বিএসএফ-এর তরফেও। ওই দুই জেলা থেকে প্রায় ২ হাজার মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। শুধু অক্টোবর মাসেই জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে প্রায় ২৪ বার সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে পাক রেঞ্জার্সরা। তাদের হামলায় এ দিন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে আট জনের। আহত হয়েছেন ৭১ জন। হামলার কারণে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে।