অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে থানার বাইরে বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে আলিপুর থানায় হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে বৃহস্পতিবার যোগেশ বোরা নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত শুক্রবার আলিপুর থানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় যোগেশবাবুই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে পুলিশের দাবি। থানায় কাচ ভাঙচুরের সময় তাঁর হাতও জখম হয়। এর পরেই এলাকাছাড়া ছিলেন তিনি। এ দিন ফের এলাকায় ফিরে এলে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার তাঁকে আলিপুর আদালতে তোলা হবে।
গত শুক্রবার আলিপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত জেলাশাসকের বাংলোর পাশে একটি কুড়ি কাঠা সরকারি জমিতে পূর্তকর্মীরা কাজ করতে গেলে স্থানীয় বিধানচন্দ্র রায় কলোনির বাসিন্দারা বাধা দেন। পুলিশ কয়েক জনকে থানায় নিয়ে আসে। তাদের ছাড়াতে থানায় চড়াও হয়ে ভাঙচুর, তাণ্ডব চালায় কলোনির কিছু লোক। জনতার উন্মত্ত আক্রমণের মুখে পড়ে পুলিশকর্মীদের কেউ কেউ টেবিলের তলায় আশ্রয় নেন। এই হামলার ঘটনায় নাম জড়ায় ওই কলোনি কমিটির সভাপতি দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূলের যুব সম্পাদক প্রতাপ সাহার। পুর-নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমের ঘনিষ্ঠ বলেই তিনি এলাকায় পরিচিত।
থানায় হামলার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতেরা ছিলেন, শেখ রেজ্জাক, মহম্মদ শাকিল, মহম্মদ পাপ্পু, সৌমেন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ছোট্টু সাউ। উল্লেখ্য, অভিযুক্তেরা কেউ ওই দিনের ঘটনায় জড়িত নন বলে এ বার প্রশ্ন ওঠে পুলিশেরই নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে। উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে ধৃত পাঁচ জনকেই ৫০০ টাকা জামিনের বিনিময়ে মুক্তি দেয় আদালত।
এর পরেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে, গা বাঁচাতেই কি পুলিশ বহিরাগতদের ধরে এনে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে? ধৃতদের বিরুদ্ধে লঘু ধারায় মামলা রুজু করা হচ্ছে, এমনকী পুলিশ ধৃতদের নিজের হেফাজতেও নিতে চায়নি। আদালতে খোদ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেন বিচারকও। আলিপুর থানার বর্তমান ওসি বুদ্ধদেব কুণ্ডুও নেতা-মন্ত্রীদের ‘কাছের লোক’ বলে প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন মহলে। গত বুধবার মামলার তদন্তকারী অফিসারদের বদল করার পাশাপাশি তদন্তে নজরদারির দায়িত্ব থেকে বুদ্ধদেববাবুকে সরিয়ে দেয় লালবাজার।