অবশেষে সক্রিয় হল পুলিশ। চিত্পুর গণধর্ষণ-কাণ্ডে গ্রেফতার হল তিন জন। তাদের নাম জিত্ লাল, মণীশ এবং গজেন্দ্র। পাশাপাশি দমদম জিআরপি থানার ওসি এবং চিত্পুর জিআরপি-র আউট পোস্টের ইনচার্জ-কে ক্লোজ করা হয়েছে। শিয়ালদহের রেল পুলিশ সুপার উত্পল নস্কর এ কথা জানিয়েছেন।
চিত্পুর রেল ইয়ার্ডের এক মহিলা কর্মীকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। এমনকী, তাঁকে গর্ভাবস্থাতেও ধর্ষণ করে অভিযুক্তরা। জিআরপির কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তারা তা নিতে চায়নি। বহু টালবাহানার শেষে শিয়ালদহের এসআরপি-র বিষয়টি জানার পর, মূলত তাঁরই নির্দেশে শুক্রবার জিআরপি ওই মহিলার অভিযোগ নথিভুক্ত করে। এরই ফলশ্রুতি হিসেবে শনিবার তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। ক্লোজ করা হয় জিআরপি-র দুই অফিসারকেও।
জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার পর অভিযোগকারিণী ওই মহিলাকে চিত্পুর রেল ইয়ার্ডে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন তত্কালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর অল্প কিছু দিন পর থেকেই ওই ইয়ার্ডের প্রভাবশালী কর্মী জিত্ এবং তার কয়েক জন সঙ্গী বারংবার ওই মহিলাকে ধর্ষণ করে বলে তাঁর অভিযোগ। ইতিমধ্যেই তিনি অন্য এক জনকে বিবাহ করেন। তাতেও পরিস্থিতির কোনও বদল হয়নি। সম্প্রতি ওই মহিলা নিজেকে গর্ভবতী বলার পরেও অত্যাচারে কোনও ছাড় মেলেনি। বরং গত ১৫ জুলাই তাঁকে ফের ধর্ষণ করা হয়। প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি তো আছেই, মোবাইলে তুলে রাখা ধর্ষণের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে তারা এই কাজ করছে বলে অভিযোগে জানিয়েছেন ওই মহিলা। ক্ষমতাশালী জিতের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস দেখাতে পারেননি তিনি। কিন্তু সাম্প্রতিক এই ধর্ষণের কথা তিনি স্বামীকে জানান। গত বুধবার এ বিষয়ে ওই দম্পতি জিআরপির চিত্পুর আউট পোস্টে অভিযোগ দায়ের করতে গেলে তাঁদের কোনও কথা শোনা হয়নি। দায়িত্ব এড়াতে পরে দমদম জিআরপি থানায় তাঁদের পাঠানো হয়। সেখানেও সুব্যবস্থা মেলেনি। এর পর উত্পলবাবুর নির্দেশে গোটা ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়।