বসিরহাট স্টেশনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে গুরুতর জখম হয়েছেন তৃণমূলের এক নেতা। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে বসিরহাট স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। পুলিশ জানায়, জখম ওই নেতার নাম অশোক বৈরাগী। তিনি তৃণমূল বুথ কমিটির নেতা। গুলি ছোড়ার ঘটনায় পঙ্কজ সর্দার নামে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঠিক কী ঘটেছিল এ দিন?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, অশোকবাবু ও তাঁর এক সঙ্গী সকালে প্ল্যাটফর্মে বসে চা খাচ্ছিলেন। সেই সময় এলাকারই দুই যুবক তাঁদের কাছে আসে। কিছু ক্ষণ কথাবার্তার পরে হঠাত্ই অশোকবাবুর সঙ্গে বচসা শুরু হয় ওই দুই যুবকের। সেই বচসা ক্রমে হাতাহাতিতে গড়ায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অশোকবাবুকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় এক দুষ্কৃতী। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে অন্য জন। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। গুলির আওয়াজে চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা স্টেশন চত্বরে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান এলাকার লোকজন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। এখন তিনি আরজিকর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন।
অশোকবাবুর ভাই হারান বৈরাগীর কথায়, গত কয়েক মাস আগে স্টেশন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা যুব কংগ্রেস নেতা পরিমল সর্দার খুন হন। হারানবাবু জানান, ওই খুনের ঘটনায় তাঁর দাদা অশোক বৈরাগীও অভিযুক্ত ছিলেন। এর আগেও তাঁদের বাড়িতে হামলা চালায় কংগ্রেসের লোকজন। অশোকবাবুকে খুনের চেষ্টাও করা হয়। সেই পুরনো আক্রোশ থেকেই এ দিনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ জানায়, এ দিনই স্টেশন চত্বরে টিকিটের রিজার্ভেশন নিয়ে তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। বেশ কয়েক দিন ধরেই এই ঝামেলা শুরু হয়েছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। তাই এলাকা দখলকে নিয়ে ঝামেলার জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের।
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “আমাদের দলের কর্মীর উপর গুলি ছুড়তে কংগ্রেসকে উত্সাহিত করেছে বিজেপি। তবে আইন আইনের পথে চলবে। পুলিশকে বলেছি অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে।” অন্য দিকে, এই অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়ে বসিরহাটের কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন জেলা সহ-সভাপতি অসিত মজুমদার বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে।”