উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। — নিজস্ব চিত্র।
প্রকাশ্য জনসভা থেকে দ্য গ্রেটার কোচবিহার পিপলস্ অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বংশীবদন বর্মণকে আক্রমণ করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ ও তৃণমূল সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। শনিবার দিনহাটার মোক্তবেড়বাড়ি হাই স্কুলের মাঠ থেকে বিধানসভাভিত্তিক ভূমিপুত্র সমাবেশে বক্তৃতা করতে গিয়ে বংশীকে সরাসরি আক্রমণ করেন তাঁরা। তাঁদের জবাব দিতে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন রাজবংশী নেতাও।
শনিবার উদয়ন বলেন, ‘‘নিজের পকেট ভারী করতে এক হাজার রাজবংশী বিদ্যালয়ের দাবি করছেন বংশীবদন।’’ সেই সঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর দাবি, রাজবংশী মানুষের বিপদে তাঁকে দেখা যায় না। উত্তমকুমার ব্রজবাসী থেকে শুরু করে উকিল বর্মণ— প্রত্যেকের পাশে তৃণমূল দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সামনে গেলে তিনি বলেন দিদি দণ্ডবৎ। আর দিনহাটার সভায় দাঁড়িয়ে বলে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে কোনও ফারাক নাই।’’ মন্ত্রীর অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনে যে দলের সঙ্গে ২৫টি আসন রফা হবে ওই দলকেই বংশী সমর্থন করবেন। তিনি আরও বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দয়ায় দু’শোটি রাজবংশী বিদ্যালয় দেওয়া হয়েছে। এ বার এক হাজার বিদ্যালয় চাইছে। নিজের পকেট ভারী করার জন্যও এই দাবি।’’ উদয়নের বক্তব্য, ‘‘২৫টি আসন দাবি করেছে। আমি দিদিকে বলব, একটিও আসন দেওয়ার দরকার নেই। তাঁর যদি ক্ষমতা থাকে একটি আসনে দাঁড়িয়ে জয়লাভ করুক।’’
শনিবারের মঞ্চ থেকে বংশী ও অনন্ত মহারাজকে আক্রমণ করেন সাংসদ জগদীশচন্দ্রও। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের মধ্যে থেকে রাজবংশী উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হয়েছেন বংশী। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। আবার বৈঠক ডেকে আমাদের সরকারেরই সমালোচনা করে।’’ সাংসদ আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল বলেই বংশী ও অনন্ত মহারাজরা এত কথা বলতে পারেন। বামফ্রন্ট আমল হলে জেলে পচে মরতে হত। মুখ্যমন্ত্রী জেল থেকে বার করে বংশীকে উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান বানিয়েছেন আর এখন তাঁর বিরুদ্ধেই নানা কথা বলছেন।’’
মন্ত্রী ও সাংসদের কথার প্রেক্ষিতে রাজবংশী নেতা বলেন, ‘‘রাজবংশীদের ভোটে জয়লাভ করে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন উদয়ন ও জগদীশ। রাজবংশীরা বিপদে পড়লে তাঁরা দৌড়বেন, না কি সাধারণ মানুষ দৌড়বেন?’’ বংশীর প্রশ্ন, বাম আমলে জগদীশ ও উদয়ন বিধায়ক ছিলেন। উদয়নের বাবা ছিলেন মন্ত্রী। তখন কি জগদীশ রাজবংশী ছিলেন না? বংশীর বক্তব্য, ‘‘এঁরা নিজের স্বার্থ পূরণের জন্য নীতি ও আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে তৃণমূলে এসেছেন। এই ধরনের নীতিভ্রষ্ট ব্যক্তিদের কথার ধার ধারি না আমরা।’’ তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের দু’শোটি স্কুল দিয়েছেন। সে কি আমাদের পকেট ভরার জন্য?’’ উদয়নকে কটাক্ষ করে রাজবংশী নেতার নিশানা, ‘‘মন্ত্রী হয়ে নিজে সবকিছু লুটেপুটে খাচ্ছেন তাই তিনি ভাবছেন সব জায়গাতেই এই ভাবে লুটেপুটে খাওয়া যায়।’’