Lok Sabha Election 2024

তারকা প্রচারক সুনীতা, দলেও কি তবে দু’নম্বরে

আবগারি দুর্নীতি মামলায় সদ্য জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন আপের রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় সিংহ। বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনিই দলের সবচেয়ে পুরনো নেতা যিনি গোড়া থেকে কেজরীওয়ালের সঙ্গে আছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫৭
Share:

সুনীতা কেজরীওয়াল। ছবি: পিটিআই।

গুজরাতে আম আদমি পার্টির হয়ে তারকা প্রচারকের তালিকায় অরবিন্দ কেজরীওয়ালের পরেই স্থান পেলেন সুনীতা কেজরীওয়াল। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, অরবিন্দ যদি দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে ছাড়া না পান সে ক্ষেত্রে স্ত্রী সুনীতাই যে মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন, সম্ভবত তারই ইঙ্গিত দেখা গেল প্রচার তালিকায়। পাশাপাশি, দল গত দশ বছরে দিল্লিতে ক্ষমতায় থেকে যে ‘রাম রাজত্ব’ গড়ে তুলেছে সে সম্পর্কিত একটি ওয়েবসাইট আজ রামনবমীর দিনেই প্রকাশ করেছেন আপ নেতৃত্ব।

Advertisement

আবগারি দুর্নীতি মামলায় বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। তাঁর মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সতীর্থ মণীশ সিসৌদিয়াও ওই একই মামলায় গত এক বছরের বেশি জেল হেফাজতে রয়েছেন। তাই কেজরীওয়ালকেও যদি দীর্ঘমেয়াদে জেলে বন্দি থাকতে হয়, সে ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়তেই হবে তাঁকে। গত ২১ মার্চ গ্রেফতার হয়েছিলেন কেজরীওয়াল। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীহীন অবস্থা কার্যত এক মাস ছুঁতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর অবর্তমানে দিল্লির প্রশাসনিক কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে বলে অভিযোগে সরব হতে শুরু করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ফলে আজ না হয় কাল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বদল অবশ্যম্ভাবী। বিরোধীদের অভিযোগ, তাঁর পরিবর্তে স্ত্রী সুনীতাই যে দলের হাল ধরবেন, তা বোঝাতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্ত্রীকে এগিয়ে দেওয়ার কৌশল নিয়েছেন কেজরীওয়াল। এক মাস আগেও যাঁর সঙ্গে সক্রিয় রাজনীতির কোনও সম্পর্ক ছিল না, সেই সুনীতাকে যে ভাবে গুজরাত রাজ্যে দলের তারকা প্রচারকের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে তুলে আনা হয়েছে, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত বিরোধীদের।

আবগারি দুর্নীতি মামলায় সদ্য জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন আপের রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় সিংহ। বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনিই দলের সবচেয়ে পুরনো নেতা যিনি গোড়া থেকে কেজরীওয়ালের সঙ্গে আছেন। মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়েও তিনি রয়েছেন। তাই বিজেপি নেতৃত্ব ঘরোয়া ভাবে বলছেন, এখন কেজরীওয়ালের কাছে মূল সমস্যা সঞ্জয়। কারণ রাজনৈতিক ধারে ও ভারে তিনি সুনীতার চেয়ে অনেক এগিয়ে। সঞ্জয় এমন ব্যক্তি, যিনি সুনীতার হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। কারণ কেজরীওয়াল ভাল করেই জানেন, একবার ক্ষমতা পরিবারের হাতের মুঠি থেকে বেরিয়ে গেলে তাঁর পক্ষে দলের শীর্ষ পদ ধরে রাখা সম্ভব হবে না। বিজেপির দিল্লি সভাপতি বীরন্দ্র সচদেবের মতে, সঞ্জয়কে আটকাতে মরিয়া অরবিন্দ তাই নিজের স্ত্রীকে আরও বেশি রাজনীতিতে তুলে ধরতে চাইছেন। গুজরাতের প্রচার তালিকায় তাই সুনীতার স্থান দ্বিতীয়, সঞ্জয় পেয়েছেন সপ্তম স্থান।

Advertisement

আপ নেতৃত্ব যদিও দলে কোনও মতপার্থক্য রয়েছে বলে মানতে চাননি। দল জানিয়েছে, আপকে ভাঙতে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। আজ দলের পক্ষ থেকে লোকসভায় প্রচারের উদ্দেশ্যে একটি ওয়েবসাইট প্রকাশ করা হয়। যার নাম দেওয়া হয়েছে– ‘আপ কা রাম রাজ্য’। রামের মতার্দশ মেনে কী ভাবে গত দশ বছরে দিল্লিকে রামরাজ্যের অনুকরণে অরবিন্দ কেজরীওয়াল গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন তার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে ওই
ওয়েবসাইটে। সঞ্জয় সিংহ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়াল গত দশ বছরে দিল্লিতে নতুন আধুনিক মানের স্কুল, মহল্লা ক্লিনিক, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ ও জল, মহিলাদের বিনামূল্যে বাসে যাতায়াতের সুযোগ করে দিয়েছেন। মানুষের জন্য কাজ করার ফলে তিনি আজ জেলবন্দি। মানুষই ভোটে এই অন্যায়ের জবাব দেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন