Mamata Banerjee

‘শিখ পুলিশকে যখন খলিস্তানি বলল, তখন প্রতিবাদ করেননি কেন?’ মমতার নিশানায় সুরেন্দ্র

২০১৪ সালে সুরেন্দ্র জিতেছিলেন দার্জিলিঙে। গত বার তাঁকে বিজেপি দাঁড় করায় বর্ধমান-দুর্গাপুরে। এ বার তাঁকে আসানসোলে প্রার্থী করেছে পদ্মশিবির। তাঁর বিরুদ্ধে লড়ছেন তৃণমূলের শত্রুঘ্ন সিংহ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:০৬
Share:

(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। —ফাইল চিত্র।

আসানসোল লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিংহের সমর্থনে জনসভা থেকে বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার কুলটির নির্বাচনী জনসভা থেকে সুরেন্দ্রের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘গদ্দারটা যখন আমাদের এক জন শিখ পুলিশ অফিসারকে খলিস্তানি বলে গালাগালি দিল, তখন আপনি প্রতিবাদ করেননি কেন? আপনিও তো শিখ সম্প্রদায়ের।’’

Advertisement

গত ফেব্রুয়ারি মাসে সন্দেশখালির পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত, তখন ধামাখালিতে বিজেপির মিছিলকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা রাজ্য রাজনীতিতে তো বটেই , জাতীয় রাজনীতিকেও আলোড়িত করেছিল। অভিযোগ ওঠে, আইপিএস অফিসার যশপ্রীত সিংহ (এসএস-আইবি)-কে ‘খলিস্তানি’ বলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুধু তৃণমূলই নয়, এ নিয়ে প্রতিবাদে নামেন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার শিখ সম্প্রদায়ের মানুষেরাও। ওই ঘটনার পর আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ঘটনার নিন্দা করেছিলেন সুরেন্দ্র। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘এক জন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষকে কখনও ‘খলিস্তানি’ বলা যায় না। এটা অন্যায়! যিনিই বলে থাকুন তিনি মূর্খ! তিনি ভারতের স্বাধীনতা থেকে এখন পর্যন্ত দেশের জন্য শিখ সম্প্রদায়ের অবদান জানেন না।’’ তবে প্রকাশ্য কোনও সভা-সমিতিতে তিনি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য বা নিন্দা করেননি।

২০১৪ সালে সুরেন্দ্র জিতেছিলেন দার্জিলিং কেন্দ্রে। গত বার তাঁকে বিজেপি দাঁড় করায় বর্ধমান দুর্গাপুরে। এ বার তাঁকে আসানসোলে প্রার্থী করেছে পদ্মশিবির। আসানসোলে প্রথমে ভোজপুরি গায়ক-নায়ক পবন সিংহকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু তাঁর কিছু মিউজ়িক ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনে সেই পবনকে ‘বাংলা-বিরোধী’ বলে জোর প্রচার চালায় তৃণমূল। দেখা যায়, সেই ঝড়ের মুখে পবন নিজেই ঘোষণা করেন, তিনি আসানসোল থেকে দাঁড়াবেন না। তার পর অনেক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর সপ্তাহ দু’য়েক আগে সুরেন্দ্রকে প্রার্থী করে বিজেপি। শনিবার মমতা বলেন, ‘‘অনেক কষ্ট করে সিটটা ম্যানেজ করেছেন। বর্ধমানে পাঁচ বছর কাজ করেননি।’’

Advertisement

কুলটির সভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘আমাদের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিংহ। তাঁকে জেতান। তিনি মাত্রই দু’বছর কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন।’’ ২০১৯ সালেও বিজেপির হয়ে আসানসোল জিতেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। তার পর ২০২২ সালে বাবুল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ইস্তফা দেন সাংসদ পদ থেকেও। সেই উপনির্বাচনেই প্রথম বারের মতো আসানসোল জেতে তৃণমূল। বাবুল বিধানসভা উপনির্বাচনে জিতে এখন মমতা মন্ত্রিসভার সদস্য।

মমতা অভিযোগ করেছেন, আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি জানি কোন ওষুধ প্রয়োগ করে গত বার জিতেছিলেন। এখানেও সেটাই করবেন। কাউকে এক, কাউকে দুই, কাউকে পাঁচ, কাউকে ১০। ওরা বলেছিল ১৫ লক্ষ টাকা দেবে। আপনারা বলুন, আগে ১৫ লক্ষ টাকা দাও।’’

আসানসোল লোকসভার সাতটি বিধানসভার মধ্যে ২০২১ সালের ভোটে পাঁচটিতে জিতেছিল তৃণমূল। আসানসোল দক্ষিণ এবং কুলটিতে জিতেছিল বিজেপি। সেই অঙ্ক তৃণমূলের জন্য স্বস্তির। কিন্তু বিবিধ সমীকরণে লোকসভা ভোটে যে তা সর্বত্র সমান ভাবে কাজ করবে না তা ঘরোয়া আলোচনায় মানছেন তৃণমূলের নেতারাও। তার মধ্যে অন্যতম দলের একটি অংশের আধাসক্রিয়তা। সেই আসানসোলের প্রচারে তাই শুধু বিজেপি দল নয়, প্রার্থীকেও নিশানা করলেন মমতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন