TMC

Bengal Polls 2021: আরামবাগ ‘ক্ষত’ সামলাতে দিলীপকে দায়িত্ব তৃণমূলের, পুরশুড়া থেকে লড়াই বাকি ৩ কেন্দ্রেও

মঙ্গলবার পুরশুড়া কেন্দ্রে ভোট প্রচার চালান দিলীপ। পুরশুড়ার রাস্তায় পথ চলতি মানুষের সঙ্গে তাঁকে হাত মেলাতে দেখা যায়। কৃষকদের সঙ্গেও তিনি মেতে ওঠেন আলাপচারিতায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২১ ১৯:৪৬
Share:

প্রচারে দিলীপ যাদব ও সুজাতা খাঁ। নিজস্ব চিত্র

লোকসভার ক্ষতে আরাম পেতে আরামবাগে ঝাঁপিয়েছে তৃণমূল। অভিনব কায়দায় জনসংযোগ শুরু করেছেন হুগলির আরামবাগ মহকুমার অন্তর্গত ৪টি বিধানসভার অন্যতম পুরশুড়ার তৃণমূল প্রার্থী তথা দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব। মঙ্গলবার কৃষকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জমি থেকে আলু তোলার কাজে নেমে পড়েন তিনি। আবার নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে পৌঁছনর আগে, মঙ্গলবার আরামবাগবাসীকে খোলা চিঠি লিখেছেন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁ-এর স্ত্রী সুজাতা খাঁ মণ্ডল-ও।

Advertisement

মঙ্গলবার পুরশুড়া কেন্দ্রে ভোট প্রচার চালান দিলীপ। পুরশুড়ার রাস্তায় পথ চলতি মানুষের সঙ্গে তাঁকে হাত মেলাতে দেখা যায়। কৃষকদের সঙ্গেও তিনি মেতে ওঠেন আলাপচারিতায়। অনেকে জমিতে আলু তোলার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁদের সাহায্য করেন দিলীপ। প্রার্থী ঘোষণার পরদিন থেকেই উত্তরপাড়া ছেড়ে পুরশুড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন দিলীপ। দিনে প্রচার এবং রাতে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক। এই এখন রুটিন তাঁর।

আরামবাগ বিধানসভায় তৃণণূলের প্রার্থী সৌমিত্র জায়া সুজাতা। নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে তাঁর পৌঁছনর কথা বুধবার। তার আগের দিন, মঙ্গলবার আরামবাসীকে খোলা চিঠি লিখে তাঁদের কষ্টের কথা জানতে চেয়েছেন সুজাতা। ভবিষ্যতে আরামবাগে কী কী উন্নয়নমূলক কাজ করা যেতে পারে সেই প্রস্তাবও শুনতে চেয়েছেন সৌমিত্র জায়া। সুজাতা নিজের কেন্দ্রে পৌঁছনর আগে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। শুরু হয়েছে দেওয়াললিখন। আর সে কাজে এগিয়ে এসেছেন ওই কেন্দ্রের বর্তমান বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা-ও।

Advertisement

গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে পুরশুড়ায় এগিয়ে তৃণমূল। আবার গত লোকসভা ভোটের নিরিখে ওই কেন্দ্রে পিছিয়ে তারা। সংখ্যাতত্ত্বের এই ‘দোলাচল’ দেখে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, পুরশুড়া আসনে লড়াই তৃণমূলের পক্ষে সহজ নয়। জেলার তৃণমূল শিবিরের একাংশের বক্তব্য, উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল বিজেপি-তে চলে যাওয়ার পর, অনেকেই আঁচ করেছিলেন, ওই কেন্দ্র থেকে এলাকার দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর তথা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান দিলীপকে প্রার্থী করা হতে পারে। কিন্তু তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা বেরোলে দেখা যায়, উত্তরপাড়ায় প্রার্থী হয়েছেন অরিন্দম গুঁই। আর দিলীপকে পাঠানো হয়েছে পুরশুড়ার ‘যুদ্ধ’ সামলাতে। জোড়াফুল শিবিরের বক্তব্য, দলনেত্রী স্বয়ং নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হয়ে কর্মী-সমর্থকদের ‘সামনে থেকে লড়াই করা’র বার্তা দিয়েছেন। সেই সূত্র ধরেই তাঁদের মত, সে ক্ষেত্রে দিলীপকে পুরশুড়ার মতো আসনে পাঠানোয় কোনও ভুল নেই। প্রার্থীর ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, দিলীপকে পুরশুড়ায় পাঠানোর অর্থ, লড়াইয়ের ক্ষেত্র আরও বৃহৎ করে দেওয়া। শুধু নিজের কেন্দ্র নয়, আরামবাগ মহকুমার অন্তর্গত অন্য তিনটি বিধানসভা আসন, আরামবাগ, গোঘাট এবং খানাকুলেও যাতে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত হয় তা দেখভালের ভারও এখন দিলীপের কাঁধেই।

২০১৬ সালের বিধানসভার ফলাফল ধরলে আরামবাগ, পুরশুড়া, গোঘাট এবং খানাকুল এই ৪টি কেন্দ্রের প্রতিটিতেই তৃণমূল ৩০ হাজার বা তার কাছাকাছি ভোটে এগিয়ে। এর মধ্যে নিকটবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে খানাকুলে সর্বোচ্চ ৪৩ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছিল জোড়াফুল শিবির। কিন্তু গত ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে জোড়াফুলের ওই দুর্গে হানা দেয় বিজেপি। লোকসভা ভোটের নিরিখে গোঘাট (১১ হাজার ৯৩৩ ভোট) এবং পুরশুড়া (২৫,৮৪২) বিধানসভায় পিছিনে তৃণমূল। তারা এগিয়ে রয়েছে আরামবাগ (৪,০০৭) এবং খানাকুল (১৪,২২২)-এর মতো বাকি দু’টি বিধানসভা আসনে। সেই ফল মাথায় রেখে অবশ্য ঘাবড়াচ্ছেন না তৃণমূলের হুগলি-র সেনাপতি। দিলীপ বলছেন, ‘‘ভোটে সব মাঠই কঠিন। আর প্রতিদ্বন্দ্বী কঠিন হলে তাতে খেলেও মজা আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন