এই সুইসাইড নোটের ছবি নেটমাধ্যমে পোস্ট করেছেন দিনহাটার তৃণমূলের বিধায়ক উদয়ন গুহ। যা নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন বিজেপি-র কৈলাস বিজয়বর্গীয়। —নিজস্ব চিত্র।
দিনহাটায় বিজেপি-র মণ্ডল সভাপতি অমিত সরকারের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে রাজনৈতিক তরজা অব্যাহত। বৃহস্পতিবার মৃতের পকেট থেকে উদ্ধার হওয়া একটি সুইসাইড নোটের ছবি নেটমাধ্যমে পোস্ট করেন দিনহাটার তৃণমূলের বিধায়ক উদয়ন গুহ। ওই সুইসাইড নোট নিয়েই একে অপরের দিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূল এবং বিজেপি।
বৃহস্পতিবার উদয়ন দাবি করেন, ‘‘মৃতদেহের পকেট থেকে যে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে, তার হাতের লেখা পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে যে সেটি নিজের হাতের লেখা না অন্য কারও।’’
বৃহস্পতিবার দুপুরেই কোচবিহারে এসেছেন বিজেপি-র পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং দীনেশ ত্রিবেদী। উদয়নকে আক্রমণ করে কৈলাস বলেন, ‘‘এটাই তৃণমূলের নোংরা রাজনীতি। খুন করে মৃতদেহের পকেটে সুইসাইড নোট রেখে দেওয়া। এটাই তৃণমূলের কালচার। এর আগেও হেমতাবাদে আমাদের এক কর্মীকে এ ভাবেই ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পুরুলিয়াতেও একই ঘটনা ঘটিয়েছিল এবং তাঁদের পকেট সুইসাইড নোট রেখে দিয়েছিল।’’ কৈলাসের অভিযোগ, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের পরে আমাদের ১৩০ জন কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে তৃণমূল। পশ্চিমবঙ্গে চার দশক ধরে এ ভাবেই রাজনৈতিক হত্যা চলছে। এ ধরনের হিংসার রাজনীতি বন্ধ করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। অমিত সরকারের মৃত্যুর পেছনে কী রহস্য রয়েছে, তা জানতে আমরা নির্বাচন আধিকারিকের কাছে সিবিআই তদন্তের দাবি জানাব।’’
অমিতের মৃত্যু ঘিরে কৈলাসকে পাল্টা আক্রমণ করতে ছাড়েননি উদয়ন। তিনি বলেন, ‘‘কৈলাস বিজয়বর্গীয় তোতা পাখি। যা যা শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে, উনি তা-ই বলছেন। আমরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করছি না। আমরা শান্তিপূর্ণ ভোট চাই। দিনহাটা জুড়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা সন্ত্রাস তৈরি করছে। সুইসাইড নোটে যে তিন জনের নাম উল্লেখ রয়েছে, তাদেরকে জেরা করলেই সত্য উদ্ঘাটন হবে।’’
তবে দিনহাটায় উদয়নই যে ত্রাসের রাজনীতি করছেন, এমন দাবিও করেছেন কৈলাস। তিনি বলেন, ‘‘দিনহাটার তৃণমূলের বিধায়ক উদয়ন গুহ প্রতিবার নির্বাচনের আগে এ ভাবেই আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেন। বিগত নির্বাচনগুলোতে আমরা উদয়ন গুহর আতঙ্ক সৃষ্টি করার প্রয়াস লক্ষ করেছি।’’ পাশাপাশি, কোচবিহারের প্রাক্তন পুলিশ সুপার কে কান্নানের নারকো টেস্টেরও দাবি করেছেন কৈলাস। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা নির্বাচন আধিকারিকের কাছে জানিয়েছিলাম যে পুলিশ আধিকারিক দিয়ে পুরো ঘটনার তদন্ত করা সঠিক হবে না। পুলিশ আধিকারিকদের উপর আমাদের ভরসা নেই। আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলাম।’’ যদিও কান্ননের বদলির বিষয়ে উদয়নের মন্তব্য, ‘‘এটি নির্বাচন আধিকারিকের আওতায় রয়েছে। এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না।’’
বৃহস্পতিবার আলিপুর থেকে কোচবিহারের বিজেপি কার্যালয়ে অমিতের দেহ নিয়ে আসা হয়েছিল। সেখানে তাঁর মরদেহে শ্রদ্ধা জানানো হয়। তার পর কোচবিহার থেকে দিনহাটায় দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। কৈলাস এবং বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিক মৃতের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন।