বারুইপুর-সোনারপুর

প্রশাসনের কড়া নজরদারি সত্ত্বেও চলল গুলি, জখম ৩

সকাল থেকে সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু শনিবার শেষ মুহূর্তে গুলি চলল বারুইপুর পূর্ব কেন্দ্রে গৌরদহ এলাকায়। আহত তিন ব্যক্তি বারুইপুর হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনায় ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৬ ০০:৫৬
Share:

আব্দুল আহাদ মোল্লা।—নিজস্ব চিত্র।

সকাল থেকে সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু শনিবার শেষ মুহূর্তে গুলি চলল বারুইপুর পূর্ব কেন্দ্রে গৌরদহ এলাকায়। আহত তিন ব্যক্তি বারুইপুর হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনায় ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১৬২ নম্বর বুথ থেকে কিছুটা দূরে গুলি চালানোর ঘটনাটি ঘটে। আহত আহমেদউল্লা মোল্লা ও আব্দুল আহাদ মোল্লার হাতে এবং সালাম মোল্লার কোমরে গুলি লাগে। তাঁরা স্থানীয় বাসিন্দা ও তৃণমূলের সমর্থক বলে দাবি করেছেন। আহমেদউল্লার অভিযোগ, ভোট দিয়ে তাঁরা বাড়িতেই ছিলেন। বিকেল ৩টে নাগাদ সিপিএমের প্রাক্তন উপপ্রধান খাজাবক্স মোল্লার নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের দল তাঁদের উপর হামলা চালায়। স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল মোল্লা, মুজাফ্ফর মোল্লা ও রবিউল মোল্লা-সহ আরও কয়েক জন এই ঘটনায় জড়িত বলে আহতেরা পুলিশে অভিযোগ করেন। আহমেদউল্লার বাবা কুতুবউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘আমি তৃণমূল সমর্থক বলেই ছেলের উপর হামলা হল। সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী এতে জড়িত।’’

দক্ষিণ ২৪ পরগনা সিপিএম জেলা কমিটির তরফে দাবি, তাদের সমর্থকেরা এই ঘটনায় জড়িত নন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক সুনীল গুপ্ত এ দিন জানান, ঘটনাটি সম্পর্কে জেলাশাসকের কাছে সবিস্তার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।

Advertisement

বারুইপুর পূর্ব কেন্দ্রের নবগ্রাম, বৃন্দাখালি, বেলেগাছি, রামনগর-সহ কয়েকটি অঞ্চলে যে ভোটের দিন অশান্তি হতে পারে এমন আশঙ্কা ছিলই। তাই পুলিশ প্রশাসনের দিক থেকে কড়া নজরদারিও ছিল। জেলা পুলিশের এক অফিসার জানালেন, ‘‘সকাল ১০টার মধ্যে অধের্ক ভোট পড়ে গিয়েছিল। হঠাৎই গুলি চালানোর ঘটনাটা ঘটল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যারা হামলা চালিয়েছিল তাদের আমরা তাড়া করলেও ধরতে পারিনি। গ্রামের মানুষও ঠিক লোকের বাড়ি চিনিয়ে দিতে পারছিলেন না।’’

বারুইপুর পূর্ব কেন্দ্রে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনার নেতা অলোক ভট্টাচার্যের দাবি, সব অভিযোগ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জেলা সিপিএমের তরফে পাল্টা বলা হয়, তৃণমূল সমর্থকদের হামলায় নবগ্রামে তাদের কয়েক জন সমর্থক আহত হন।

গুলি চালানোর এই ঘটনা ছাড়া বারুইপুর পূর্ব, পশ্চিম এবং সোনারপুর উত্তর ও দক্ষিণ কেন্দ্রে ভোট কার্যত শান্তিপূর্ণ ভাবেই হয়। সোনারপুর দক্ষিণ কেন্দ্রে চণ্ডীতলায় সিপিআই প্রার্থী তড়িৎ চক্রবর্তীর পোলিং এজেন্টকে মারধর ও বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠলেও পরে তিনি পুলিশের সাহায্যে বুথে বসেন। তড়িৎবাবু জানান, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশের সাহায্যে মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন।’’ সকাল ন’টা নাগাদ কামালগাজী অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়, ইভিএম খারাপ হয়ে যাওয়ায় ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে। ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ফিরদৌসি বেগমের অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী সাধারণ ভোটারদের হেনস্থা করছে। রোদে যারা লাইনে দাঁড়িয়ে তাঁদের জল দিতে দিচ্ছে না। বুথ থেকে অনেকটা দূরেও বাইক রাখতে দিচ্ছে না।’’

এ দিন সোনারপুর ও বারুইপুরের ৪টি কেন্দ্রেও দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতা। প্রতিটি রাস্তায় নজরদারি, টহল চলেছে। দু’য়েকটি জায়গায় ভোটারদের ভয় দেখানো, ভোটার স্লিপ কেড়ে নেওয়া ছাড়া তেমন কোনও বড় অভিযোগ ওঠেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement