জাপানি যুদ্ধবিমান। ছবি: সংগৃহীত।
আন্তর্জাতিক জলপথের আকাশে জাপানি যুদ্ধবিমানকে নিশানা করে রেডার লক করার অভিযোগ উঠল চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে সোমবার চিনা রাষ্ট্রদূতকে তলব করে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানিয়েছে টোকিয়ো।
জাপানের অভিযোগ, শনিবার রাতে চিনের বিমানবাহিনীর জে-১৫ যুদ্ধবিমান স্কোয়াড্রন শনিবার ওকিনাওয়ার নিকটবর্তী আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাপানের দু’টি এফ-১৫ যুদ্ধবিমানকে রেডার লক করেছিল। ওই ঘটনায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি বা কেউ হতাহত হয়নি। তবে এই প্রথম বারের মতো জাপানের উপর কার্যত প্রাক-হামলা আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছে শি জিনপিঙের সেনা।
প্রসঙ্গত, যখন কোনও রেডার সিস্টেম (যেমন যুদ্ধবিমানের রেডার বা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার রেডার) একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে (অন্য বিমান, জাহাজ, ক্ষেপণাস্ত্র ইত্যাদি) স্বয়ংক্রিয়ভাবে চিহ্নিত করে, নিশানা করে এবং তার গতিবিধি অনুসরণ করতে শুরু করে, তখন তাকে ‘রেডার লক’ বলে চিহ্নিত করা হয়। বস্তুত এটি হল সম্ভাব্য আক্রমণ বা হুমকির সংকেতবাহী সামরিক বার্তা।
চিন-জাপান বর্তমান সংঘাতের সূচনা গত ৭ নভেম্বর। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি সে দিন জাপান পার্লামেন্টকে জানিয়েছিলেন, চিন যদি তাইওয়ান দখল করতে উদ্যোগী হয় তবে তাঁরা চুপ করে বসে থাকবেন না। তিনি বলেন, ‘‘প্রয়োজনে তাইওয়ানকে সামরিক সাহায্য করা হবে।’’ এর পরেই সরাসরি সামরিক আগ্রাসনের হুমকি দিয়েছিল চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সরকার। চিনা প্রতিরক্ষা দফতর বিবৃতিতে বলে, ‘‘তাইওয়ান পরিস্থিতি নিয়ে নাক গলানো বন্ধ না করলে ‘ধ্বংসাত্মক সামরিক পদক্ষেপের’ মুখে পড়বে জাপান।’’ তার এক দিন পরেই উপকূলরক্ষী বাহিনীর রণতরী ঘিরে ফেলেছিল জাপানের সেনকাকু দ্বীপ। যদিও পরে তারা সরে যায়।
সম্ভাব্য চিনা হানাদারি ঠেকাতে বুধবার তাইওয়ানের উপকূল থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইয়োনাগুনি দ্বীপে মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েনের প্রস্তুতি শুরু করেছে জাপান। সেই খবর প্রকাশ্যে আসার পরে তাকাইচিকে ফোন করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিনের সঙ্গে সংঘাতে না জড়ানোর ‘পরামর্শ’ দিয়েছিলেন। অন্য দিকে, একদলীয় চিনের শাসকদল কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম পিএলএ ডেইলি হুমকি দিয়েছিল, ‘‘টোকিয়ো যদি তাইওয়ানে হস্তক্ষেপ করে, তাহলে পুরো জাপান যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হবে।’’