সভার জন্য নির্ধারিত ছিল তিন ঘণ্টা। কিন্তু তাঁরা এসে পৌঁছন সময় শেষ হওয়ার মাত্র দশ মিনিট আগে। সাংসদ -অভিনেতা দেব এবং মুকুল রায়। নির্বাচন কমিশনের তরফে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয় নির্ধারিত সময়ের কথা। শুধু তা-ই নয়, সময় পার হতেই মঞ্চে উঠে আবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় সে কথা। দেব এবং মুকুল-ও ঝটপট মাইক ছেড়ে নেমে যান।
শাসক দলের সময় রক্ষার দায় নিয়ে বিভিন্ন জমানায় অনেক অভিযোগ উঠেছে। যে যখন ক্ষমতায় থাকে, মাইক ও মঞ্চে তারই জোর— এই অভিযোগ প্রায়ই ওঠে। কিন্তু এখন যেন সব কিছুতেই উলটপুরাণ। হলদিবাড়ির আঙুলদেখা গ্রামের মানুষও সেই কথাই বলছেন।
উল্টো উদাহরণ যে আগে ছিল না, তা নয়। ২০০৪-এ পটনায় সময় শেষ হওয়ার পরে লালকৃষ্ণ আডবাণীর সভা থামিয়ে দিয়েছিলেন এক জেলাশাসক। তিনি গৌতম গোস্বামী। আডবাণী তখন উপ-প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বিধিভঙ্গের দায়ে পড়তে পারেন, এই আশঙ্কায় তিনি সভা শেষ করে নেমে গিয়েছিলেন।
এ দিন আঙুলদেখা গ্রামের কমলাকান্ত হাইস্কুল সংলগ্ন একটি মাঠে তৃণমূল প্রার্থী অর্ঘ্য রায়প্রধানের সমর্থনে দেব এবং মুকুল রায়ের সভা ছিল। সভা করার কথা ছিল বেলা বারোটা থেকে তিনটের মধ্যে। ওঁরা হেলিকপ্টার থেকে নামেন তিনটে বাজতে দশ মিনিট আগে। তখনই কমিশনের টিমের পক্ষ থেকে ওদের জানিয়ে দেওয়া হয় যে তিনটের মধ্যে সভা শেষ করতে হবে।
মঞ্চে ওঠার পর ওঁদের হাতে সময় ছিল পাঁচ মিনিট। তার মধ্যে প্রথমে মুকুল রায় এবং পরে দেব অতি সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা দেন। মেখলিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার অপ্রতিম ঘোষ জানান, ‘‘বেলা তিনটে বেজে গেলে ওদের সভা শেষ করতে বলা হয়। ওঁরা আমাদের দলের সঙ্গে সহযোগিতা করে সভা শেষ করেন।” পরে এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অর্ঘ রায়প্রধানও বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে সভা শেষ করেছি।”
কিন্তু সব কিছু দেখেশুনে স্থানীয় মানুষের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, তৃণমূলের নেতারা এমন বাধ্য ছেলে হলেন কবে থেকে? পুলিশের সঙ্গে প্রশাসনেরও মেরুদণ্ড দেখা দেওয়ার পর থেকে কি?