West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: স্পর্শকাতর সব বুথই, নজর ফুটিসাঁকোয়

বাদশাহী রোডের এক দিকে কেতুগ্রাম, আর এক দিকে বীরভূমের নানুর। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজনৈতিক অশান্তি হোক বা খুন-জখম-ডাকাতি, যে কোনও দুষ্কর্মের পরে ওই এলাকা দিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২১ ০৭:৫৮
Share:

কাটোয়া থেকে বেগুনকোলার পথে কর্মীরা। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাদশাহী রোডে চার মাথার উপরে ঝাঁকড়া বটগাছ। দিনভর তার ছায়া পায় তিন জেলা। বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের সংযোগস্থলে এই ফুটিসাঁকো মোড়েই বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ফুটিসাঁকোর কাছেই কেতুগ্রামের চিনিসপুরে বোমা বাঁধতে গিয়ে দু’জন জখমের ঘটনা আরও চিন্তা বাড়িয়েছে জেলা পুলিশের।

Advertisement

আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যের ষষ্ঠ দফা ভোটে পূর্ব বর্ধমানের আটটি কেন্দ্রও রয়েছে। তার মধ্যে কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোটের মতো বিধানসভা এলাকায় ভোটের সময়ে ধারাবাহিক হিংসার ইতিহাস রয়েছে। কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, আধা-সেনা, পুলিশ আধিকারিকদের ‘পোস্টিং’ও দেওয়া হয়েছে। সদ্য দায়িত্ব পাওয়া পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বুধবার বলেন, ‘‘আমি ফুটিসাঁকো ঘুরে এসেছি। অন্য জেলার পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে গুরুত্ব দিয়ে নজরদারি করা হচ্ছে। টহলদারির জন্য বাড়তি আধা-সামরিক বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। জেলার পুলিশ আধিকারিকদেরও বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কেতুগ্রামের জন্য এসডিপিও (কাটোয়া) ও মঙ্গলকোটের জন্য এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ)-কে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, কেতুগ্রামের জন্য সাড়ে পাঁচ সেকশন ও মঙ্গলকোটের জন্য ছ’সেকশন অতিরিক্ত আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

Advertisement

এ বারের নির্বাচনে জেলার সব বুথকেই ‘সংবেদনশীল’ করা হয়েছে। তার মধ্যে ‘ক্রিটিক্যাল’ ৮৫৫টি বুথ। দ্বিতীয় দফার ভোটেও ‘ক্যুইক রেসপন্স টিম’ বা ‘কিউআরটি’-র উপরে জোর দিয়েছে জেলা পুলিশ। পুলিশ জানায়, আটটি বিধানসভার জন্য ২৩০টি ‘কিউআরটি’ গঠন হয়েছে। যাতে সাত থেকে ১২ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছনো যায়। প্রতিটি বিধানসভা বা থানা এলাকায় নিরাপত্তা বজায় রাখতে ‘রেসপন্স টিম’, ‘হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড’-এর সঙ্গে হোয়াটস্‌অ্যাপ গ্রুপ করা হয়েছে। এ বারও পাঁচ হাজার মতো পুলিশ রাস্তায় থাকবে।

প্রশাসন সূত্রের দাবি, পুলিশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তাদের সমন্বয় বৈঠকে মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম, পূর্বস্থলী উত্তর, পূর্বস্থলী দক্ষিণ ও গলসি বিধানসভার বেশ কয়েকটি জায়গার নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু ঘুরেফিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ফুটিসাঁকো। পুলিশের দাবি, ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি ‘ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরা’ বসানো হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে নাকা তল্লাশি।

ফুটিসাঁকো মোড় থেকে পশ্চিমে কিছুটা গেলেই বীরভূমের কীর্ণাহার, পূর্বে কেতুগ্রাম হয়ে কাটোয়া, দক্ষিণে মঙ্গলকোট হয়ে সোজা বর্ধমান আর উত্তরে সামান্য গেলেই মুর্শিদাবাদের পাঁচথুপি। আর বাদশাহী রোডের এক দিকে কেতুগ্রাম, আর এক দিকে বীরভূমের নানুর। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজনৈতিক অশান্তি হোক বা খুন-জখম-ডাকাতি, যে কোনও দুষ্কর্মের পরে ওই এলাকা দিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। কারণ, সহজেই এক জেলা টপকে পৌঁছে যাওয়া যায় অন্যত্র। পাশাপাশি জেলার পুলিশ, প্রশাসন যতক্ষণে যোগাযোগ করে ধরপাকড় শুরু করে, দুষ্কৃতীরা ততক্ষণে পগারপার। সোমবার রাতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাতেও কয়েকজন ওই পথেই গা ঢাকা দিয়েছে, অনুমান পুলিশের। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ফুটিসাঁকো আমাদের কাছে শ্যাডো জ়োন আর অপরাধীদের কাছে স্ট্র্যাটেজিক জ়োন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement