ডক্টর অফ ফিলোজ়ফি অর্থাৎ পিএইচডি ডিগ্রি পেতে তিন থেকে ছ’বছর সময় প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট ডিগ্রি অর্জনের পর চাকরির পাশাপাশি, পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ (পিডিএফ) কিংবা ইনস্টিটিউট পোস্টডক্টরাল ফেলোশিপের (আইপিডিএফ) সুযোগ থাকছে। এই ধরনের ফেলোশিপের মাধ্যমে নবীন গবেষকেরা নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, বিভিন্ন সংস্থার বিশেষজ্ঞ এবং অধ্যাপকদের পরামর্শও পাবেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এবং অধ্যাপকদের মেন্টরশিপের পাশাপাশি, চাকরির অভিজ্ঞতা সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল হওয়ার সুযোগ থাকে।
তবে, কাজ এবং সুযোগের বিচারে পিডিএফ এবং আইপিডিএফ-এর মধ্যে তফাৎ কোথায়— পেশা প্রবেশের খুঁটিনাটি নিয়ে রইল বিশদ তথ্য।
তফাৎ কোথায়?
- পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ যে কোনও সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা থেকে করা সম্ভব। কিন্তু ইনস্টিটিউট পোস্টডক্টরাল ফেলোশিপের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এবং স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন আইআইটি কিংবা আইআইএসইআর থেকে করার সুযোগ থাকে।
- বিভিন্ন সংস্থা কিংবা প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক অনুদান পিডিএফ-এর ক্ষেত্রে পাওয়া সম্ভব। তবে, নির্দিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরফে নির্ধারিত অনুদানই আইপিডিএফ-এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
- গবেষণার জন্য যে কোনও বিষয় এবং কাজের ধরন বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও আইপিডিএফ-এ কিছু বাধ্যবাধকতা থাকলেও পিডিএফ-এর কাজে তেমন কোনও সীমাবদ্ধতা নেই। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আইপিডিএফ করানো হবে, সেই প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত বিষয়বস্তু এবং গবেষণাগারের সুযোগ সুবিধার উপর গবেষণার কাজ নির্ভর করে। এ ক্ষেত্রে পিডিএফ-এর কাজের সুযোগের ব্যপ্তি অনেকটাই বেশি।
- পিডিএফ-এর ক্ষেত্রে প্রতি মাসে ভাতা হিসাবে ৩০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এ ছাড়াও গবেষণার কাজের জন্য ‘রিসার্চ গ্রান্ট’ও বরাদ্দ থাকে। আইপিডিএফ-এর ক্ষেত্রে ভাতার অঙ্ক ৫৮ হাজার থেকে ৮০ হাজার পর্যন্ত ধার্য করা হয়ে থাকে। তবে উভয় ক্ষেত্রেই ভাতা সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করে প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার উপর।
তবে, পিডিএফ-এর জন্য আট মাস থেকে পাঁচ বছর কিংবা তার বেশি সময়ও দিতে হয়। আইআইটি, আইসিএমআর কিংবা সমতুল্য সংস্থা কিংবা প্রতিষ্ঠানের উপর তা নির্ভর করে। কিন্তু আইপিডিএফ-এর ক্ষেত্রে এক থেকে তিন বছরের মধ্যে ফেলোশিপের কাজ সম্পূর্ণ হয়।
দেশে সুযোগ কোথায়?
- সমস্ত আইআইটি প্রতিষ্ঠান এবং কলকাতার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের তরফে আইপিডিএফ করার সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে আইআইটি গুয়াহাটির তরফে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আবেদনের শেষ দিন ৩১ জুলাই।
পিডিএফ-এর ক্ষেত্রে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান সুযোগ দিয়ে থাকে, তার তালিকা দেওয়া হল—
- ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিক্যাল রিসার্চ, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স, কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ, ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োটেকনোলজি, অনুসন্ধান ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন (এএনআরএফ), ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস এবং আরও বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা।
চাকরির সুযোগ:
* উল্লিখিত ফেলোশিপ অর্জনের পর সরকারি কিংবা সরকারপোষিত প্রতিষ্ঠানে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর কিংবা ফ্যাকাল্টি সদস্য হিসাবে শিক্ষকতার সুযোগ পাওয়া যায়।
* গবেষক হিসাবে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জনের পর বিজ্ঞানী হিসাবে কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে চাকরির সুযোগ থাকছে।
* উৎপাদন নির্ভর শিল্পে এই ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করা হয়ে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিজ্ঞান এবং কারিগরি বিদ্যা সংক্রান্ত সমস্যার নীতি নির্ধারক, পরামর্শদাতা পদেও চাকরির সুযোগ পেতে পারেন।