অপর্ণা সেন এবং তুহিনা দাস। ছবি: সংগৃহীত।
প্রথম দিনের সাক্ষাৎ। খুব সাদামাঠা ভাবেই চলে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ কথাবার্তা। তার পর অপর্ণা সেন তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “তোমার চুলে একটু হাত দিতে পারি?” তুহিনা দাস মন্ত্রমুগ্ধের মতো গিয়ে বসেছিলেন তাঁর সাজগোজের টেবিলে। পরিচালক-অভিনেত্রীর ৮০তম জন্মদিনে আনন্দবাজার ডট কম-এর সঙ্গে স্মৃতি ফিরে দেখলেন অপর্ণার বড়পর্দার ‘বিমলা’।
সত্যজিৎ রায়ের ‘ঘরে বাইরে’র ছায়ায় তৈরি অপর্ণার ছবি ‘ঘরে বাইরে আজ’। ‘বিমলা’, ‘নিখিলেশ’ ও ‘সন্দীপ’ চরিত্রে যথাক্রমে তুহিনা, অনির্বাণ ভট্টাচার্য ও যিশু সেনগুপ্ত। প্রথম দিনেই তুহিনাকে অপর্ণা বলেছিলেন, “অবশ্যই আমার কল্পনার ‘বিমলা’র সঙ্গে তোমার চেহারা মেলে। কিন্তু আমি তোমায় সাজিয়ে দেখব।” তিনি নিজে চুল বেঁধে দিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে যাচাই করেছিলেন তুহিনাকে। তার পর সোহাগ সেনের প্রশিক্ষণ।
তুহিনা যাতে বাহ্যিক ভাবে নিখুঁত ‘বিমলা’ হয়ে ওঠেন তার জন্য নিজের গয়না, শাড়ি, ব্লাউজ দিয়ে দিয়েছিলেন পরিচালক-অভিনেত্রী। “রিনাদির গয়নার একটা বিশেষত্ব আছে। রুপোর গয়না আমরাও পরি। ওঁর মতো হাঁসুলি বা মাদুলি লকেট দিয়ে গড়া হার বা তার সঙ্গে মিলিয়ে কানের দুল, গলার হার পরি? একই ভাবে তাঁতের শাড়িতেও দিদি যেন ব্যতিক্রমী। আমার ভাগ্য, ওঁর পোশাকে, গয়নায় সাজতে পেরেছি।”
তুহিনা দাসকে দৃশ্য বোঝাচ্ছেন অপর্ণা সেন। ছবি: সংগৃহীত।
আদতে উদারচিত্ত অপর্ণা। কিন্তু শুটিংয়ে তৈরি হয়ে না এলে ভীষণ কড়া। ওঁর ধমককে সবাই ভয় পেত, জানিয়েছেন তুহিনা।
সেই কারণেই কি তিনি এত বিতর্কিত? “একেবারেই না”, বললেন অভিনেত্রী। সাফ বললেন, “কিছু মানুষ আছেন যাঁরা মন জুগিয়ে চলতে জানেন না। নিজের মতে, নিজের পথে চলতে ভালবাসেন। কে, কী বলল— তাতেও মাথাব্যথা নেই তাঁর। এমন মানুষকে নিয়েই তো চর্চা হবে।” পাশাপাশি, অন্যের মতকেও কিন্তু সমান গুরুত্ব দিতেন। অভিনয়ে তুহিনা তখন আনকোরা। তার উপরে যিশুর সঙ্গে একাধিক অন্তরঙ্গ দৃশ্য। সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করার আগে অপর্ণা বারবার কথা বলেছেন তুহিনার সঙ্গে। নতুন নায়িকা কতটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন। তুহিনার অনুমতি নিয়েই তার পর প্রত্যেকটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেছেন অপর্ণা।