Rukmini Maitra

ক্যামেরার সামনে সহজ, কিন্তু বাস্তবে মায়ের কোনও বন্ধু হলে মানিয়ে নিতে পারতাম কি না সত্যিই জানা নেই: রুক্মিণী

ছবির প্রচার, বিজ্ঞাপনের শুটিং — সব কিছু নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যেই কাটছে অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্রের। ছবির সঙ্গে কি বাস্তবের কিছু মিল পেয়েছেন অভিনেত্রী?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:০১
Share:

বাবার সঙ্গে রুক্মিণীর সমীকরণ কেমন ছিল? ছবি: সংগৃহীত।

ছোট থেকে মুম্বইয়ের সঙ্গে তাঁর এক অদ্ভুত যোগ। ইদানীং কলকাতার থেকে আরব সাগরের পারেই বেশি যাতায়াত অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্রের। অনুরাগীদের অভিযোগ, শহরে কম দেখা যায় নায়িকাকে। যদিও আসন্ন ছবি ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’র জন্য এখন কলকাতাতেই রয়েছেন তিনি। বাবা-মেয়ের গল্প। ছবির প্রচারের ফাঁকে মাঝেমাঝেই নিজের বাবার স্মৃতি ভেসে আসছে তাঁর মনে।

Advertisement

পরীক্ষায় ভাল ফল করলে বাবা কী বলতেন? আবদার না কি শাসন— বাবার সঙ্গে মেয়ে রুক্মিণীর বাস্তব সমীকরণ কেমন ছিল? কথায় কথায় নায়িকা বললেন, “এখন সবাই আমার মুম্বই যাতায়াত নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু ছোট থেকে এই শহরটার সঙ্গে নিবিড় যোগ রয়েছে আমার। বাবা বলতেন, পরীক্ষায় ভাল ফল করলে আমাকে মুম্বই নিয়ে যাবেন। সেখানে আমার মনের মতো জিনিস কিনে দেবেন।” তাই পাকাপাকি ভাবে মুম্বইয়ে থাকা নিয়ে আলোচনা খুব যে প্রয়োজন, তা মনে করছেন না নায়িকা।

গত কয়েক মাসে অনেক বারই নানা আলোচনায় উঠে এসেছে অভিনেত্রীর নাম। কখনও প্রযোজক-অভিনেতা দেবের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। কখনও আবার কেন কম কাজ করছেন তা নিয়েও প্রশ্নে জর্জরিত অভিনেত্রী। কিন্তু কাজ না থাকলে অভিনেত্রীকে যে হাতের নাগালে সহজে পাওয়া যায় তেমনটা নয়। সমাজমাধ্যম থেকেও তিনি দূরে থাকেন। রুক্মিণী যোগ করেন, “আমি কোনও দিনই সমাজমাধ্যমে সক্রিয় নই। কাজ থাকলে তখনই দেখা যায়। তা হলে কেন আলোচনা জানি না।”

Advertisement

মায়ের সঙ্গে রুক্মিণী। ছবি: সংগৃহীত।

অর্ণব মিদ্যা পরিচালিত এই ছবিতে তুলে ধরা হবে বাবা-মেয়ের সম্পর্কের সমীকরণ। একটা সময় মা-বাবারাও শিশু হয়ে যায়। এই ছবিতেও ঠিক এমনই দৃশ্য দেখা যাবে। আর ‘সিঙ্গল পেরেন্ট’ হলে কথাই নেই। তবে বাবা-মেয়ের সমীকরণের বাইরেও লুকিয়ে রয়েছে এক অন্য গল্প। রুক্মিণী বলেন, “টিজ়ার দেখে অনেকেই প্রথমে পিকুর সঙ্গে তুলনা করছিলেন। কিন্তু ট্রেলর আসার পরে কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে আশা করি।” ছবির মাধ্যমে পরিচালক ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন মা-বাবার অনুভূতির কথা।

নায়িকার কথায়, “অনেক সময় আমরা ভুলে যাই, মা-বাবা হওয়ার থেকেও বড় জিনিস, তাঁরা মানুষ। তাঁদেরও চাওয়া-পাওয়া রয়েছে। সব কথা যে সন্তানদের সঙ্গে বলতে পারবেন তেমনটা নয়। তাঁদেরও সঙ্গীর প্রয়োজন হতে পারে। অর্ণব এই জায়গাটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছে।” ২০১৭-এ বাবাকে হারিয়েছেন রুক্মিণী। তার পর থেকে মা মধুমিতা মৈত্র তাঁকে এবং দাদা রাহুলকে দু’হাতে আগলেছেন। নায়িকা অনেক সাক্ষাৎকারেই বলেন যে, মা তাঁর সবচেয়ে ভাল বন্ধু। সব কথা ভাগ করে নিতে পারেন।

রুক্মিণী যোগ করেন, “সত্যিই মাঝেমাঝে ভাবি, আমার তো এখন একটা জগৎ আছে। কাজের ব্যস্ততা রয়েছে। বন্ধুরা আছে। মনের কথা বলার মানুষ আছে। কিন্তু মায়ের তো একা লাগতে পারে! সব কথা কি আমার সঙ্গে বলতে পারে?” বাস্তবে নায়িকার জীবনে এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হলে কি তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারতেন রুক্মিণী? অনেক ভেবে অভিনেত্রীর উত্তর, “সত্যিই জানি না। ছবির প্রচার করছি। ক্যামেরার সামনে যা সহজ, বাস্তবে মায়ের কোনও সঙ্গী হলে কি মানিয়ে নিতে পারতাম? সত্যিই জানি না এখন। বলতেই পারব না পরিস্থিতিতে পড়লে কী রকম প্রতিক্রিয়া হত আমার।” ছবির প্রচারের ফাঁকেই দেবের প্রসঙ্গ উঠে আসে। এমনকি নানা আলোচনার মাঝে তাঁর নীরব থাকার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর জবাব, “বছর শুরু হয়েছিল ‘বিনোদিনী, একটি নটীর উপাখ্যান’ দিয়ে, আর শেষ হচ্ছে ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ দিয়ে। দুটো ছবিই জাতীয় স্তরে সম্মান পাচ্ছে। আমি ইতিবাচক দিক দেখতে চাই। কাছের মানুষ, পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে আমি ভাল আছি। হাজারটা ভাল মন্তব্যের মাঝে আমি খারাপকে কেন গুরুত্ব দেব কেন? আমি মেয়ে, কিন্তু বোকা মেয়ে নই।”

এর মধ্যেই অনুরাগীদের ধোঁয়াশাও কাটিয়েছেন নায়িকা। পাকাপাকি ভাবে মুম্বই নয়। কলকাতাতেও অনেক সময় আসেন তিনি। রুক্মিণীর মতে, কাজ ছাড়া তাঁর বাকিটা একান্তই ব্যক্তিগত। তাই তিনি কখন কোথায় থাকছেন সেটা জানতে পারা না গেলেও কোনও সমস্যা নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement