Coolie Accident

ঘুষি মেরে অমিতাভ বচ্চনকে কোমায় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন! কী পরিণতি হয়েছিল ‘মারকুটে’ এই অভিনেতার?

অমিতাভ বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘কুলি’-র সেই দুর্ঘটনার পর তিনি নবজন্ম পেয়েছেন। জখম অমিতাভকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁর অস্ত্রোপচার করতে হয়। আর সে সময়ই চিকিৎসকেরা মিনিট কয়েকের জন্য মনে করেছিলেন মৃত্যু হয়েছে অভিনেতার।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:০৮
Share:

আশির দশকে একই ছবিতে কাজ করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন ও পুনীত ইসার। ছবি: সংগৃহীত।

তাঁর সর্বাধিক পরিচিতি খলনায়ক হিসাবেই। বিনা যুদ্ধে তিনি ছাড়তে রাজি নন সূচ্যগ্র মেদিনী। এমন বাহুবলী অভিনেতার অভিনয় জীবনের শুরুতেই ঘটে গিয়েছিল মারাত্মক এক ঘটনা। যেমন তেমন নয়, খোদ অমিতাভ বচ্চনকে মেরে প্রায় মৃত্যুর মুখে ফেলে দিয়েছিলেন। বরাত জোরে প্রাণ ফিরে পান বিগ-বি। কিন্তু একের পর এক কাজ হারাতে শুরু করেন অভিনেতা।

Advertisement

সেটা ১৯৮২ সাল। বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় ছবি ‘কুলি’-র শুটিং চলছে। নায়ক অমিতাভের বিপক্ষে যিনি অভিনয় করছেন, তাঁর বয়স খুব বেশি হলে ২১ বছর। তত দিনে তিনি প্রায় খান দশেক ছবির কাজ জোগাড় করে ফেলেছেন। রীতিমতো শিক্ষিত অভিনেতা। কিন্তু এ ছবিতে তাঁকে অমিতাভের বিপরীতে খল চরিত্রেই বেছে নেওয়া হয়েছিল। আর সেটাই হল কাল।

চরিত্রের প্রয়োজনে পঞ্জাবি পরিবারের বলবান পুনীত ইসার মারলেন এক ঘুষি। তার ভার সামলাতে না পেরে পড়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে অমিতাভ। বেঙ্গালুরুতে শুটিং চলাকালীন এই দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ে আগুনের গতিতে। স্বয়ং অমিতাভ বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘কুলি’-র সেই দুর্ঘটনার পর তিনি নবজন্ম পেয়েছেন। জখম অমিতাভকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁর অস্ত্রোপচার করতে হয়। আর সে সময়ই চিকিৎসকেরা মিনিট কয়েকের জন্য মনে করেছিলেন মৃত্যু হয়েছে অভিনেতার। কোমার মতো অবস্থা থেকে অবশ্য সে বার ফিরে এসেছিলেন বিগ বি।

Advertisement

কিন্তু এই ঘটনার স্থায়ী ছাপ পড়ে পুনীতের জীবনে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানান, এই ঘটনা তাঁর জীবন একেবারে বদলে দেয়। পুনীত বলেন, “সকলে আমাকে ভয় পেতে শুরু করল। সকলে ভুলে গেলেন যে আমি স্বর্ণপদক জয়ী, আমি শিক্ষিত অভিনেতা, ভাষার উপরও আমার দখল রয়েছে। সব ভুলে আমি শুধু ‘মারকুটে’ হয়ে গেলাম। তার পর থেকে শুধু এই ধরনের চরিত্রই পেয়েছি।”

মাত্র ২১ বছর বয়সে অমিতাভের বিপরীতে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন পুনীত। কিন্তু ‘কুলি’-র এই দুর্ঘটনার পর নানা জনে নানা রকম কথা বলতে শুরু করেন। পুনীত বলেন, “সকলে বলতে লাগল, ‘সামান্য ধাক্কাতেই যদি একজন মানুষের এমন হাল হয়, তা হলে সত্যিকারের মারলে কী হবে!’ ফলে ছ’বছর আমার হাতে কাজ ছিল না।” শুধু তাই নয়, পুনীত এর পর থেকে আর ভাল চরিত্রও পাননি বলে দাবি। কিন্তু তত দিনে সংসার পেতে ফেলেছেন তিনি। স্ত্রী রয়েছেন ঘরে। তাই রোজগারের প্রয়োজনেই বিভিন্ন ধরনের খল চরিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন। যেখানে তাঁকে ‘মারকুটে’ হিসাবেই দেখানো হত।

১৯৮৮ সালে অবশ্য তিনি বিআর চোপড়ার মহাভারতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান। কিন্তু সেখানেও খল দুর্যোধন। তবে তাঁর দেহ সৌষ্ঠব চরিত্রের সঙ্গে একেবারে মানানসই ছিল। পুনীত জানিয়েছেন, দীর্ঘ ছ’বছর তাঁর হাতে কাজ ছিল না। সেই সময় তিনি নিজেকে গড়েছেন। তাঁর কথায়, “এই ধাক্কাটা আমাকে আর ভাল অভিনেতা আরও ভাল মানুষ হিসাবে গড়ে তুলেছে। ধৈর্য ধরতে শিখিয়েছে, ভাল বন্ধু চিনতে শিখিয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement