Paoli Dam

‘দাদা আমি বাঁচতে চাই’, লকডাউনে নীতার আর্তি আমায় তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে: পাওলি

বর্তমান ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা থেকে শুরু করে স্বামী অর্জুনকে নিয়ে আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে আড্ডা দিলেন পাওলি।

Advertisement

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ১৬:১০
Share:

‘কালী ২’ ওয়েব সিরিজ নিয়ে খোলামেলা আড্ডায় পাওলি দাম। ছবি ফেসবুক থেকে নেওয়া।

৭০ দিনের উপর হয়ে গেল তিনি কলকাতার বাড়িতে। যেতে পারেননি স্বামী অর্জুনের কাছে। বাড়িতে জিম, বন্ধুদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ কল, বই, সিনেমা দেখার মধ্যে চলে এল বাইলিঙ্গুয়াল ওয়েব সিরিজ ‘কালী ২’। বর্তমান ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা থেকে শুরু করে স্বামী অর্জুনকে নিয়ে আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে আড্ডা দিলেন পাওলি।

Advertisement

লকডাউন পরবর্তী ‘নিউ নরম্যাল’ জীবনে বর কোথায় আছে?

অর্জুন তো গুয়াহাটিতেই, নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। আসতে পারেনি। আমিও ঘরবন্দি।

Advertisement

এই দূরত্বের দাম্পত্যই কি এখন আপনার জীবনে ‘নিউ নর্মাল’?

আরও কিছুটা সময় দিতে হবে আমাদের। ফ্লাইট চালু হলেও আরও কিছু সময় দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। এখন যাওয়া নিরাপদ নয়। ব্যস! হয়ে গিয়েছে! এ নিয়ে আর কিছু বলার নেই।

বরের জন্য মন খারাপ করছে না?

এটা বলব না।

লকডাউনে বড্ড চুপ করে আছেন দেখছি। আগে যেমন রেগে যেতেন, তর্ক করতেন...

(থামিয়ে) পাওলির আর রাগ হয় না। করোনা এসে রাগকে বরফের মতো ঠান্ডা করে দিয়েছে। করোনা বলেছে রাগ কোরো না!

জীবন নিয়ে অনেক নতুন অনুভূতি হয়েছে মানুষের এই লকডাউনে। আপনার?

যেখান থেকে শুরু করেছি সেখানে এসে দাঁড়ালাম। এত যে দৌড়ছিলাম, কেন? কিসের জন্য? মূলে ফিরে গিয়েছি আমি। ভালবাসা, কেয়ার, শেয়ার। এটুকুই যদি রাখতে পারি অনেক। এই রাখার নাম বাঁচা। এ ক’দিন তাড়িয়ে বেরিয়েছে আমায় সেই সংলাপ, ‘দাদা আমি বাঁচতে চাই।’ প্রবল বেঁচে থাকার তাড়না নিয়ে দাদাকে বলছে নীতা। আর সেই আর্তি পাহাড়ে পাহাড়ে ধ্বনিত হচ্ছে। আজও তো তাই, আমরা বাঁচতে চাই। পৃথিবীর যে কোনও মানুষের এই প্রাথমিক ভাবনা তো এক! আবার দেখছিলাম ঋত্বিক ঘটকের ‘মেঘে ঢাকা তারা’। এই ছবি বলছে সবটাই আজ বাঁচার লড়াই। মনে হল, জীবনের বাকি যা যা হচ্ছিল তার সবটাই অ্যাক্সেসরিজ। কিন্তু তার মাঝেও আনন্দে থাকতে হবে। কাজ করতে হবে। এই যে মাঝে মাঝে আয়নার সামনে নেচে দিচ্ছে মানুষ। কেউ যা মন চায় করছে। এগুলোও থাকবে। আপনি ভেবে দেখুন, সব মানুষ তো আর এক রকম ভাবে রিঅ্যাক্ট করবে না। তবে আজ মানুষ যে যা-ই করছে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই।

ঋত্বিক ঘটকের ‘মেঘে ঢাকা তারা’ ছবির বিখ্যাত দৃশ্য। ফাইল চিত্র।

আপনি ‘নীতা’-র ঘর ভাঙা নিয়ে কথা বলছিলেন, মনে হয়নি আমপানে (প্রকৃত উচ্চারণ উম পুন) ঘর ভাঙা মানুষের পাশে দাঁড়াই?

আমার কিছু বন্ধুর সঙ্গে কাজ করছি আমি। ইন্টারন্যাশনাল ফান্ডিং-এর ব্যবস্থা করছি। কিছু পরিবারকেও আমায় দেখতে হয়। সবাই যাতে বাঁচার মতো করে বাঁচতে পারে আজ এটাই চাওয়া।

আপনার কাজের জায়গায় ফিরি। ‘কালী ২’ সিজনে কালী কতখানি আলাদা?

কালীকে শক্তির প্রতীক হিসেবেই দেখানো হয়েছে। আগের সিজনে কালী শুধু তার বৃত্তের মধ্যে নির্দিষ্ট ছিল। তার ছেলেকে বাঁচানোর লড়াই ছিল তার জীবন ঘিরে। কিন্তু এই কালীর পরিসর অনেক বড়। সে কেমন করে অন্ধকার জগতের সঙ্গে মিশে নিজের একক অস্তিত্ব আর তার চাহিদা তুলে ধরার লড়াইয়ে মেতে ওঠে সেই দিক উঠে আসবে ‘কালী ২’ সিজনে। বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং চরিত্র ঢুকেছে। গল্পটা শুধুমাত্র কলকাতায় সীমিত নেই। আরও বেশি গ্রিপিং, অ্যাকশনও বেশি। এ বারে যারা কালীর প্রতিপক্ষ, তাদের সঙ্গে লড়াইটা অনেক বেশি কঠিন। সব মিলিয়ে বলতে গেলে এই সিজন অনেক বেশি ডায়নামিক। এই সিজনের শেষে কালী কিছু সিদ্ধান্ত নেয় যেখানে একটা টুইস্ট আছে। দর্শক একটা জরুরি জিনিস জানতে পারবে।

আরও পড়ুন: রঙিন রূপে বিতর্ক

চন্দন রায় সান্যালের সঙ্গে আগেও কাজ করেছেন। কিন্তু অভিষেকের সঙ্গে এই প্রথম। তাই তো?

হ্যাঁ। অভিষেকের সঙ্গে এই প্রথম। দারুণ অভিনেতা। আমরা কাজের ফাঁকে আড্ডা দিতাম। যদিও একইসঙ্গে দুটো শিডিউল চলত বলে বেশি সময় পাইনি। তবে চন্দনের সঙ্গে ওর নতুন ছবির গল্প, নতুন ফ্ল্যাট, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে পুরনো গল্প হয়েছে। বিদ্যার সঙ্গে আগেও কাজ করেছি ‘ইয়ারা সিলি সিলি’ নামের একটা ছবিতে। বিদ্যা আবার যোগা ফ্রিক। আমাকে প্রচুর টিপস দিয়েছে। ভেবেছিলাম মুম্বই যাব, একসঙ্গে প্রমোশন করব। ওরাও আসবে। সেটা আর হল না।

এই লকডাউন কি থিয়েট্রিকাল রিলিজের জায়গায় ওটিটি প্ল্যাটফর্মের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিল?

ইন্ডাস্ট্রিকে সচল রাখতে দুই মাধ্যমই অত্যন্ত জরুরি। থিয়েট্রিকাল রিলিজের যথেষ্ট প্রয়োজন আছে। বরঞ্চ আমি বলব, কাজের মাধ্যম আরও খুলে যাচ্ছে।

‘কালী ২’ ওয়েব সিরিজে পাওলি দাম। ছবি ফেসবুক থেকে নেওয়া।

কিন্তু শুটিং শুরু নিয়ে তো দেখছেন এত সমস্যা তৈরি হচ্ছে, কাজ করবে কেমন করে মানুষ?

নতুন কিছু ভাবতে হবে। এটা চ্যালেঞ্জের সময়। চিত্রনাট্যকারকে সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখে গল্প লিখতে হবে। ওই যে আপনি বলছিলেন ‘নিউ নর্মাল’, এই ধারাকে প্রতিষ্ঠা দিতে সময় তো লাগবে। সময় নিশ্চয় এমন রাস্তা দেখাবে যা আগে হয়নি।

সামাজিক দূরত্বের কথা ভাবলে তো আর কিসিং সিন ছবিতে থাকবে না!

হয়তো থাকবে না। অন্য কিছু ভাবতে হবে।

আপনি কাজ নিয়ে এই মুহূর্তে কী ভাবছেন?

আমার পরের ছবি আসছে নেটফ্লিক্স-এ, ‘বুলবুল’। তার কাজ শুরু হবে।

আর গুয়াহাটি যাবেন না?

শুনুন, এই বিষয়ে আমি বেশ স্বার্থপর। আগে নিরাপত্তার কথা ভাবব। আরও কিছুটা সময় যাক, তার পর আমাদের দেখা হবে।

আরও পড়ুন: শুটিং শুরু কবে? টলিপাড়ায় ৫ ঘন্টা বৈঠকের পরেও কাটল না জট!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন