এক দিকে বলিউডের হি-ম্যান ধর্মেন্দ্র এবং অন্য দিকে বলা যেতে পারে, হিন্দি সিনেমার প্রথম মহিলা সুপারস্টার শ্রীদেবী। এই দু’জনের একসঙ্গে ফিল্ম হাতে গোনা হলেও দু’জনকে নিয়ে এক সময় বিস্তর চর্চা শুরু হয়েছিল।
কেন জানেন? তার নেপথ্যে ছিল শ্রীদেবীর প্রতি ধর্মেন্দ্রর একটি মন্তব্য। প্রকাশ্যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে শ্রীদেবীকে ‘চোর’ বদনাম দিয়েছিলেন তিনি!
ধর্মেন্দ্র সম্বন্ধে আলাদা করে বলার কিছুর নেই। বলিউডে আবির্ভাবেই তাঁর ব্যক্তিত্ব মন জয় করে নিয়েছিল সবার। মহিলা মহলে তাঁকে নিয়ে চলত বিশেষ চর্চা।
১৯৩৫ সালে ৮ ডিসেম্বর ধর্মেন্দ্র জন্মেছিলেন পঞ্জাবের লুধিয়ানা জেলার নাসরালি গ্রামে। তাঁর বাবা ছিলেন একজন শিক্ষক, স্বাভাবিক ভাবেই তিনি চাইতেন ধর্মেন্দ্র যেন পড়াশোনায় মনোযোগী হন।
কিন্ত ছোটবেলা থেকেই ছিল তাঁর অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক। দিলীপ কুমার ও মতিলালের অভিনয় দেখেই তিনি অনুপ্রাণিত হন। পড়াশোনা ছেড়ে অভিনয়কেই তিনি পেশা হিসাবে বেছে নেন।
আর শ্রীদেবীর জন্ম ১৯৬৩-র ১৩ অগস্ট। তামিলনাড়ুর শিবকাশীতে। নাম ছিল শ্রী আম্মা আয়েঙ্গার আয়াপ্পন। তাঁর বাবা আয়াপ্পন ছিলেন শিবকাশীর আইনজীবী। মা রাজেশ্বরী, গৃহবধূ। বোন শ্রীলতার সঙ্গে বড় হন তিনি।
শ্রীদেবীর কেরিয়ার শুরু অনেক ছোট থেকেই। পর্দায় প্রথম আত্মপ্রকাশ শিশুশিল্পী হিসেবে।
কেরিয়ার শুরুর প্রথম দিকে ভাল করে বলতে পারতেন না হিন্দিও। কিন্তু প্রতিভা বলে সেখান থেকে তিনিই হিন্দি সিনেমার প্রথম মহিলা সুপারস্টার।
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তিনি ছিলেন বলিউডের সবচেয়ে দামি নায়িকা। ২০১৮-র ২৪ ফেব্রুয়ারি তাঁর অকালমৃত্যুতে শ্রী-হীন হয়ে পড়ে হিন্দি ও দক্ষিণী ছবির দুনিয়া।
এমন দু’জন মানুষকে নিয়ে বলিউডে কোনও গুঞ্জন-গসিপ তৈরি হবে না, এটা একপ্রকার অসম্ভব। হয়েও ছিল তাই। তবে একটু অন্য ভাবে।
সাধারণত নায়ক-নায়িকা দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিযে গসিপ করতেই বেশি ব্যস্ত থাকেন সিনে-প্রেমীরা। তবে ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে শ্রীদেবীর সম্পর্ক নিয়ে বিন্দুমাত্র গুঞ্জন ছড়ায়নি। চর্চা হয়েছিল সম্পূর্ণ অন্য একটা বিষয় নিয়ে।
সে সময় একটা চ্যারিটি শো-তে শ্রীদেবী সুপারহিট ফিল্ম ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’-র ‘হাওয়া হাওয়াই’ গানে পারফর্ম করেন।
শ্রীদেবীর পারফরম্যান্সের পর মঞ্চে উঠে ধর্মেন্দ্র যা বলেছিলেন, তা নিয়েই যাবতীয় চর্চার সূত্রপাত। মঞ্চে উঠে ধর্মেন্দ্র সরাসরি শ্রীদেবী এবং তাঁর স্বামী পরিচালক বনি কপূরকে চোর বলে বসেন।
ধর্মেন্দ্র দাবি করেন, ‘হাওয়া হাওয়াই’ গানটা তাঁর ফিল্ম ‘ফুল অউর পাত্থর’-এর। এমনকি তিনি এও জানান, তাঁর ফিল্মের যে গানটি থেকে ‘হাওয়া হাওয়াই’ গানটা করা হয়েছিল, সেটাই অন্য এক বিদেশি ফিল্মের থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া গান। ফলে শ্রীদেবী-বনি এই গানটি চুরি করেছেন, দাবি করেন ধর্মেন্দ্র।
শ্রীদেবীর ওই পারফরম্যান্সের সময় ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ ফিল্মটি প্রকাশও হয়নি। তার আগেই বনি কপূর এবং শ্রীদেবীকে চুরির বদনাম দেওয়ায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
এমন মন্তব্য শ্রীদেবীর ফিল্মের উপর খুব একটা প্রভাব ফেলেনি। তবে ধর্মেন্দ্র সে সময় মদ্যপ ছিলেন, এবং সে কারণেই এমন মন্তব্য করেছেন, বিভিন্ন সংবাদপত্রে এমনই লেখালেখি হয়। তবে এই বিষয়ে পরবর্তীকালে তিন জনের কেউ কোনও মন্তব্য করেননি।