Madhurima Basak Pujo Fashion

‘নবদ্বীপে প্রেম মানে শুধুই চোখে চোখে কথা’, মধুরিমার পুজোর আড্ডায় ফাঁস গোপন গল্প

পুজো মানে বিভিন্ন ধরনের সাজগোজ, নিত্যনতুন জামা। আনন্দবাজার অনলাইনের পুজোর আড্ডায় মধুরিমা বসাক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৩৩
Share:

মধুরিমা বসাক। —নিজস্ব চিত্র।

১৪ বছর আগে নবদ্বীপ থেকে পাকাপাকি ভাবে চলে এসেছিলেন কলকাতায়। পড়াশোনা করছিলেন অভিনেত্রী মধুরিমা বসাক। অভিনয়কে পেশা হিসাবে নেওয়ার কোনও পরিকল্পনাই ছিল না তাঁর। খুব কাকতালীয় ভাবেই অভিনয় যাত্রার শুরু মধুরিমার। এখন তো কলকাতাতেই সব কিছু অভিনেত্রীর। দুর্গাপুজো এলে মিস্‌ করেন পুরনো দিনগুলো? জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর কি বদলেছে নায়িকার পুজো? আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে পুজোর বিশেষ ফটোশুটের মাঝেই উঠে এল নায়িকার জীবনের নানা কথা।

Advertisement

জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর কি বদলেছে নায়িকার পুজো? —নিজস্ব চিত্র।

নবদ্বীপের পুজো

ছোটবেলার পুরোটাই তাঁর কেটেছে নবদ্বীপে। সেখানেই তাঁর সব বন্ধুবান্ধব। এখনও তাঁর মা-বাবা নবদ্বীপেই পুজো কাটান। ছোটবেলার গল্প করতে গিয়েই মধুরিমা বলেন, “আমি এখনও নবদ্বীপে যাই। তবে ছোটবেলার সেই উত্তেজনাটা এখন তেমন নেই। আমার মতোই বন্ধুরাও সব ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গিয়েছে। অনেকেই আর থাকে না ওখানে। বাড়ি থেকে আর বেরোনো হয় না। আমাদের ওখানে অনেক জায়গায় মেলা বসে। যদিও কোনও দিনই আমি প্যান্ডেলে ঘুরতে ভালবাসি না। তবে বন্ধুদের বাড়ির আড্ডাটা আমি খুব মিস করি। তবে আমাদের ওখানে তো পুজোর চেয়ে রাস বিখ্যাত। কিন্তু পাড়ার কেউ নেই বলে আমার একটু মনখারাপই হয়।” তবে মধুরিমার বেশি মনে পড়ে তাঁর মামাবাড়ির কথা। ফুলিয়ায় তাঁর মামাবাড়িতেই অনেক দুর্গাপুজো কাটাতেন। মধুরিমা বলেন, “দাদু-দিদা মারা যাওয়ার পর আর ফুলিয়ায় যাওয়া হয় না।”

Advertisement

মধুরিমার মেদহীন চেহারা, কাটা কাটা মুখের গড়ন অনেকের প্রিয়। —নিজস্ব চিত্র।

পুজোর ডায়েট

মধুরিমার মেদহীন চেহারা, কাটা কাটা মুখের গড়ন অনেকের প্রিয়। আনন্দবাজার অনলাইনের জন্য পুজোর বিশেষ শুটটি শুরু করার আগে কিচ্ছুটি খেতে চাইছিলেন না সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নায়িকা। তাঁর যুক্তি ছবি তোলার আগে তিনি কিছু খেলে মুখ ফুলে যায়। সেটা নাকি স্পষ্ট বোঝা যায় ক্যামেরার লেন্সে। কিন্তু পুজোর সময়ও কি এমনই কড়া নিয়মের মধ্যে থাকেন অভিনেত্রী। মধুরিমা বললেন, “পুজোয় কোনও ডায়েট নেই। যত অস্বাস্থ্যকর খাবার পাওয়া যায় সব খাই। গত রাতেই ফ্রায়েড চিকেন খেয়েছি।” নায়িকা জানিয়েছেন, তাঁর মেটাবলিজ়ম খুব ভাল। তিনি বলেন, “আমি যদি নিয়মের মধ্যে থাকি, তা হলে ১০ দিনের মধ্যে ওজন কমে যায়। তাই সব সময় যে খুব কঠিন ডায়েটে থাকি তেমনটা নয়। তবে আমার দুর্গাপুজো পাঁঠার মাংস আর রাস্তার ধারের ঘুগনি ছাড়া অসম্পূর্ণ।”

ছোটবেলায় কি কখনও প্রেম করেছেন মধুরিমা? —নিজস্ব চিত্র।

পুজোর প্রেম

এমনিতে বরাবরই বলে এসেছেন নায়িকা নাকি অনেক দিন ধরেই ‘সিঙ্গল’। কিন্তু ছোটবেলায় কখনও প্রেম করেছেন? প্রশ্ন শুনেই মধুরিমার উত্তর, “ওরে বাবা, ছোটবেলার প্রেম! আমার মা ভীষণ কড়া ছিলেন। এখন কেউ ভাবতেই পারবেন না। ঘোরা তো দূরের কথা! মাধ্যমিক দেওয়ার পরই প্রথম প্রেম হয়। ঘুরতে গেলে বাড়ি থেকে মেরে ঠ্যাঙ খোঁড়া করে দিত। ওই চোখে চোখে কথা। আমাদের স্কুলের পাশেই ছেলেদের স্কুল ছিল। ফলে টিফিনের সময় খুব ভিড় হত আমাদের স্কুলের বাইরে। তখনই হয়তো সে এল। ব্যস, এটুকুই। বাড়ির শাসনের জন্য কোনও দিনই প্রেমিকের সঙ্গে ঘুরিনি।” তবে পরিণত জীবনে প্রেম এসেছে নায়িকার। কিন্তু তার সময়সীমা তেমন হয়নি। তিনি বলেন, “গত বছরের আগের বছর পুজোটা একসঙ্গে কাটিয়ে ছিলাম। দুই পোষ্যকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। ব্যস, এই যা।”

মধুরিমার জীবন জুড়ে রয়েছে ফুলিয়ার দুর্গাপুজো। —নিজস্ব চিত্র।

জনপ্রিয়তা পাওয়ার পরের পুজো

মধুরিমা নিজেকে যদিও একেবারেই সেলিব্রিটি বলে ভাবেন না। নায়িকা বলেন, “বাংলা সিরিয়াল আর ‘এক্স= প্রেম’-এর দৌলতে কিছুটা জনপ্রিয়তা পেয়েছি যদিও, কিন্তু আমি সেলিব্রিটি হইনি। তাই পুজোয় খুব বেশি পরিবর্তন হয়েছে তেমনটা নয়।” যদিও পুজো প্যান্ডেলে কেউ যদি তাঁর সঙ্গে ছবি তুলতে আসেন, তা হলে বেশ উপভোগ করেন নায়িকা। তিনি বললেন, “কেউ ছবি তুলতে এলে আমার ভালই লাগে। কারণ, এই জন্যই তো অভিনয় পেশা বেছে নিয়েছি। মানুষ না চিনতে পারলে তা হলে আর কী অভিনেত্রী হলাম।”

পুজোয় যা নিরন্তর

ফুলিয়ার দুর্গাপুজো যেমন মধুরিমার জীবনের জুড়ে রয়েছে। তবে এমন একটা জিনিস রয়েছে, যা অভিনেত্রীর জীবনে নিরন্তর। তিনি বলেন, “দুর্গাপুজোর সময় নয়, সেটা হল লক্ষ্মীপুজোর সময়। আমাদের নবদ্বীপের বাড়িতে বড় করে পুজো হয়। আমরা যত ভাই-বোনেরা আছি সবাই এই সময়টা একসঙ্গে হই। তাই এই লক্ষ্মীপুজোয় বাড়ির পুজো আমার জীবনে নিরন্তর হয়ে থাকবে। যেখানেই থাকি না কেন, এই সময়টা আমি অন্য কোথাও কাটাতে পারব না।”

ভাবনা, পরিকল্পনা এবং প্রয়োগ: উৎসা হাজরা

সহায়তা: রিচা রায়

চিত্রগ্রাহক: দেবর্ষি সরকার

রূপটানশিল্পী: কাজু গুহ

কেশসজ্জাশিল্পী: আম্রপালি

পোশাক, অলঙ্কার এবং স্টাইলিং: অনুশ্রী মলহোত্র

স্থান সৌজন্যে: অফ বিট সিসিইউ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন