অনুরাগীদের ভিড়ের মাঝে অক্ষয়কুমার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
সেলেব্রিটিরা সাধারণত কথা বলার সঙ্গে ছবি তুলতে স্বচ্ছন্দ। অক্ষয়কুমার কিন্তু সাক্ষাৎকারের সময়ে ছবি তোলেন না। অবিচ্ছেদ্য আড্ডায় বিশ্বাস করেন। ছবি তো পরেও তোলা যায়!
নস্ট্যালজিয়া...
এই শহরেরই নিউ মার্কেট এলাকায় তিনি চাকরি করেছেন দু’বছর। সেই শহরে এখন পা রাখলে তাঁর জন্য ভিড় উপচে পড়ে। আনন্দবাজার পত্রিকার দফতরে আসা থেকেই হাসি মুখে ভিড়ের সামনে দাঁড়িয়ে হাত নাড়লেন, পোজ় দিলেন অক্ষয়কুমার। সঙ্গে তাঁর ‘গোল্ড’-এর সহ-অভিনেত্রী মৌনী রায়। অক্ষয় বলছিলেন পুরনো কথা, ‘‘আপনাদের অফিসের সামনের রাস্তা দিয়ে কত বার হেঁটে গিয়েছি, জানেন? এখানে আসার পথেই মৌনীকে বলছিলাম, ডান দিকে এই আছে, বাঁ দিকে ওই আছে। সে সব একটা সময় ছিল... আশির দশকের ওই সময়টা।’’ ১৯৮৪ সালে যখন ইন্দিরা গাঁধী মারা গেলেন, তখনও অক্ষয় কলকাতায়। ‘‘ওই গোটা অধ্যায়টার সময়ে কলকাতায় ছিলাম আমি। তখন গোষ্ঠী সংঘর্ষও দেখেছি পথেঘাটে,’’ পুরনো কথায় ফিরে গেলেন তিনি। নস্ট্যালজিয়া মৌনীরও কম ছিল না। তাঁদের জন্য আনা মিষ্টির ডালা দেখে লাফিয়ে উঠলেন, ‘‘ওমা! নলেন গুড়ের সন্দেশ? কত্ত দিন পর...’’ পটাপট ছবিও তুলতে লাগলেন ফোনে!
র্যাপিডে যা হল • বাঙালিদের কোন অভ্যেস প্রিয়? মৌনী: বই পড়া, নাচগান। অক্ষয়: আলসেমি! কী সুন্দর সময় নিয়ে ধীরে ধীরে কাঁটা বেছে মাছভাত খান আপনারা। • কোন অভ্যেস অপছন্দ? মৌনী: কথায় কথায় তর্ক জোড়া! অক্ষয়: মাথা গরম করে ফেলা। মৌনীও সেটে তাই করত। রিমা (পরিচালক) আবার অসমিয়া। সে-ও কম না। সেটে বলত, ‘আমার বন্দুকটা নিয়ে আয়। সব ক’টাকে গুলি করব!’ • পছন্দের বাঙালি মানুষ... অক্ষয়: মিঠুন চক্রবর্তী। খুব ভাল বন্ধু। মৌনী: সত্যজিৎ রায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নজরুল ইসলাম। • কোন বাঙালি পদ রাঁধতে জানেন? অক্ষয়: আমি একটাও জানি না! মৌনী: ডিমের ঝোল! • মৌনীর ‘নাগিন’ দেখেছেন? অক্ষয়: হ্যাঁ দেখেছি। • অক্ষয়ের সিনেমার কোন গানে সবচেয়ে বেশি নেচেছেন? মৌনী: (গেয়ে) চুরা কে দিল মেরা গোরিয়া চলি!
দেশ এবং...
অক্ষয়ের প্রায় সব ছবিতেই দেশহিত এবং দেশাত্মবোধের একটা দিক থাকেই। ‘এয়ারলিফ্ট’ থেকে ‘টয়লেট: এক প্রেম কথা’— হালের ‘গোল্ড’ও তাই। অক্ষয়কুমার কি তা হলে সরকারপন্থী রাস্তাতেই সৃজনশীল? প্রশ্ন শুনে অল্প অস্বস্তির মুখে খিলাড়ি নায়ক পড়লেন ঠিকই।
আরও পড়ুন: বাংলা ছবিতে উন্নত চিন্তাধারার অভাব, স্ট্রং কনটেন্ট নেই: ভরত কল
কিন্তু পাশ কাটানো স্মার্ট একটা উত্তরও দিলেন, ‘‘আমি তো সব রকম ছবি করারই চেষ্টা করি। যদি বলেন আমি খালি ইন্সপায়ারিং বায়োপিক করি, তা হলে ভুল ভাবছেন। ‘হাউসফুল ফোর’ করছি, ‘হেরা ফেরি থ্রি’ করব। এগুলো তো আউট অ্যান্ড আউট কমেডি! আমি শুধু দর্শককে ভাল সিনেমা উপহার দিতে চাই।’’
মৌনী ও অক্ষয়
স্পোর্টস সংক্রান্ত
‘গোল্ড’-এর পরিচালক রিমা কাগতি। এক জন মহিলা স্পোর্টস ফিল্ম পরিচালনা করছেন— কোথাও গিয়ে ঘটনাটা একটা স্টিরিওটাইপ ভেঙে দেয়। কী বলবেন? অক্ষয় বললেন, ‘‘এটা নিয়ে কোনও স্টিরিওটাইপ আছে বলে শুনিনি। তবে এটা ঠিক রিমা নিজে স্পোর্টস ভালবাসে না। খেলাধুলোও করে না। কিন্তু ছবিটা তুখড় বানিয়েছে। এবং এমন করেই বানিয়েছে যে, পর্দায় বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে। এটা গ্যারান্টি দিচ্ছি, এ রকম স্পোর্টস ছবি এর আগে বলিউডে হয়নি।’’