Tollywood Shooting

সীমার আবদারে কুচো মাছের তরকারি, মজার আড্ডায় চঞ্চল, বোলপুরের গ্রামে জমজমাট ব্রাত্যের শুটিং সেট

মুম্বই থেকে এসেছেন সীমা বিশ্বাস। বাংলাদেশ থেকে এসেছেন চঞ্চল চৌধুরী। বীরভূমের গ্রামে শুটিং চলছে ব্রাত্য বসুর নতুন ছবির। শুটিংয়ের ফাঁকে কী আবদার করলেন সীমা?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৫ ০৩:১৯
Share:

ব্রাত্য বসুর শুটিংয়ে ব্যস্ত চঞ্চল চৌধুরী, সীমা বিশ্বাস, লোকনাথ দে। নিজস্ব চিত্র।

বীরভূমের বোলপুর স্টেশন থেকে আরও আধ ঘণ্টা দূরে মোহনপুর গ্রাম। সেই গ্রামেই সেট পড়েছে ব্রাত্য বসুর আগামী ছবি ‘শেকড়’-এর। ঠাঠা রোদে গলদঘর্ম অবস্থায় একের পর এক শট দিচ্ছেন সীমা বিশ্বাস, লোকনাথ দে, চঞ্চল চৌধুরীরা। একটু এ দিক-ও দিক হলে আবার সহকারীকে বকুনিও দিচ্ছেন পরিচালক। এই সবকিছুর সাক্ষী থাকল আনন্দবাজার ডট কম।

Advertisement

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোটগল্প ‘দ্রবময়ীর কাশীবাস’ আর ‘দাদু’। এই দুই গল্পের আধারে ছবির চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন পরিচালক। সেইমতো অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নির্বাচনও করেছেন তিনি। তাঁর ছবিকে পর্দায় জীবন্ত করে তোলার জন্য কোন কোন জায়গায় শুটিং করলে যথাযথ হবে সবটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ঠিক করেছেন ব্রাত্য। সেই মতোই সাজানো হয়েছিল রাখালের বাড়ি।

রূপটানশিল্পী সোমনাথ কুন্ডু সেই ভাবেই সাজিয়েছিলেন সীমা এবং লোকনাথকে। বোঝা কঠিন, সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে দ্রবময়ী, রাখাল, না কি সীমা, লোকনাথ! শটের শেষে ওই গরমেও ‘প্রস্থেটিক মেকআপ’ নিয়েই গল্পে মজলেন অভিনেতারা। লোকনাথ বলেন, “প্রায় দেড় ঘণ্টা লেগেছে এই মেকআপ করতে। যদিও আমার কোনও কষ্ট হচ্ছে না। থিয়েটারের মানুষেরা সবাই এক হয়েছি। এটাই তো আনন্দ। কষ্ট ভাবলেই কষ্ট!”

Advertisement

টালিগঞ্জের প্রায় সব স্টুডিয়োয় এখন বাতানুকূল ফ্লোর। কিন্তু আউটডোরে সেই ব্যবস্থা তো নেই। তাতে অবশ্য কোনও অভিযোগও নেই নতুন প্রজন্মের অঙ্গনা রায়, ঋদ্ধি সেনদের। গুণী অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ কেউ কি হাতছাড়া করে? ছবিতে দ্রবময়ীর নাতনি অঙ্গনা আর রাখালের নাতি ঋদ্ধি। মিষ্টি প্রেমের গল্পেরও আভাস রয়েছে। পরিচালকের কথায়, “শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা আমাদের মধ্যে দিয়ে বয়ে যায়। অনুভূতিগুলোর ক্ষয় হয় হয়তো। কিন্তু ভালবাসা, ভালবাসাই থাকে। প্রেম প্রেমই থাকে। মোড়কের পরিবর্তন হয়, কিন্তু কিছু অনুভূতি তো চিরন্তন।”

চিত্রনাট্য লেখার শুরুর দিন থেকেই পরিচালক ঠিক করে নিয়েছিলেন, কাকে কোন চরিত্রে দেখতে চান। যেমনটা ভেবেছিলেন ঠিক সেই ভাবেই সাজিয়েছেন সবটা। সোমবারই বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় এসেছেন চঞ্চল। কলকাতা নেমেই সোজা বীরভূমের গ্রামে। শট দেওয়ার মাঝেই সবার সঙ্গে মজা করছেন তিনি। আর এ দিকে, শুটিংয়ের প্রতিটা মুহূর্ত তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছেন মোহনপুরের গ্রামবাসীরা।

শটের ফাঁকে চঞ্চল চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র।

‘টপ শট’ নিতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা হয়েছিল পরিচালকের। সামনের বাড়ির ছাদ থেকে উৎসুক দর্শককে নামাতে পুরো টিমের বেশ কিছুক্ষণ সময় লাগল। সেই ফাঁকে কেউ কেউ আবার অঙ্গনাকে দেখে ডেকে উঠল ‘পারো’ নামে। ছোটপর্দার সৌজন্যে এখনও তিনি সকলের কাছে ‘পারো’। অভিনেত্রী বললেন, “প্রথম বার বোলপুরে শুটিং। চারিদিকে তাবড় অভিনেতাদের ভিড়ে আমায় ‘পারো’ বলে ডাকছে, এটাই তো প্রাপ্তি!”

সীমা বিশ্বাসের সঙ্গে শুটিংয়ের মুহূর্তে অঙ্গনা রায়। নিজস্ব চিত্র।

সবাই হাসিখুশি মেজাজে থাকলেও চরিত্রের মধ্যে থাকলে তার বাইরে কোনও কথা বলতেই রাজি নন সীমা। ফ্লোরে দ্রবময়ী যেমন চুপচাপ। মেকআপ মুছে ফেলার পর সীমা ঠিক একেবারে উল্টোটা। ছবির শেষ শট। এক দিন বাদেই মুম্বই ফিরে যাবেন। তাই সবার সঙ্গে প্রাণ খুলে কথা বলছেন। সীমা বললেন, “শেষ দিনে সব করে নেব। আজ আমি কুচো মাছ দিয়ে ভাত খেয়েছি। আমার জন্য ওরা রান্না করেছিল। পাবদা মাছও আামার খুব প্রিয়। অনেকে ভাবেন আমি গম্ভীর প্রকৃতির। কিন্তু আমি কিন্তু ও রকম নই। খালি একটু লজ্জা পাই।” সীমার কথা শেষ হতে না হতেই আবার শুরু হল শুটিং।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement