জীতু কমল নিজেকে সামলালেন কী ভাবে? ছবি: ফেসবুক।
প্রত্যেকটা দিনের গায়ে যেন যুদ্ধের গন্ধ! এক দিকে নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ। অন্য দিকে, অভিনয়ের মান ধরে রাখা। হ্যাঁ, আমার গত কয়েকটি দিন এ ভাবেই কেটেছে। কোন শক্তিতে দিনগুলো পেরোতে পারলাম? জানি না। কোনও দিন ভাবতে পারিনি, এ রকম কোনও পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। এমনিতে কম কথা বলি। ঝামেলা এড়াতেই। নিজের সাজঘরে, নিজের মতো করে সময় কাটাতেই ভালবাসি। তা বলে সহ-অভিনেতাদের সঙ্গে রসিকতা করব না!
কত জন বিশ্বাস করবেন জানি না, আমি কিন্তু রসিকতাই করেছি। কোন পরিস্থিতি থেকে রসিকতার জন্ম, রেকর্ড করা নেই। ফলে, প্রমাণ দিতে পারব না। তবে যাবতীয় যা কথা— সবটাই কাজ করতে করতে নিছক মজার মেজাজে।
পুরো ঘটনাটাই যেন ‘বুদ্ধিতে যার ব্যাখ্যা মেলে না’! সংবাদমাধ্যমে লেখা হচ্ছে, সবটাই নাকি টিআরপি বাড়াতে ঘটছে। আমার মাথায় একের পর এক অভিযোগ— এটাও নম্বর তোলার ফন্দি? হঠাৎ, একদল আমার বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে খড়্গহস্ত হলেন, আমি কেন চ্যাট ফাঁস করেছি! আর একদলের দাবি, ‘যা বলেছে সেটাই তো চ্যাটে রয়েছে। তার মানে ছেলেটাই দোষী।’
আমারও তো মা-বাবা আছেন! তাঁদেরও তো মানসম্মান আছে। বাধ্য হয়ে চ্যাট প্রকাশ্যে এনেছি। আমাকেও তো বাঁচতে হবে। এ সব দেখতে দেখতে মা একদিন ডেকে সামনে বসালেন। তার পর সরাসরি প্রশ্ন করলেন, “জীতু, তুই কি সত্যিই প্রেম করছিস?” একই প্রশ্ন সংবাদমাধ্যম, টেলিপাড়া— সর্বত্র। মাকে সে দিন অনেকক্ষণ ধরে বুঝিয়েছিলাম, আমি এখন প্রেম বা বিয়ে করার মতো মানসিকতায় নেই। আগামী দিনেও যে তেমন কিছু হবে, তা জানি না। ফলে, কারও সঙ্গে আমার কিচ্ছু নেই। কেবল স্নেহের সম্পর্ক ছাড়া। হ্যাঁ, আবারও বলছি, যারা আমার থেকে অনেক ছোট তাদের শুধু স্নেহই করি।
পাশে পেয়েছি অনুরাগীদের। এখনও রোজ কেউ না কেউ প্রসাদী ফুল, মিষ্টি নিয়ে সেটে আসেন। কপালে ফুল ছোঁয়ান, প্রসাদ দেন। আমার মঙ্গল কামনা করেন। ওঁদেরও ছুঁয়ে গিয়েছে আমার উদ্বেগ। ভিতর থেকে জেদ চেপে গিয়েছিল, শেষ পর্যন্ত লড়াই করব। ময়দান ছেড়ে যাব না। আমায় কাজের জন্য ডাকা হয়েছে। সেখানে ত্রুটি থাকবে না। এ ভাবেই প্রত্যেকটি দিন কাটিয়েছি। অভিনয় করে গিয়েছি। যাবতীয় অনুভূতি, লড়াই বুকের মধ্যে লুকিয়ে।
ধারাবাহিক ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ভক্তদের চোখে আমায় নতুন করে আবার তারকা বানিয়ে দিয়েছে, ‘অডিয়েন্স স্টার’! সমাজমাধ্যমে রোজ ‘স্টার’ সম্বোধন দেখতে দেখতে চোখ শিরশির করে উঠছে, গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। এটুকু বলতে পারি, তকমার ‘মোহ’ কাটানো শক্ত। আমি এই মোহে মজে আছি। আর কিছু লক্ষ্য স্থির করেছি। কিছুটা তার পূরণ হয়েছে। অনেকটাই বাকি।
তাই এখন অন্য দিকে মন দিলে কখন সেই লক্ষ্যগুলো পূরণ করব?