খলনায়ক হয়ে বেশি জনপ্রিয় সাহেব চট্টোপাধ্যায়? ছবি: সংগৃহীত।
বড়দিনে বড়পর্দায় সাহেব চট্টোপাধ্যায়ের ভরপুর ‘দুষ্টুমি’! সেই ‘দুষ্টুমি’ দেখে চলচ্চিত্র সমালোচকেরা তাঁর প্রশংসা করছেন। যতই ‘দুষ্টুমি’ করুন, ভাল মুখ করে পর্দা জুড়ে দাঁড়ালে তাঁকে মন থেকে একেবারে ছেঁটে ফেলতেও পারছেন না দর্শক।
বড়দিনে মুক্তি পেয়েছে তিনটি বড় বাজেটের বাংলা ছবি। ‘প্রজাপতি ২’, ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’, ‘মিতিন: একটি খুনির সন্ধানে’। অরিন্দম শীল পরিচালিত তৃতীয় ছবিতে দাপুটে খলনায়ক সাহেব। পর্দায় তিনি একটি গান রেকর্ডিং সংস্থার কর্ণধার। গান-বাজনার সমঝদার। তাঁর জীবন বলছে, তাঁর মা লখনউয়ের খ্যাতনামী বাইজি। বাবা প্রথম স্ত্রীকে ত্যাগ করে তাঁকে বিয়ে করেন। সাহেবের সৎভাই রয়েছেন। এতগুলো কারণে ভাল গুণের সঙ্গে অজস্র মন্দ দিকও রয়েছে তাঁর চরিত্রে।
পর্দায় গানের সমঝদার সাহেব একাধিক নারীসঙ্গে অভ্যস্ত। রেগে গেলে তোড়ে গালমন্দ ছোটে তাঁর মুখ থেকে!
পর্দার মতোই সাহেব বাস্তবেও গান ভালবাসেন। খুব ভাল রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে পারেন। রেগে গেলে কি একই প্রতিক্রিয়া তাঁর? টলিউড বলে, অভিনেতা সুপুরুষ। বাস্তবে নিশ্চয়ই তাঁর প্রচুর প্রেম?
অভিনেতাকে প্রশ্ন করেছিল আনন্দবাজার ডট কম। তিনি শুনে হেসে ফেলেছেন। জবাব দিয়েছেন, “হাজার রাগ হলেও গালমন্দ একেবারেই আসে না। বরং বলতে অস্বস্তি হয়। অভিনয়ের সময়েও হয়েছে। নিজেকেই নিজে বুঝিয়েছি, যা করছি সবটাই অভিনয়।” ওই একই জায়গা থেকে পর্দায় একাধিক নারীসঙ্গ উপভোগ করলেও বাস্তবে নাকি তা একেবারেই ঘটেনি সাহেবের! তাঁর কথায়, “ছোট বয়সে একটা-দুটো প্রেম অবশ্যই হয়েছে। কিন্তু ‘নারীসঙ্গ’ বলতে যা বোঝায়, তা একেবারেই হয়নি। বিয়ের পর থেকে তো নয়ই।”
নৌকাবিহারে সাহেব চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
অভিনেতার দাবি, তাঁর অনুরাগিণীরা হয় বেশ ছোট, নয়তো তাঁর থেকে বড়। ফলে, তাঁর স্ত্রী তাঁকে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ভোগেন না।
সাহেবকে খলনায়ক চরিত্রে এর আগে দেখা গিয়েছে সন্দীপ রায়ের ‘হত্যাপুরী’, সিরিজ় ‘মিসেস আন্ডারকভার’, ‘অনুসন্ধান’, ‘বিজয়া’, ‘ব্ল্যাক উইডো’তে। বাস্তবে যিনি ভাল, পর্দায় তিনি ‘দুষ্টুমি’র সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই উপভোগ করেন? এ বার সজাগ কণ্ঠস্বর। সাহেব বললেন, “যা করি পর্দায় করি। পুরোটাই অভিনয়ের খাতিরে। অভিনয় উপভোগ করি। প্রত্যেকটা চরিত্র উপভোগ করি। তাই হয়তো আমার অভিনীত চরিত্র জীবন্ত দেখায়। দর্শক পছন্দ করেন।”
তার পরেই হেসে ফেলে যোগ করেছেন, “পর্দায় যতই লম্পট দেখানো হোক, বাস্তবে আমি ‘শান্তশিষ্ট, পত্নীনিষ্ঠ ভদ্রলোক’।”
পর্দায় ‘নায়ক’ সাহেবের থেকে ‘খলনায়ক’ সাহেব কি বেশি জনপ্রিয়?
প্রশ্ন শুনে একটু বুঝি থমকে গেলেন অভিনেতা। নিজেকে গুছিয়ে উত্তর দিলেন, “দর্শক কিন্তু আমায় নেতিবাচক চরিত্রে দেখতে চান না। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে একটা অলিখিত নিয়ম আছে। একবার কোনও তকমা গায়ে লেগে গেলে সেটা আর খুলতেই চায় না। একের পর এক খলনায়কের চরিত্র পাচ্ছি সম্ভবত সেই কারণেই।” সাহেব অভিনেতা, তাই সব ধরনের চরিত্রে তাঁকে অভিনয় করতে হয়।