Bollywood

Taapsee Pannu: আমাদের আট বছরের সম্পর্ক, লুকোনোর কিছু নেই, বলছেন বলিউডের ‘গর্বিত বহিরাগত’

কিন্তু একেবারে বসে গেলে স্ট্যামিনা চলে যেত। সেটা আমি কখনওই হতে দিতাম না। ফলে আমার বিল্ডিংয়ের ৪৫তলা হেঁটে উঠতাম। খুব কষ্ট করেছি।

Advertisement

নবনীতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৪৩
Share:

তাপসী পান্নু। —নিজস্ব চিত্র।

প্র: ‘রশ্মি রকেট’-এর জন্য অ্যাথলিট বডি তৈরি করতে পরিশ্রম হয়েছে তো অনেক!

Advertisement

উ: ছবির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করি গত বছর জানুয়ারি নাগাদ। সে সময়ে ‘হাসিন দিলরুবা’র শুটিং চলছিল। প্রত্যেক দিন ভোর পাঁচটায় উঠতাম। সকাল ছ’টা থেকে আটটা অবধি চলত ট্রেনিং। তার পর সকাল ন’টা থেকে রাত ন’টা অবধি শুটিং। উত্তরাখণ্ডে ছিলাম তখন, ভোরবেলা যখন ৬-৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকত, তার মধ্যেও দৌড়তাম। আমার সব ছবিই এমন যে, মানসিক চাপ তৈরি হয়। কিন্তু এই ছবির সময়ে শারীরিক ক্লান্তিও মারাত্মক ছিল।

প্র: তার মাঝেই লকডাউন শুরু হল...

Advertisement

উ: হ্যাঁ। তত দিনে আমার অনেকটা ট্রেনিং হয়ে গিয়েছে। আর তখনই শুরু হল লকডাউন। বুঝতেই পারছিলাম না যে, কত দিন সেটা চলবে। বাড়িতে বসেও এ ধরনের ট্রেনিং সম্ভব নয়, জানতাম। কিন্তু একেবারে বসে গেলে স্ট্যামিনা চলে যেত। সেটা আমি কখনওই হতে দিতাম না। ফলে আমার বিল্ডিংয়ের ৪৫তলা হেঁটে উঠতাম। খুব কষ্ট করেছি। আমার শরীরে তো অতিরিক্ত টেস্টোস্টেরন নেই, যেটা আমার চরিত্র ‘রশ্মি’-র আছে। তা হলে মাসকিউলার বডি তৈরি করা হয়তো সহজ হত। কিন্তু আমাকে খেটে এই চেহারা তৈরি করতে হয়েছে। আর আমার সব কোচের কড়া নির্দেশ ছিল যে, স্টেরয়েড নেওয়া যাবে না। ফলে কোনও শর্টকাট ছিল না। তবে খেলার প্রতি আমার ভালবাসা শক্তি জুগিয়েছে আমায়।

প্র: অ্যাথলিটদের জেন্ডার টেস্ট, টেস্টোস্টেরনের প্রভাব নিয়ে আপনার কী মত?

উ: টেস্টোস্টেরন বেশি থাকার জন্য তা মানুষের গতিকে প্রভাবিত করতে পারে না। এর জন্য মাসল বাড়তে পারে, কিন্তু মানুষের গতি নিয়ন্ত্রিত হয় না। এমন অনেক মেল অ্যাথলিটও আছেন, যাঁদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কম। কিন্তু মেয়েদের টেস্টোস্টেরন লেভেল বেশি থাকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই সমস্যা সমাধানের পথও অন্যায্য বলে মনে করি।

প্র: সব জায়গায় সিনেমা হল খুলে গিয়েছে কমবেশি। তা হলে ‘রশ্মি রকেট’ ওটিটি-তে মুক্তি পাচ্ছে কেন?

উ: আসলে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের মাঝেই ‌জ়িফাইভে ‘রশ্মি রকেট’ মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিস্থিতি অনুযায়ী তখন ওটিটিই ঠিক মনে হয়েছিল। পরপর আমার অনেক ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা। আমি চাইনি যে, প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির অপেক্ষায় নিজের ছবিগুলোর মধ্যেই দ্বন্দ্ব শুরু হোক! ঠিকঠাক ব্যবধানে সব ছবির মুক্তি চেয়েছিলাম। ওটিটিতে পরিবারের সঙ্গে বাড়িতে বসে ছবি দেখার মজা আছে। আবার বড় পর্দার জাদুও তার নিজস্ব জায়গায়। তবে ওটিটিতে একটা সমতা থাকে। কারণ কতগুলো হল বা শো পাচ্ছে, সেখানে ম্যাটার করে না। নামী তারকাই হোন কিংবা অনামী, সকলের ছবি একই মাধ্যমে মুক্তি পাচ্ছে, রিচও পাচ্ছে সমান। এটা কিন্তু ওটিটির ইতিবাচক দিক।

প্র: অভিনয়ের পাশাপাশি বার তো প্রযোজনাতেও...

উ: হ্যাঁ, বেশ কঠিন কাজ। অভিনয় করার সময়ে শুধু নিজের চরিত্রের কথা ভাবলেই হয়ে যায়। প্রযোজনার দায়িত্বে থাকা মানে টিমের সকলের দায়িত্ব নিতে হয়।

প্র: প্রোডাকশন হাউসের নাম ‘আউটসাইডার্স’ কেন?

উ: যে দিন থেকে ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছি, ইনসাইডার-আউটসাইডার নিয়ে বিতর্ক শুনেই যাচ্ছি। যদিও এতে আমি বিব্রত নই। আউটসাইডার হিসেবে আমি গর্বিত এবং খুশি। আর এতে আমার কিছু সুবিধেও হয়েছে। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মেছি, বড় হয়েছি। রুপোর চামচ মুখে নিয়ে যাঁরা জন্মেছেন, তাঁদের চেয়ে বাস্তব জীবন আমি অনেক কাছ থেকে দেখেছি। সেই জন্য দর্শকও আমার সঙ্গে বেশি রিলেট করতে পারেন, তাঁদেরই একজন বলে মনে করেন। আউটসাইডার মানেই সে বঞ্চিত, ভিক্টিম, তা কিন্তু নয়। এই শব্দটাও যে হাসিখুশি একটা ব্যাজ হতে পারে, সেটা বোঝাতেই এই নামকরণ।

প্র: আপনি কি সচেতন ভাবেই মূলত নারীকেন্দ্রিক ছবি বাছেন?

উ: আসলে নারীকেন্দ্রিক যে ছবিগুলো প্রথম দিকে করেছি, সেগুলো দর্শক খুব ভাল ভাবে গ্রহণ করেছেন। ফলে সেই ধরনের চরিত্রে আমার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। তাই এখন পরিচালক ও প্রযোজকরা আমাকে এমন চরিত্রের প্রস্তাবই দেন।

প্র: বাঙালি পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তো কাজ করছেন...

উ: কত বাঙালি পরিচালকের সঙ্গে কাজ করা হয়ে গেল। সুজয়দা (ঘোষ), সুজিতদা (সরকার), এ বার সৃজিতদা। আমার ফিল্মি জীবনের ট্রিপল ‘এস’। সৃজিতদা তো সেই ‘পিঙ্ক’-এর সময় থেকেই যোগাযোগ করেছিলেন। গত বছর থেকেও টানা কথা চলছে। আগেও অন্য ছবির প্রস্তাব দিয়েছেন উনি। নানা কারণে সে সব কাজ করা হয়ে ওঠেনি। অবশেষে কাকতালীয় ভাবে এই ছবিতে ওঁর পরিচালনায় কাজ করছি। ‘শাবাশ মিতু’-র পাঁচ দিনের শুটিংও হয়ে গিয়েছিল। অন্য পরিচালক ছিলেন তখন। কিন্তু সৃজিতদার সঙ্গে আবার যখন সব শুরু করলাম, আমি তো অবাক। ওঁর যেমন সিনেমার উপরে দখল, তেমনই ক্রিকেটের সব কিছুও নখদর্পণে।

প্র: বিয়ে নিয়ে কোনও পরিকল্পনা আছে? ম্যাথিয়াস বোয়ের ব্যাপারে কী বলবেন?

উ: এত ছবিকে ‘হ্যাঁ’ বলে দিয়েছি যে, আমার সব ডেট বুকড। পরিবার, বন্ধুবান্ধব, এমনকি নিজের জন্যও ডেট ফাঁকা নেই। তা হলে বিয়ের দিন স্থির করব কী করে (হাসি)? আর ম্যাথিয়াসের সঙ্গে সম্পর্ক গোপন করতে চাই না। আট বছরের সম্পর্ক, লুকোনোর কিছু নেই। কিন্তু আমি ব্যক্তিগত জীবনকে আলাদা রাখতে চাই। আমি চাই, আমার কাজ নিয়ে হেডলাইন হোক। ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন