Coronavirus Lockdown

ডার্ক কনটেন্টের পরে হালকা কিছু দেখতে ইচ্ছে করে

পাওলি দামের দিনযাপনের ডায়েরি একাকিত্ব যে কী ভীষণ বস্তু, তা ওই ক’দিনেই টের পেয়েছেন পাওলি।

Advertisement

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২০ ০০:৪৬
Share:

বই যখন সঙ্গী

প্রথম প্রথম যে ছুটিটা উপভোগ্য মনে হচ্ছিল, ক্রমশ সেটাই দমবন্ধ করে দিচ্ছে। শুরুর দিকে দিব্যি চলছিল সিনেমা-সিরিজ়ের ম্যারাথন। এখন একটা দেখার পরে ভাবতে হচ্ছে, নেক্সট কী? গত এক মাসে এত বিষয় দেখেছেন যে, সব মনেও নেই পাওলি দামের। লকডাউন ঘোষণার সময়ে অভিনেত্রী ছিলেন বালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে। কিন্তু সেখানে তিনি একা। স্বামী অর্জুন দেব রয়েছেন গুয়াহাটিতে। ওখানে অবশ্য করোনার প্রকোপ মারাত্মক নয়। তাই স্বামীকে নিয়ে দুশ্চিন্তা নেই। কিন্তু একাকিত্ব যে কী ভীষণ বস্তু, তা ওই ক’দিনেই টের পেয়েছেন পাওলি। তার পরেই ব্যাগপত্তর গুছিয়ে সোজা নিজের লেক গার্ডেন্সের ফ্ল্যাটে। সেখানে তাঁর মা-বাবা-ভাই রয়েছেন।

Advertisement

‘‘কিছু দিন বালিগঞ্জে কাটানোর পরেই বুঝেছিলাম, এ ভাবে থাকা সম্ভব হবে না। এখানে সকলে মিলে চলে যাচ্ছে। মায়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে টুকটাক বাড়ির কাজ করছি। ভাইয়ের সঙ্গে খুনসুটি চলছে,’’ বলছিলেন পাওলি। অভিনেত্রীর প্রোফাইল পিকচারের জন্য কিন্তু ভাই ভরসা। দিন কাটাচ্ছেন কী করে? ‘‘একটা রুটিন আছে। এক্সারসাইজ়, রান্না, ওটিটি স্ট্রিমিং, আড্ডা আর ঘুম। তবে ব্যাপার হল, এই রুটিনে কোনও সময়ের ঠিক ঠিকানা নেই। যখন যেটা ইচ্ছে, সেটা করছি। আপনার সঙ্গে কথা বলার ঠিক আগেই চিকেন ম্যারিনেট করতে দিলাম।’’ অভিনেত্রীর রান্নার হাত চমৎকার। দেশি-বিদেশি কুইজ়িনও রপ্ত। জানালেন, এর মধ্যে মালাবার ভেজ স্টু এক্সপেরিমেন্ট করেছিলেন। ‘‘এই প্রিপারেশনটা কেরলে মাটন দিয়েই হয়। কেন জানি না, এখন আমার নিরামিষ পদ খেতেই বেশি ভাল লাগছে।’’

সিনেমা-সিরিজ়ের মধ্যে কী কী ভাল লাগল? ‘‘এর মধ্যে অনেক স্প্যানিশ কনটেন্ট দেখলাম। ‘আউটল্যান্ডার’-এর উইকলি এপিসোডের জন্য অপেক্ষা করে থাকি। ‘ফ্রয়েড’ ভাল লাগল, হিপনোটিজ়ম নিয়ে আমার আলাদা আগ্রহ রয়েছে। ‘প্যারাসাইট’ আগে দেখা হয়নি, ওটা দেখলাম। ‘মানি হাইস্ট’ আর ‘ফাউদা’ দুটোর নতুন সিজ়ন দেখলাম। তবে দুটোরই আগের সিজ়নগুলো অনেক বেশি ভাল ছিল,’’ মন্তব্য পাওলির। অনেক দিন পরে বই পড়ার সময় পাওয়া যাচ্ছে। শ্রীদেবীর বায়োগ্রাফি পড়ছেন এখন তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন: কোয়েল, শুভশ্রীর পর এবার অঙ্কিতা, টলিপাড়ায় লাগাতার ‘গুড নিউজ’

২৫ বৈশাখ সোশ্যাল মিডিয়ায় মায়ের সঙ্গে গানের ভিডিয়ো আপলোড করেছিলেন পাওলি। আলাদা করে কখনও তালিম নেননি, যেটুকু শিখেছেন মায়ের কাছ থেকেই। জানালেন, তাঁর মা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গায়িকা। মায়ের সঙ্গে বসে গানের চর্চাও চলছে। পাওলির ইচ্ছে ছিল এই অবসরে নতুন কিছু শেখার। ‘‘আমার অনেক দিনের শখ পিয়ানো বা গিটার শিখব। এটাই সুযোগ ছিল। পিয়ানো তো নেই-ই, রয়েছে শুধু একটা ভাঙা গিটার। তা দিয়ে আর কী সুর তুলব,’’ মজার সুরে বললেন অভিনেত্রী। ইচ্ছে ছিল মিনিয়েচার গার্ডেনিং শেখার। জিনিসপত্রের অভাবে তা-ও হয়নি। কাজে ফিরতে পারছেন না, সে আক্ষেপ হচ্ছে না? ‘‘আক্ষেপের চেয়েও বেশি চিন্তা হচ্ছে। এর পর কাজ হবে কী ভাবে? কাজের সংখ্যাও হয়তো কমে যাবে। চিন্তাটা শুধু নিজের জন্য নয়, সকলের জন্যই,’’ মন্তব্য পাওলির। দু’-তিনটি নতুন প্রজেক্টের কথা চলছিল তাঁর। এখন সব কিছুই পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করছে।

সিনেমা-সিরিজ় দেখা স্রেফ বিনোদন নয় পাওলির কাছে। এর মধ্য দিয়ে নিজেকে গ্রুমও করেন তিনি। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ডার্ক কনটেন্টের রমরমা। পাওলি নিজেও সেগুলো উপভোগ করেন। কিন্তু পরপর এই জ়ঁরের কনটেন্ট দেখার পর, মন হালকা করে দেওয়া কিছু দেখতে ইচ্ছে করে অভিনেত্রীর। ইরফান খানের ‘করীব করীব সিঙ্গল’ দেখলেন যেমন। পাওলির কথায়, ‘‘ডার্ক কনটেন্ট মন-মাথা সব গ্রাস করে নেয় যেন। মাঝে সফট কিছু দেখে ব্রেক নিই। ইরফানের ‘করীব করীব সিঙ্গল’ আগে দেখা ছিল না। ছবিটা দেখে মন ভাল হয়ে গেল, আবার খারাপও। ইরফানের মতো অভিনেতার মৃত্যু যেন দুঃসময়কে আরও কঠিন করে দিল। আলাপ, পরিচয় কিচ্ছু ছিল না, তা-ও যেন ইরফান বড় কাছের কেউ ছিলেন।’’

কাছের মানুষকে ছেড়ে থাকা সত্যিই কষ্টের। কবে লকডাউন উঠবে, কবে অর্জুনের সঙ্গে পরিচিত সংসারের ছন্দে ফিরবেন, সে অপেক্ষাতেই এখন পাওলি।

আরও পড়ুন: অনলাইনে ছবিমুক্তি নিয়ে উদ্বেগ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন