কাজের সুযোগ না পেয়ে ইন্ডাস্ট্রি থেকে বিদায় নিয়েছেন, এমন কুশীলবের সংখ্যা অনেক। কিন্তু আলাদা পরিচিতি তৈরি করবেন বলে ইচ্ছে করে বলিউড থেকে সরে গিয়েছেন, খুব কম হলেও এমন নজিরও আছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম পেরিজাদ জোরাবিয়ান।
মুম্বইয়ের সম্ভ্রান্ত পার্সি পরিবারে জন্ম ১৯৭৩ সালের ২৩ অক্টোবর। তরুণী বয়সেই শুরু মডেলিং। সুন্দরী পেরিজাদকে প্রথম বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছিল টেলিভিশনে। ব্রণ কমানোর একটি ওষুধের বিজ্ঞাপনের মুখ ছিলেন তিনি।
বিজ্ঞাপনে হাতেখড়ি হওয়ার পরেই পেরিজাদ সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেননি। বরং তিনি বিদেশে পাড়ি দেন। নিউ ইয়র্কের বারুখ কলেজে তিনি মাস্টার্স করেন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে।
ব্যবসা এবং মডেলিংয়ের পাঠের মধ্যে বরাবরই সামঞ্জস্য রক্ষা করে চলেছেন তিনি। নিউ ইয়র্কের লি স্ট্রাসবার্গ থিয়েটার অ্যান্ড ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকেও তিনি কোর্স সম্পূর্ণ করেন।
দেশে ফিরে আবার মডেলিং শুরু করেন পেরিজাদ। মূলত প্রসাধনী পণ্যের বিজ্ঞাপনেই তাঁকে দেখা যেত। ১৯৯৭ সালে পেরিজাদ প্রচারের আলোয় আসেন লাকি আলির ভিডিয়ো ‘নেহি রাখতা দিল মেঁ কুছ’-এর দৌলতে।
টেলি সিরিয়াল ‘হম পরদেশি হো গ্যায়ে’তে পেরিজাদ অভিনয় করেন মায়ার ভূমিকায়। প্রথম সিনেমায় অভিনয় ২০০১ সালে, নাগেশ কুকুনুরের পরিচালনায় ‘বলিউড কলিং’-এ।
২০০৩-এ সুভাষ ঘাইয়ের ‘জগার্স পার্ক’-এ জেনির চরিত্রটি পেরিজাদকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি দেয়।
তাঁর ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য বাকি ছবি হল ‘মুম্বই ম্যাটিনি’, ‘মর্নিং রাগা’, ‘ধুম’, ‘এক আজনবি’, ‘সালাম-এ-ইশক’ এবং ‘জাস্ট ম্যারেড’।
চিনা ভাষার ছবি ‘বানদুং সোনাটা’-য় পেরিজাদ অভিনয় করেছিলেন ইন্দিরা গাঁধীর ভূমিকায়।
তবে অভিনয়ের পাশাপাশি মুছে যায়নি পেরিজাদের মনের ব্যবসায়ী দিকটিও। পারিবারিক দিক দিয়ে পেরিজাদ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন তাঁর বাবার পোলট্রি ব্যবসা—‘জোরাবিয়ান চিকেন’।
অনেক দিন থেকেই তিনি বাবাকে সাহায্য করতেন ব্যবসার কাজে। ২০০৮ সাল থেকে পেরিজাদ-ই হয়ে ওঠেন পারিবারিক ব্যবসার প্রধান মুখ।
গুণমানের দিক থেকে তাঁর সংস্থা পুরস্কৃতও হয়েছে। পাশাপাশি মুম্বইয়ে ‘গন্ডোলা’ বলে তাঁর একটি রেস্তরাঁও আছে।
২০০৬ সালে পেরিজাদ বিয়ে করেন শিল্পপতি বোমান রুস্তম ইরানিকে। মেয়ে জায়া এবং ছেলে জায়াদকে নিয়ে তাঁদের ভরপুর সংসার।
দেশের সফল ব্যবসায়ীদের মধ্যে পেরিজাদ এখন অন্যতম। পছন্দসই চিত্রনাট্য ও চরিত্র পেলে ফিরতে পারেন বলিউডেও। তবে আপাতত উপভোগ করছেন নিজের উদ্যোগপতি পরিচয়টাই।