Bankim Chandra Chattopadhyay

বঙ্কিমচন্দ্রের জন্মদিনে কাঁঠালপাড়ায় শ্রাবন্তী-প্রসেনজিৎ! তারকাদের জন্যই সাহিত্যসম্রাটের ভিটেয় ভিড়

নৈহাটির কাঁঠালপাড়ায় গাছপালায় ঘেরা বঙ্কিমচন্দ্রের বাড়ি। বৃষ্টি-রোদের খামখেয়ালি আনাগোনা থাকলেও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে দেখার জন্য স্থানীয় মানুষের ভিড় জমে সাহিত্যিকের বাড়ির সামনে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৫ ১৪:৫৭
Share:

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে প্রসেনজিৎ-শ্রাবন্তী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পরনে লাল পাড় সাদা শাড়ি। কানে সোনার ঝোলা দুল, খোঁপায় জুঁইয়ের মালা। এই বেশে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছে গেলেন শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। বঙ্কিম-সৃষ্ট চরিত্র ‘দেবী চৌধুরাণী’ রূপে চলতি বছরেই বড় পর্দায় ধরা দেবেন অভিনেত্রী। তাই সাহিত্যিকের ১৮৭তম জন্মদিনে তাঁরই বাড়ি পৌঁছে গেলেন শ্রাবন্তী এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

‘ভবানী পাঠক’-এর চরিত্রে দেখা যাবে প্রসেনজিৎকে। তাঁর কণ্ঠেও সেই একই দৃপ্ততা ধরা দিল। নৈহাটির কাঁঠালপাড়ায় গাছপালায় ঘেরা বঙ্কিমচন্দ্রের বাড়ি। বৃষ্টি-রোদের খামখেয়ালি আনাগোনা থাকলেও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে দেখার জন্য স্থানীয় মানুষের ভিড় জমে সাহিত্যিকের বাড়ির সামনে।

খাদির পাঠান সুট, তার উপর জ্যাকেট পরে গাড়ি থেকে নেমে এলেন ‘ভবানী পাঠক’ তথা প্রসেনজিৎ। আনন্দবাজার ডট কমকে প্রসেনজিৎ বললেন, “ছবিমুক্তি এই পুজোতে। তাই এই বছরের পুজোটা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্য। এই ছবিতে আমি নায়ক নই। এই ছবিতে আমি স্তম্ভ। যার হাত ধরে এক নারীশক্তি গড়ে ওঠে।”

Advertisement

এই ছবি নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছেন অভিনেতা। তাঁর কথায়, “বঙ্কিমবাবুর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাঙালির আবেগ। তাই এই ছবি বোধহয় মানুষের সঙ্গে যোগ স্থাপন করতে পারবে। আরও ভাল লাগবে যদি দর্শকের ভবানী পাঠককে পছন্দ হয়। আজ সাহিত্যিকের জন্মদিন। তাই এই দিন আমাদের কাছে উদ্‌যাপনের।” এর মাঝেই ভিড় করা মানুষের তরফ থেকে প্রসেনজিতের কাছে এসেছিল ছবি থেকে দুটি সংলাপ বলে শোনানোর অনুরোধ। তবে এই অনুরোধে টলি তারকার স্পষ্ট জবাব, “এটা কোনও মাচা অনুষ্ঠান নয়।”

বাস্তবে প্রসেনজিৎকেই নিজের জীবনের ‘ভবানী পাঠক’ বলে মনে করেন শ্রাবন্তী। প্রসেনজিৎ বলেন, “অনেক ছোটবেলা থেকে শ্রাবন্তী আমার সঙ্গে কাজ করেছে। আমার শিশুকন্যার চরিত্রে অভিনয় করেছে। আবার প্রায় নায়িকাও হয়েছে। আর এখানে একটা বুড়ো ভবানী পাঠক পেয়েছে। এই ছবিতেও তো কন্যাসম চরিত্রেই ও।”

ছবি নিয়ে একই রকমের উচ্ছ্বসিত স্বয়ং ‘দেবী চৌধুরাণী’। শ্রাবন্তী বলেন, “আজ ছবির প্রচার শুরু হল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের থেকে আশীর্বাদ নিয়ে। এর থেকে সুন্দর আর কী হতে পারে! আজ থেকেই আমার মনে পুজোর আনন্দ শুরু। সকালেই বাবাকে ফোন করে জানিয়েছি, আমি এখন কোথায় আছি।”

শ্রাবন্তীর পরিবারে বঙ্কিমচন্দ্রের সৃষ্টি নিয়ে চর্চা হত। তাই এই চরিত্র তাঁর কাছে আরও বিশেষ হয়ে উঠেছে। প্রসেনজিতের সঙ্গে অভিনয় সম্পর্কে অভিনেত্রী বলেন, “বুম্বাদার সঙ্গে তিনটি ছবি। প্রথম ছবিতে আমার বাবা হয়েছিলেন। দ্বিতীয় ছবিতে প্রেমের সম্পর্ক। আর এই ছবিতে অভিভাবক তথা প্রশিক্ষক।”

‘দেবী চৌধুরাণী’ হয়ে উঠতে বেশ কিছু লড়াইয়ের দৃশ্যে শুটিং করতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। কিন্তু যোদ্ধার রক্ত রয়েছে বলে, তাই তাঁকে খুব বেগ পেতে হয়নি। শ্রাবন্তী বলেছেন, “যোদ্ধা পরিবারের মেয়ে আমি। দাদু স্বাধীনতা সংগ্রামী। বাবা সেনাবাহিনীতে ছিলেন। তাই আমার মধ্যেও একটা লড়াকু ব্যাপার আছে। জীবনেও তো কত সংগ্রাম করতে হয়। তাই আমিও এমন একটি চরিত্র চেয়েছিলাম। পুরুষেরা শারীরিক ভাবে শক্তিশালী ঠিকই। কিন্তু নারীশক্তির আলাদা ক্ষমতা রয়েছে। তবে এই চরিত্রের জন্য তরোয়াল চালানো, ঘোড়ায় চড়ার প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে।”একই ভাবে আত্মবিশ্বাসী পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র। তিনি বললেন, "বইয়ের পাতার প্রফুল্ল, ভবানী পাঠকদের দর্শকের ভাল লাগবেই আমি নিশ্চিত। বড়মার আশীর্বাদ, লেখকের জন্মস্থান থেকে আমাদের যাত্রা শুরু করলাম এর চেয়ে শুভ আর কী হতে পারে।"

এই দিন প্রসেনজিৎ এবং শ্রাবন্তীর সঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্রের বাড়িতে পৌঁছেছিলেন আরও দুই অভিনেত্রী— দর্শনা বণিক ও বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement