Bunty Aur Babli 2

Bunty Aur Babli 2: অভিষেকের জুতোয় পা গলালেন সইফ, পুরনো মেজাজে রানি, ছবির প্রাপ্তি এক জোড়া ‘বান্টি-বাবলি’

যে কোনও সিক্যুয়েল ছবির উপরে এমনিতেই একটা বাড়তি চাপ থাকে। প্রত্যাশা পূরণের চাপ।

Advertisement

সুচন্দা অধিকারী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২১ ১৫:৩৮
Share:

এ ছবি এনেছে নতুন ‘বান্টি-বাবলি’ জুটি।

‘বান্টি অউর বাবলি’। দর্শকের মনে নামটা দাগ কেটেছিল সেই ২০০৫-এ। এবং তার আকর্ষণ যে এত বছরেও এতটুকু ফিকে হয়নি, তা দিব্যি বোঝা গেল ‘বান্টি অউর বাবলি ২’ ঘিরে দর্শকের আগ্রহে। এ ছবিতে প্রথমেই যেটা চোখে পড়ার মতো এবং সবচেয়ে কঠিন কাজ, তা হল বান্টির পরিবর্তন। অর্থাৎ অভিষেক বচ্চনের জায়গায় স‌ইফ আলি খান। এবং এই বদলটা হতে হত সাবলীল ভাবে। স‌ইফ আলি খানের অভিনয় দক্ষতা আগের বান্টির জীবনে আরও ১৫টা বছর সুন্দর ভাবে জুড়ে দিতে পেরেছে। রানি মুখোপাধ্যায়ও ১৫ বছর পেরিয়ে সুগৃহিণী বাবলিতে পরিণত। এ ছবি এনেছে নতুন ‘বান্টি-বাবলি’ জুটি। শর্বরী ওয়াঘ এবং সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী গল্পে এসে কাঁধে নিয়েছেন পরের প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব। এবং সফল ভাবে।

Advertisement

যে কোনও সিক্যুয়েল ছবির উপরে এমনিতেই একটা বাড়তি চাপ থাকে। প্রত্যাশা পূরণের চাপ। আগের ছবির টানটান উত্তেজনা এ ছবিতেও ধরে রাখার চেষ্টা করে গিয়েছেন পরিচালক বরুণ ভি শর্মা। কিন্তু মাঝেই মধ্যেই ঘটে গিয়েছে ছন্দপতন। কিছু কিছু জায়গায় যেন অনেকটা ঘুমন্ত শিশুকে জোর করে টেনে দাঁড় করিয়ে রাখার মতো অবস্থা। এই খামতির পিছনে একটা বড় কারণ চিত্রনাট্যের দুর্বলতা। সেখানেই এখনও এ ছবিকে দশ গোল দেবে পুরনো ‘বান্টি অউর বাবলি’। সাধে কি ১৫ বছর পরেও দর্শককে মোহিত করে রাখে! হয়তো পূর্বসূরীর সেই ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখার তাগিদ বা চাপেই ছবির বেশ কিছু জায়গায় সংলাপ ও অভিনয়ে জোর করে হাসানোর চেষ্টা। কিন্তু তাতে কৌতুকের স্বাভাবিক স্বাদটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

আগের ছবির টানটান উত্তেজনা এ ছবিতেও ধরে রাখার চেষ্টা করে গিয়েছেন পরিচালক বরুণ ভি শর্মা।

তবে জোর করে চাপানো হাস্যরস কিছুটা হলেও ভুলিয়ে দেয় শক্তিশালী অভিনয়। রানি মুখোপাধ্যায়ের এ চরিত্রের বুনন চেনা। এবং নিজের অভিনয়-গুণেই নজর কেড়েছেন তিনি। কিন্তু তুমুল জনপ্রিয় ‘বান্টি’ চরিত্রে অভিষেকের জুতোয় পা গলানোর কাজটা সহজ ছিল না। কিন্তু সহজাত দক্ষতায় আর সাবলীল কৌতুক-ক্ষমতায় সইফ সে কাজটা বেশ ভালই করেছেন। তবে গল্পে বয়স বাড়ার পরেও সাজেগোজে রানিকে কমবয়সি দেখানোর চেষ্টাটা একেবারেই বেমানান। পোশাক পরিকল্পনায় বেশ অনেকটাই খামতি রয়েছে গিয়েছে এ ছবিতে।

তবে এ ছবির সবচেয়ে সুন্দর আর মজার পাওনা হল ‘জটায়ু সিংহ’ চরিত্রে প‌ঙ্কজ ত্রিপাঠী। আগের ছবির সাব ইনস্পেক্টর দশরথ সিংহের অবসরের পরে তাঁর জায়গায় আগমন জটায়ুর। অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘দশরথ’-এর জায়গায় নিজের মতো করেই চোখ টেনেছেন পঙ্কজ। পর্দায় তাঁর উপস্থিতি এবং অভিনয় এ ছবিতে বেশ খানিকটা খোলা হাওয়া এনে দেয়। অনেকটাই হেলে পড়ে যাওয়া চিত্রনাট্যকে মজবুত কাঁধে একাই অনেকটা বয়ে নিয়ে যান পঙ্কজ।

ছবির চিত্রায়ণ আরও খানিকটা যত্নে সুন্দর হতে পারত। আবারও আগের ছবির তুলনায় বেশ কিছুটা খামতি। বেশ কিছু দৃশ্যপট সাবলীলতা হারিয়েছে। দৃশ্যান্তর কিছু জায়গায় যেন খেই হারিয়ে ফেলেছে। তবে ছবির গানের মজাদার সুর ও কথা গল্পকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যায়।

Advertisement

গল্পের মূল ভাবনাটি কিন্তু সুন্দর। মজার ছলে দেশের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা বেশ নিপুণ ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের এক শহরের নাম পরিবর্তন থেকে নেতার জন্মদিন, দেশের বেকার সমস্যা থেকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার হাল— রম্যরসের ছোঁয়ায় সবটাই স্পষ্ট। শিশুমনে সমাজ-সংস্কৃতির প্রভাব‌ও বেশ জোরালো ভাবে দেখানো হয়েছে, যা খুবই সময়োপযোগী।

সব শেষে বলি, এক জোড়া বান্টি-বাবলির কীর্তিকলাপ, সইফ-রানি-পঙ্কজের অভিনয়—লকডাউন পরবর্তী সময়ের বিষণ্ণতা কিছুটা হলেও কাটিয়ে দেওয়ার উপাদান মজুত এ ছবিতে। পূর্বসূরীর সঙ্গে পুঙ্খানুপুঙ্খ তুলনা না-ই বা করলেন, ক্ষতি কী!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন