cinema

Dial 100: মন্থর চিত্রনাট্যে অভিনয়ই প্রাপ্তি

ধ্রুব মাদকদ্রব্য বিলি করতে বেরিয়ে পড়েছে গন্তব্যের উদ্দেশে। নিখিল কি পারে তার পরিবারকে বাঁচাতে?

Advertisement

নবনীতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২১ ০৭:৩৩
Share:

মাদকচক্র, এই শব্দবন্ধনী শেষ এক বছরে যথেষ্ট আলোচিত। আর এই চক্রের সঙ্গে জড়িত মানুষের জীবনও বহু বার বহু ভাবে ফিরে এসেছে পর্দায়। তার থেকে একটু সরে এসে একটা অন্য দিক দর্শানোর চেষ্টা করা হয়েছে ‘ডায়াল ১০০’-এ। এই নেশার শিকড় কত দূর বিস্তৃত আর সেই শিকড়ের নাগপাশে কী ভাবে একের পর এক পরিবারও জড়িয়ে পড়ে, তা তুলে ধরা হয়েছে এ ছবিতে। রাতভর পার্টিতে জেন নেক্সটের উঠতি জীবন এই নেশার ছায়ায় কী ভাবে অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে, তার উপরে কিছুটা আলোকপাত করেছেন পরিচালক রেনসিল ডি’সিলভা। কিন্তু সেই আলো কি দিশা দেখায়?

Advertisement

এক বর্ষার রাতে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন আসে সীমা পল্লবের (নীনা গুপ্ত)। তিনি আত্মঘাতী হতে চান। ফোন ধরেন সিনিয়র পুলিশ ইনস্পেক্টর নিখিল সুদ (মনোজ বাজপেয়ী)। কথোপকথন এগোনোর সঙ্গে-সঙ্গেই নিখিল বুঝতে পারে ভদ্রমহিলার উদ্দেশ্য আত্মহত্যা নয়। বরং তার ছেলের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়া। আর সেই প্রতিশোধের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে রয়েছে নিখিলের আত্মজ ধ্রুব। তাকে ধরতে নিখিলের স্ত্রী প্রেরণাকে (সাক্ষী তনওয়ার) অপহরণ করে সীমা। এ দিকে ধ্রুব মাদকদ্রব্য বিলি করতে বেরিয়ে পড়েছে গন্তব্যের উদ্দেশে। নিখিল কি পারে তার পরিবারকে বাঁচাতে?

এক পুলিশের ছেলে মাদকচক্রের সঙ্গে জড়িত। বাবা হিসেবে নিখিল তাকে বাধা দিয়ে সৎ পথে আনতে চায়, আবার তাকে বাঁচাতে তার অপরাধও আড়াল করে রাখে। এই দোলাচল খুব সুন্দর ফুটিয়ে তুলেছেন মনোজ। কিন্তু ছবির সমস্যা হল, মনোজের এই চরিত্রও অবিকল ‘দ্য ফ্যামিলিম্যান সিজ়ন টু’-এর শ্রীকান্ত তিওয়ারির মতো। মাসদুয়েক আগে মুক্তিপ্রাপ্ত সেই সিরিজ়ের নায়ক শ্রীকান্তের পোশাক ছেড়ে বেরোতে পারেনি নিখিলের চরিত্রটি। এখানেও তার তদন্ত ও পরিবার চলে এসেছে এক ট্র্যাকে। ছবির চিত্রনাট্য, চরিত্রায়ণও এমন ভাবে সাজানো, যা বারেবারে মনে করায় শ্রীকান্তকে। চলে আসে তুলনা। আর সেখানেই এই ছবি পিছিয়ে পড়েছে।

Advertisement

পুরো গল্পেই মোটামুটি আগে থেকে বোঝা যায় যে, কী হতে চলেছে। সাবপ্লট বা টুইস্টের অত ঘনঘটা নেই। ধীর লয়ে একটি জরুরি বার্তা তুলে ধরতে চেয়েছেন পরিচালক রেনসিল ডি’সিলভা। অপরাধীর পিছনে পুলিশি দৌড়ের উত্তেজনার চেয়েও সন্তানকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিহ্বল মা-বাবার গল্পই বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। কিন্তু সেই আবেগ যেন ঠিক স্পর্শ করতে পারে না দর্শককে। পরিচালকের প্রথম দিকের ছবি ‘কুরবান’-এও অপরাধজগৎ ও পরিবার ছিল ফোকাসে। কিন্তু সেখানে যে রহস্য বা ভয় দানা বেঁধেছিল, তার কোনওটিই অনুভূত হয় না এ ছবিতে।

ডায়াল ১০০ (ওয়েব মুভি)
পরিচালনা: রেনসিল ডি’সিলভা
অভিনয়: মনোজ, নীনা, সাক্ষী
৫.৫/১০

তবে এ ছবির অন্যতম প্রাপ্তি নীনা গুপ্ত। এ রকম চরিত্রে আগে কখনও দেখা যায়নি তাঁকে। তাঁর ঘাড় ঘুরিয়ে তাকানো, সন্তানশোকে বিহ্বল অবস্থা, তার পরেই তাঁর প্রতিশোধস্পৃহার অভিব্যক্তি মনে থেকে যাওয়ার মতো। ছবির শুরুতে ক্লোজ় শটে ফোনের কথোপকথনে মনোজের অভিব্যক্তিও বেশ ভাল। নীনা, মনোজের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন সাক্ষীও।

কিন্তু ডার্ক জ়ঁরের ছবিতে যদি অন্ধকারই নিকষ না হয়, তা হলে সেই উত্তেজনাও বোধ হয় না। সেই ফাঁকটুকু রয়ে গিয়েছে এই ছবিতে। চিত্রনাট্যের বাঁধুনিতে যদি পরিচালক আর একটু জোর দিতেন, তা হলে হয়তো ছবিটি আরও উপভোগ্য হত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন