একদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘জগ্গা জাসুস’-এর ট্রেলরে আলাদা করে নজর কেড়েছেন তিনি। অন্য দিকে ফের ফিরছেন ছোটপর্দায়। সৌজন্যে ‘অপুর সংসার’। তিনি শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। কখনও অনুরাগের সেটে রণবীর-ক্যাটরিনা, কখনও বা ননফিকশনের ফর্ম্যাট, গল্পের ঝাঁপি খুললেন ‘অপু’।
মেয়ে তো রয়েইছে। এখন তো আপনি আবার এক ছেলেরও বাবা?
কে রণবীর?
‘জগ্গা জাসুস’-এর ট্রেলার তো সে ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
রণবীর কপূরের বাবা তো হতে পারিনি (বাস্তবে)। সে দুঃখ তো চিরকাল রয়ে গিয়েছে (হাসি)।
কেমন লাগল রণবীরের সঙ্গে কাজ করে?
খুব ভাল, ভদ্র। ভাল ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলে যা হয় আর কি।
আর ক্যাটরিনা?
ক্যাটরিনা ভীষণ সুইট। তবে ইন্ট্রোভার্ট। রণবীর হয়তো সেটে দুম করে একটা ইয়ার্কি করে দেবে। কিন্তু ক্যাটরিনা নিজের মধ্যেই থাকে।
অনুরাগ বসুর ক্যাপ্টেন্সিটা কেমন?
সত্যি বলতে, আমরা কেউ কিন্তু এখনও ছবিটা ধরতেই পারছি না। ট্রেলারটা কিছুই নয়। একটা লোকের ভিশন যে এই লেভেলের হতে পারে তা না দেখলে বোঝা মুশকিল। সবটা ওর মাথাতে আছে। আমি এমন করে কখনও আগে কাজ করিনি।
অসুবিধে হয়নি?
প্রথম প্রথম অসুবিধে হয়েছে তো। কিন্তু পরে বুঝেছি। একটা ভরসার জায়গা তৈরি হয়েছে দু’পক্ষের। আমরা মানে অভিনেতারা জানি ও ঝোলাবে না। ও জানে আমরাও ঝোলাবো না। রণবীরও অনুরাগকে নিয়ে প্রচুর গল্প শেয়ার করেছে।
বলুন না আমাদেরও।
রণবীর নিজে গল্প করেছে, কী ভাবে বরফির শুটিং হয়েছে ও জানত না। জাস্ট শটটা বুঝিয়ে দিত অনুরাগ। কোনও স্ক্রিপ্ট থাকত না। সে বারও পুরোটাই ছিল অনুরাগের মাথায়। রণবীর–প্রিয়ঙ্কা বরফি রিলিজের আগে একবার দেখতে চেয়েছিল। দেখার পর মনে হয়েছিল, ঠিকই আছে। বলেওছিল ওরা, ‘লাগতা হ্যায় তো আচ্ছা ফিল্ম হি বানি হুই হ্যায়।’
‘জগ্গা জাসুস’ও কি রিলিজের আগে দেখার পর বুঝবেন, আদৌ কী কী হল?
একদম তাই। আমি তো দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি। তবে মজার কথা কি জানেন, এখনও একটু শুটিং বাকি। রিলিজ ডেট তো চলে এল প্রায়!
এত ব্যস্ততার মধ্যেও তো ফের টেলিভিশনে ফিরছেন।
হ্যাঁ। নন ফিকশন। আগামী ২৬ জানুয়ারি থেকে টেলিকাস্ট। সপ্তাহে তিন দিন। সাড়ে ন’টা থেকে। দেড় ঘণ্টার স্লট। তবে আলাদা করে ফেরার প্রশ্ন নেই। ওটা তো আমারই জায়গা।
শো-এর নাম ‘অপুর সংসার’। আপনি যে মধ্যমণি বোঝা যাচ্ছে। তা কী কী হবে সেখানে?
তাও রাজি হলেন কেন?
অনেকগুলো কারণ রয়েছে। দেখুন এটা মেগা নয়। মেগা করার মতো সময় নেই আর। এখানে মাসে পাঁচ দিন দিলেই চলবে। আর তাছাড়া এই চ্যানেলের ননফিকশন খুবই হিট। নামটাও ‘অপুর সংসার’। আমিও অপু (হাসি)। আর একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে।
কী সেটা?
আমার ছবি টেলিভিশনে দেখানো হলে কিছু ফোন পাই। তাঁরা বলেন, এত দিন বাদে টিভিতে আপনাকে দেখে ভাল লাগল। এখন আর হলে যাওয়া সম্ভব হয় না। মা, মাসিদেরও বয়স হয়ে গিয়েছে। আসলে আমি টেলিভিশন দিয়ে যাঁদের কাছে জনপ্রিয় হয়েছি তাঁরা তো আমাকে মিস করেন। আমিও মিস করি তাঁদের। আর এখন টিকিটের যা দাম! আগে তো দু’টাকায় চিপসের প্যাকেট পাওয়া যেত। এখন তো শুধু সিনেমা দেখা নয়, একটা টোটাল প্যাকেজ।
টেলিভিশন নাকি ফিল্ম, কোনটা বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছে দেয়?
অবশ্যই টেলিভিশন। অনেক বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছনো যায়। এটা আমি বলছি না। আমার গুরু জোছন দস্তিদার বলে গিয়েছেন অনেক দিন আগে। অভিনেতা হিসেবে কী কাজ আমার? যত বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছনো যায়, সেটাই তো। আমিও আসলে মিস করছিলাম জায়গাটা।
টেলিভিশন মানেই তো এখন টিআরপির অঙ্ক। কী ভাবে সামলাবেন?
ওটা আমার ভাবার কথাই নয়। আমি বুঝতেই চাই না। টিআরপি না পেলে বন্ধ হয়ে যাবে। আমি আমার কাজটাই মন দিয়ে করব। আমি তো একসঙ্গে সকলকে তুষ্ট করতে পারব না। সেটা সম্ভবও নয়।