Kunal Kamra Controversy

‘গণতান্ত্রিক উপায়ে খুন’ কুণাল! রক্ষাকবচে থাকা শিল্পী কি ক্ষোভ উগরে দিলেন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে?

কুণাল যে ছবিটি ভাগ করেছেন সেখানে লেখা রয়েছে, ‘কী ভাবে একজন শিল্পীকে হত্যা করবেন: ধাপে ধাপে শিখে নিন’।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৩৮
Share:

মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে রসিকতা করে আইনি ঝামেলায় জড়িয়েছেন কৌতুকশিল্পী কুণাল কামরা। ছবি: সংগৃহীত।

রসিকতার মোড়কে সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বিশ্লেষণ করেন তিনি। আর সে কারণেই চক্ষুশূল শাসক নেতাদের। গত কয়েক বছরে কৌতুকশিল্পী হিসাবে যত বেশি রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি করেছেন, ততই পেয়েছেন জনপ্রিয়তা। সর্বশেষ সংযোজন মহারাষ্ট্রের বর্তমান উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দেকে ‘গদ্দার’ বলে সম্বোধন।

Advertisement

একের পর এক পুলিশি অভিযোগ দায়ের হয়েছে কুণালের বিরুদ্ধে। মুম্বই পুলিশ সমন জারি করেছে। কিন্তু থানায় হাজিরা দেননি কুণাল। সোমবার তাই তাঁর মুম্বইয়ের বাড়িতে হানা দিয়েছিল পুলিশ। এরই মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে সমাজমাধ্যমে একটি ছবি ভাগ করে নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন কৌতুকশিল্পী।

কুণাল যে ছবিটি ভাগ করেছেন সেখানে লেখা রয়েছে, ‘কী ভাবে একজন শিল্পীকে হত্যা করবেন: ধাপে ধাপে শিখে নিন’। এর পর সেখানে লেখা রয়েছে মোট পাঁচটি ধাপের কথা। সর্বত্রই ছড়িয়ে রয়েছে ‘আক্রোশ’ শব্দটি। যে আক্রোশের ফলে শিল্পীর বিভিন্ন সংস্থার থেকে অর্থ রোজগারের পথ বন্ধ হবে। পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ হবে। কোথাও শিল্প প্রদর্শন করতে দেওয়া হবে না। খুব ছোট ছোট দরজাও মুখের উপর বন্ধ হয়ে যাবে। একেবারে শেষ ধাপে দর্শক-শ্রোতাকে সমন পাঠানো হবে, আর শিল্প প্রদর্শনকে অপরাধ দৃশ্যে পরিণত করা হবে।

Advertisement

মঙ্গলবার দুুুপুরে এই বিশেষ পোস্ট করেছেন কুণাল কামরা। ছবি: সমাজমাধ্যম

কুণালের ভাগ করা ছবির একেবারে নীচে লেখা রয়েছে শেষ পর্যন্ত শিল্পী কী করবেন। দু’টিই পথ খোলা থাকবে তাঁর জন্য— অন্তরাত্মা বিক্রি করে টাকার গোলাম হয়ে থাকতে হবে। অথবা, নীরবে ক্ষয়ে যেতে হবে। একেবারে শেষ লেখা রয়েছে, এটা কোনও সাধারণ খেলা নয়। বরং এটি রাজনৈতিক অস্ত্র, কণ্ঠরোধের যন্ত্র।

বিশেষ এই ছবিটি সমাজমাধ্যমে ভাগ করে কুণাল নিজে লিখেছেন, “কী ভাবে একজন শিল্পীকে গণতান্ত্রিক উপায়ে হত্যা করবেন।’’

গত ২৪ মার্চ শিবসেনা বিধায়ক মুরজি পটেলের অভিযোগের ভিত্তিতে কুণালের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। গত শনিবার আরও তিনটি অভিযোগ কুণালের বিরুদ্ধে জমা পড়েছে। অভিযোগকারীদের মধ্যে রয়েছেন জলগাঁও শহরের মেয়র, নাসিকের এক ব্যবসায়ী এবং এক হোটেলমালিক। ইতিমধ্যে কুণালকে দু’বার সমন পাঠিয়েছে পুলিশ। কিন্তু তিনি হাজিরা এড়িয়েছেন। মুম্বই পুলিশের কাছে সময় চেয়েছিলেন কুণাল। পুলিশ তাঁর আবেদন নাকচ করে দিয়ে জানায়, ৩১ মার্চের মধ্যে খার থানায় তাঁকে হাজির হতে হবে। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও সোমবার তিনি হাজিরা দেননি। তার পরই মুম্বই পুলিশের আধিকারিকেরা কুণালের বাড়ি যান। তাঁকে পাওয়া যায়নি।

সোমবার রাতেই এই ছবি ভাগ করে নেন কুণাল। ছবি: সমাজমাধ্যম।

এ দিকে কুণাল রক্ষাকবচ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। মাদ্রাজ হাই কোর্টে তাঁর আইনজীবী জানান, থানায় হাজিরা দিলে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শিল্পী। তাই তাঁর রক্ষাকবচ প্রয়োজন। আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন কুণাল। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে। শর্তসাপেক্ষে তাঁকে রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে আগামী ৭ এপ্রিল পর্যন্ত।

সোমবার রাতে কুণাল সমাজমাধ্যমে নিজের একটি ছবি পোস্ট করেন। দেখা যায়, বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে তিনি, পিছনে অস্তগামী সূর্য। কুণাল লেখেন, “যেখানে গত ১০ বছর বাস করিনি, সে ঠিকানায় পৌঁছোনো আসলে সময় এবং জনসম্পদের অপচয়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement