সাম্প্রতিক সিমকার্ডের একটিও ছিল না সুশান্তের নামে, ‘পুজো’ খাতে হয়েছে আর্থিক লেনদেনও

পাশাপাশি আজ বিহার পুলিশ সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, গত বছর জুলাই মাস থেকে অগস্ট পর্যন্ত পূজার সামগ্রী এবং এবং পুরোহিতের দক্ষিণার জন্য সুশান্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে বেশ কয়েকবার আর্থিক লেনদেন করা হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২০ ২০:০৬
Share:

সুশান্ত সিংহ রাজপুত

৩৪ বছরের জীবনে প্রায় পঞ্চাশটির মতো সিমকার্ড ব্যবহার করেছিলেন সুশান্ত। মারা যাওয়ার আগে যে সমস্ত নম্বর সুশান্ত ব্যবহার করতেন, তার একটি সিমকার্ডও অভিনেতার নামে ছিল না, রবিবার এমনটাই জানাল বিহার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সুশান্তের সাম্প্রতিক সিমগুলির মধ্যে একটি ছিল তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু সিদ্ধার্থ পিঠানির নামে। সিদ্ধার্থ এবং সুশান্ত একইসঙ্গে বান্দ্রার ফ্ল্যাটে থাকতেন। সুশান্তের অস্বাভাবিক মৃত্যুর দিন তিনি ওই ফ্ল্যাটেই ছিলেন।

পাশাপাশি আজ বিহার পুলিশ সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, গত বছর জুলাই মাস থেকে অগস্ট পর্যন্ত পূজার সামগ্রী এবং এবং পুরোহিতের দক্ষিণার জন্য সুশান্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে বেশ কয়েকবার আর্থিক লেনদেন করা হয়েছে। সেই টাকার পরিমাণ কখনও ৫৫ হাজার আবার কখনও বা ষাট হাজার টাকা। সুশান্তের বাবা এফআইআরে রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সুশান্তের ১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনেছিলেন। পূজার সামগ্রী ছাড়া আর কোন খাতে টাকা খরচ করেছিলেন সুশান্ত তা খতিয়ে দেখছে বিহার পুলিশ। যদিও পুজো খাতে টাকা খরচের কথা প্রকাশ্যে আসতেই সুশান্তের পরিবারের বক্তব্য ‘কালাজাদু’-র জন্যই ওই টাকা খরচ করেছিলেন রিয়া। দিন কয়েক আগে সুশান্তের দিদি মিতু সিংহ পুলিশকে জানান, ভাইয়ের উপর ব্ল্যাক ম্যাজিকের প্রয়োগ করতেন রিয়া। এ দিকে শনিবার এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুশান্তের পারিবারিক বন্ধু স্মিতা পারিখ ও একই কথা বলেন। তিনি আরও যোগ করেন, সুশান্তের মৃত্যুর মাত্র কয়েক দিন আগেই তাঁর প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ান আত্মহত্যা করলে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন সুশান্ত। তিনি নাকি বারবার দিদি মিতুকে বলতে শুরু করেন, “আর ওরা আমাকে ছেড়ে দেবে না।” যদিও এই ‘ওরা’ যে আদতে কারা, তা নাকি দিদিকে জানাননি সুশান্ত, এমনটাই দাবি স্মিতার। তবে দিশার মা রবিবার এক সাক্ষাৎকারে জানান, দিশা এবং সুশান্তের মৃত্যুর কোনও যোগসূত্র নেই বলেই তিনি মনে করেন। তিনি আরও জানান, সুশান্তের সঙ্গে মাত্র একবারই দেখা হয়েছিল দিশার। তাঁর প্রশ্ন, মাত্র এক বার সাক্ষাৎ হওয়া দুই ব্যক্তির মৃত্যুতে কী যোগ থাকতে পারে? যদিও বিহার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে দিশার পরিবারেরও বয়ান রেকর্ড করবেন তাঁরা।

Advertisement

দিন কয়েক আগে সুশান্তের দিদি মিতু সিংহ পুলিশকে জানান, ভাইয়ের উপর ব্ল্যাক ম্যাজিকের প্রয়োগ করতেন রিয়া

সুশান্ত কাণ্ডে এ পর্যন্ত মোট সাত জনের বয়ান রেকর্ড করেছে বিহার পুলিশ। এদের মধ্যে রয়েছেন সুশান্তের প্রাক্তন প্রেমিকা অঙ্কিতা লোখণ্ডে, সুশান্তের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মহেশ শেট্টি,পরিচালক রুমি জাফরি, যার সঙ্গে সুশান্ত এবং রিয়ার একসঙ্গে একটি ছবিতে অভিনয় করার কথা ছিল এবং সুশান্তের পরিচারক ও রাঁধুনিকে। আর রিয়া চক্রবর্তী? যাকে ঘিরে এত শোরগোল? রিয়ার ব্যাপারে বিহার পুলিশের ডিজি গুপ্তেশ্বর পাণ্ডে জানান, “এখনও পর্যন্ত রিয়া চক্রবর্তীকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আমরা চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছি।’’ দেশজুড়ে দাবি উঠলেও সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তভার কি দেওয়া হবে সিবিআইকে? মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এখনই সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন নেই বললেও আজ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জানান, সুশান্তের বাবা যদি সিবিআই তদন্ত চান তবে বিহার সরকার তার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে সুপারিশ করতে পারে।

Advertisement


এখনও পর্যন্ত সরাসরি সিবিআই তদন্তের আর্জি না জানালেও গতকাল সুশান্তের দিদি শ্বেতা সিংহ নরেন্দ্র মোদীকে এক খোলা চিঠি লেখেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে আবেদন জানান, তিনি যেন হস্তক্ষেপ করে সুশান্তকে ন্যায়বিচার পেতে সাহায্য করেন। ভারতীয় বিচারব্যবস্থার প্রতি যে তাঁর অগাধ আস্থা রয়েছে, সে কথাও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ওই চিঠিতে জানান শ্বেতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন