দ্য গ্রেটেস্ট শোম্যান-এর একটি দৃশ্য।
দ্য গ্রেটেস্ট শোম্যান
পরিচালনা: মাইকেল গ্রেসি
অভিনয়: হিউ জ্যাকম্যান,
জ্যাক এফ্রন
৬.৫/১০
মনে করুন, আপনি এক চোখ ধাঁধানো ম্যাজিক শোয়ের দর্শক। তা এতটাই চোখ ঝলসানো যে, কিছুক্ষণের জন্য ম্যাজিক ভুলে আপনি বিভোর মঞ্চসজ্জায়, আলোর রোশনাই আর সুরের মূর্ছনায়। সেই ঘোর কাটিয়ে ম্যাজিক ভাল কি মন্দ, ফাঁকিবাজি না বিজ্ঞান— এ সব চুলচেরা বিশ্লেষণের আগেই শো শেষ!
১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের তেমনই একটা ছবি ‘দ্য গ্রেটেস্ট শোম্যান’। উনিশ শতকের আমেরিকায় এক দর্জির ছেলের জিরো থেকে হিরো হয়ে ওঠার গল্প। সে যুগের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী, তথা সার্কাস-শিল্পী পি টি বারনাম হয়ে ওঠার গল্প। ছিমছাম, মিউজিক্যাল কমেডি এই ছবিতে বারনামের জীবনের উত্থান-পতন-পুনরুত্থানের গল্পটাই রূপকথার মতো দেখানো হয়েছে। ঠিক-বেঠিকের কাঁচিতে অযথা ব্যক্তিজীবনকে কাটাছেঁড়ার প্রচেষ্টা নেই। অথচ বারনামের জীবনে আসা প্রেম থেকে বিতর্ক কোনওটাই এড়িয়ে যাননি পরিচালক মাইকেল গ্রেসি। এ ছবি স্বপ্ন দেখার কথা বলে, স্ত্রীর প্রতি আনুগত্য থাকা আর পারিবারিক বন্ধনে আস্থা রাখার গল্প শোনায়। গ্রেসির প্রথম ছবি হিসেবে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শোম্যান’ দর্শকের বাহবা পাবেই।
গত বছরের অস্কারজয়ী মিউজিক্যাল কমেডি ছবি ‘লা লা ল্যান্ড’ খ্যাত জাস্টিন পল আর বেঞ্জ পাসেক এ ছবিতেও গানের জাদু ছড়িয়েছেন। তবে এ ছবির অলংকার ভাণ্ডারে হিরের নাকছাবি অবশ্যই বারনামের চরিত্রাভিনেতা হিউ জ্যাকম্যান।
তবে ছবির জমকে মন মজলেও কয়েকটা প্রশ্ন রয়েই যায়। দর্জির ছেলের হাত ধরে ধনীর মেয়ের বেরিয়ে আসার গল্প, সার্কাসে ট্রাপিজের খেলা দেখানো কালো চামড়ার মেয়ে অ্যানের সঙ্গে সমাজের অভিজাত বংশের সন্তান কার্লাইলের প্রেম, শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় সমাজে যারা ব্রাত্য সেই মানুষগুলিকে সার্কাসের পরদায় নায়ক করে তোলার কাহিনি— এ সবের মধ্য দিয়ে ছকভাঙা উনিশ শতকের যে গল্প শোনানো যেত, তা শেষ পর্যন্ত আর হয়ে উঠল না! ‘দিস ইজ মি’র মতো গানে দর্শকের রক্ত গরম হলেও সাকার্সের চরিত্রগুলি লোক হাসাবার জন্যই রয়ে গেল। উত্তরণ ঘটল না। গুণমান বিচারের আগে শেষ হওয়া সেই ম্যাজিক শোয়ের মতোই।