IndiGo Flight Operations Hit

ইন্ডিগো বিভ্রাটের জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের মূল্য চোকাতে হবে! হুঁশিয়ারি বিমানমন্ত্রীর, সুপ্রিম কোর্টে নালিশ যাত্রীদুর্ভোগ নিয়ে

কী কারণে এই বিভ্রাট, তা অনুসন্ধান করতে ইতিমধ্যেই উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে দেশের উড়ান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ। অন্য দিকে কেন্দ্রের অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী কে রামমোহন নায়ডু রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছেন, যাঁরা এই বিভ্রাটের জন্য দায়ী, তাঁদের মূল্য চোকাতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:০২
Share:

কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী কে রামমোহন নায়ডু। —ফাইল চিত্র।

সঙ্কট কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে ইন্ডিগোর বিমান পরিষেবা। তবে শনিবারও ওই বেসরকারি বিমানসংস্থার বহু বিমান বাতিল করা হয়েছে। শনিবার দিল্লির বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, ইন্ডিগোর বিমান পরিষেবা ধীরে ধীরে সচল হচ্ছে এবং স্বাভাবিক হওয়ার দিকে এগোচ্ছে। বিমান যাত্রীদের অসুবিধা লাঘব করতে দেশ জুড়ে ৩৭টি ট্রেনে অতিরিক্ত ১১৬টি কামরা যুক্ত করেছে রেল।

Advertisement

কী কারণে এই বিভ্রাট, তা অনুসন্ধান করতে ইতিমধ্যেই উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে দেশের উড়ান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ। অন্য দিকে কেন্দ্রের অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী কে রামমোহন নায়ডু রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছেন, যাঁরা এই বিভ্রাটের জন্য দায়ী, তাঁদের মূল্য চোকাতে হবে। ‘এনডিটিভি’-কে তিনি বলেন, “আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি। কোথায় গলদ ছিল এবং তার জন্য কে দায়ী ছিল, ওই কমিটি তা খতিয়ে দেখবে। আমরা ওই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে চলেছি। তাই যাঁরা এটার (ইন্ডিগো বিভ্রাট) জন্য দায়ী, তাঁদের এর মূল্য চোকাতে হবে।”

বিমান পরিষেবা এবং যাত্রীসংখ্যার নিরিখে ইন্ডিগো দেশের বৃহত্তম বিমানসংস্থা। সেই সংস্থার পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ায় বিপাকে পড়েছিলেন লক্ষ লক্ষ যাত্রী। শুক্রবার সারা দিনে ১০০০-এরও বেশি, বৃহস্পতিবার মোট ৫৫০টি উড়ান বাতিল করেছিল ইন্ডিগো। বৃহস্পতিবার দিনভর এবং শুক্রবার সকালে দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে সার্বিক অব্যবস্থাই লক্ষ করা গিয়েছে। ইন্ডিগোর যাত্রীদের অভিযোগ, যথাযথ খাবার এবং আশ্রয় ছাড়াই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন তাঁরা। কিন্তু ঠিক কোন সময়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যের উড়ান ছাড়বে, তা বিমানসংস্থার তরফে জানানো হচ্ছে না। এই যাত্রীদুর্ভোগের বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। দেশের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তের কাছে জমা পড়া আর্জিতে বলা হয়েছে, আদালত এই বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করুক। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক এবং ডিজিসিএ-কে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিক। বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত শুনানির আর্জিও জানানো হয়েছে।

Advertisement

ডিজিসিএ প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছে, ইন্ডিগোর ‘পরিকল্পনাজনিত গাফিলতি এবং সম্ভাব্য পরিস্থিতি নিয়ে ভুল মূল্যায়ন’-এর কারণেই এই সঙ্কট তৈরি হয়। শুক্রবার ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবারস জানান, আগামী ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিষেবা স্বাভাবিক হবে। যাত্রীদের কাছে সংস্থার তরফে আরও এক বার ক্ষমা চান তিনি।

ইন্ডিগোর বিমান পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে কেন্দ্রের একটি বিধি। ‘ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশনস’ নামের ওই বিধিতে বলা হয়েছিল, প্রতি সপ্তাহে পাইলট এবং বিমানকর্মীদের বিশ্রামের জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় দিতে হবে। প্রতি সপ্তাহে মাত্র ২টি বিমান রাতে অবতরণ করাতে পারবেন এক জন পাইলট (আগে সংখ্যাটা ছিল ৬)। তা ছাড়া ওই বিধিতে বলা হয়, পাইলট এবং বিমানকর্মীদের পর পর দু’দিন নাইট ডিউটি দেওয়া যাবে সপ্তাহে এক বারই। ২০২৪ সালের জুনেই এই বিধি কার্যকর করার কথা ছিল। কিন্তু বিমানসংস্থাগুলির অনুরোধে তা বার বার পিছিয়ে যায়। সম্প্রতি নতুন বিধি কার্যকর করার জন্য ডিজিসিএ-কে নির্দেশ দেয় দিল্লি হাই কোর্ট। জুন এবং নভেম্বরে দুই দফায় ধাপে ধাপে নির্দেশিকায় থাকা নিয়মাবলি কার্যকর করার পথে হাঁটে ডিজিসিএ।

ইন্ডিগো তুলনায় সস্তায় বিমান পরিষেবা দিয়ে থাকে যাত্রীদের। পরিষেবা দেওয়ার সংখ্যা বিচার করলে এয়ার ইন্ডিয়ার তুলনায় অনেক এগিয়ে রয়েছে ইন্ডিগো। দেশের ৯০টি এবং বিদেশের ৪৫টি বিমানবন্দরে পরিষেবা দিয়ে থাকে তারা। ইন্ডিগোর অনেক বিমানই রাতে অবতরণ করে। তাই নয়া বিধিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে এই বিমানসংস্থাই। নয়া বিধি মেনে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে যত সংখ্যক কর্মী এবং পাইলট প্রয়োজন, বর্তমানে তা ইন্ডিগোর নেই। পাইলট এবং কর্মী অপ্রতুলতার কথা স্বীকার করে ইতিমধ্যেই যাত্রীদের কাছে একাধিক বার ক্ষমাও চেয়েছে ইন্ডিগো।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement