Ditipriya Roy

আক্রান্তদের পাশে আছেন কোভিডজয়ীরা

রাহুল মজুমদারের অভিজ্ঞতা আবার অন্যরকম। ‘ভাগ্যলক্ষ্মী’ ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রাভিনেতা ছিলেন রাহুল।

Advertisement

 ঈপ্সিতা বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২১ ০৮:৪০
Share:

কোভিড থেকে সেরে উঠেছেন ছোট পর্দার এই অভিনেতারা। তার পরেই উদ্যোগী হয়েছেন করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে। অসুস্থ অবস্থায় তাঁরা উপলব্ধি করেছেন আক্রান্তদের কী কী সমস্যা হতে পারে। তাই কেউ বিনামূল্যে অক্সিজেন পৌঁছে দিচ্ছেন, কেউ খুলেছেন কমিউনিটি কিচেন, কেউ আবার হাসপাতালের বেডের খোঁজ দিয়ে পাশে দাঁড়াচ্ছেন।

Advertisement

গত বছর কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন নীল ভট্টাচার্য। তাই এ বার তাঁর এলাকার দুঃস্থ, সংক্রমিত পরিবারগুলিতে রান্না করা খাবার পৌঁছে দিতে কমিউনিটি কিচেন খুলেছেন ‘কৃষ্ণকলি’র নিখিল। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রী তৃণা সাহা ও আরও পাঁচজন বন্ধু। নীলের কথায়, ‘‘অসুস্থ রোগীদের খাবারদাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার অসুবিধে বুঝেই এই কাজ শুরু করি। খাবার পৌঁছে দেওয়ার সঙ্গে পুষ্টির দিকটাও নজরে রেখেছি।’’ একই উদ্দেশ্য নিয়ে মঙ্গলবার থেকে কাজ শুরু করে দিলেন ভিভান ঘোষ। গত বছর কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন ‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিকের এই অভিনেতা। ভিভানের একটি রেস্তরাঁ রয়েছে, লকডাউনের জেরে তা বন্ধ। সেখানেই এ বার রান্না হবে এবং খাবার পৌঁছে যাবে বেলেঘাটা ও আশপাশের আক্রান্ত পরিবারের কাছে। ভিভান বললেন, ‘‘গত বছর দুঃস্থ কিছু পরিবারকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়েছিলাম। এ বার বিনামূল্যে কোভিড রোগীদের কাছে পুষ্টিকর খাবার পৌঁছে দিতে চাই।’’

অতিমারি আবহে অক্সিজেন সরবরাহ, বেডের খবর রাখছেন দিতিপ্রিয়া রায়ও। বললেন, ‘‘কোভিডে আক্রান্ত হয়ে বুঝেছি, এ রোগে মানসিক লড়াইও কতটা জরুরি। মানসিক ও আর্থিক সাপোর্ট দিতে চাই রোগীদের। আগেও পাশে থেকেছি। এখন লকডাউনের জন্য কাজে খানিক ব্যাঘাত ঘটেছে। বিনামূল্যে অক্সিজেন ক্যান সরবরাহ করার ইচ্ছে রয়েছে।’’ এ রোগের সঙ্গে লড়াই করার জন্য চাই অসীম মনের জোর, এমনটাই মনে করেন অভিনেত্রী সৌমিলি বিশ্বাস। মানসিক অবসাদ রোগীদের নিত্যসঙ্গী। আড্ডা দিয়ে মন ভাল করতে চাইলে, পাশে পাবেন সৌমিলিকে। ইতিমধ্যে তিনি আত্মীয় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার সেশন শুরু করে দিয়েছেন। বললেন, ‘‘ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে জানি, করোনা নিয়ে মানুষের আতঙ্ক কতটা। আক্রান্ত হলে অধিকাংশ রোগীই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কাউকে পাশে পেলে তাঁদের মনোবল বাড়বে।’’ এ ভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন জরুরি ফোন নম্বর ও তথ্য শেয়ার করে আক্রান্তদের পাশে থাকতে চান শন বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মাস কয়েক আগেই কোভিডমুক্ত হয়েছেন তিনি। ‘‘কোভিড রোগীদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখলেও তাঁদের পাশে থাকুন,’’ বার্তা শনের।

Advertisement

রাহুল মজুমদারের অভিজ্ঞতা আবার অন্যরকম। ‘ভাগ্যলক্ষ্মী’ ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রাভিনেতা ছিলেন রাহুল। তাঁর স্ত্রী প্রীতি বিশ্বাস ছিলেন ‘সৌদামিনীর সংসার’-এ। গত বছর করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন দু’জনেই। তখন দেখেছেন, সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে করোনা রোগীদের ধারেকাছে যেতে চান না কেউ। রাহুল বললেন, ‘‘অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়ে কেউ না এলে আমরা পাশে আছি। সে দিনই এক আক্রান্ত বৃদ্ধকে কোলে করে অ্যাম্বুল্যান্সে তুললাম।’’ পাড়ার ক্লাবের উদ্যোগে আপৎকালীন ওষুধ, অক্সিজেন সিলিন্ডার, কিট... ইত্যাদির ব্যবস্থা করেছেন তিনি। আবার নিজের আবাসনে সেফ হোম গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছেন দ্বৈপায়ন দাস। ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’ ধারাবাহিকের অভিনেতা কোভিডে আক্রান্ত হয়ে বুঝেছিলেন সেফ হোমের প্রয়োজনীয়তা। তাঁর স্ত্রী পায়েল দে এবং প্রতিবেশীদের মিলিত প্রচেষ্টায় সেফ হোম গড়ে উঠেছে তাঁদের আবাসনে।

কিছু দিন আগেই কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন রণিতা দাস। বললেন, ‘‘আমি ,বাবা-মা, দিদা পজ়িটিভ ছিলাম। বাবা ও দিদার অক্সিজেন লেভেল খুবই কমে গিয়েছিল। তাই আমি আর সৌপ্তিক (রণিতার প্রেমিক) একটি অক্সিজেন পার্লার খোলার ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছি। আমার রিপোর্ট নেগেটিভ এলেই কাজ শুরু করব।’’

এঁরা ছাড়াও অভিনেতা ভরত কল, তাঁর স্ত্রী জয়শ্রী মুখোপাধ্যায়, সোমা চক্রবর্তী, শ্রুতি দাস-সহ আরও অনেক কোভিডজয়ীই এখন মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন নানা ভাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন