Veteran actor Tuhin Banerjee in financial trouble

‘তাপস গিয়েছে, এ বার আমার পালা’! কাজ এবং অর্থের অভাবে চিকিৎসা বন্ধ দেবশ্রীর ‘নায়ক’ তুহিনের

১১ বছর ধরে কেউ ডাকে না তাঁকে। অথচ তিনি তরুণ মজুমদারের পাঁচটি ছবির গুরুত্বপূর্ণ অভিনেতা! কেন তাঁকে সকলে ভুলে গেলেন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:৪২
Share:

অর্থাভাবে চিকিৎসা বন্ধ তুহিন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ছবি: সংগৃহীত।

বিনোদন দুনিয়ার আরও এক নির্মম কাহিনি। তরুণ মজুমদারের প্রিয় অভিনেতা তুহিন বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘পথভোলা’ ছবিতে প্রথম অভিনয়। গল্পের পাঁচ বন্ধুর এক বন্ধু তিনি। দেবশ্রী রায়ের বিপরীতে হিন্দি ধারাবাহিকে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ৬৫ বছরের তুহিন গত ১১ বছর ধরে কর্মহীন।

Advertisement

এ দিকে শরীর ঝাঁঝরা নানা রোগে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চিনির মাত্রার আধিক্য আছেই। রয়েছে হৃদ্‌রোগ-সহ আরও অনেক কিছু। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাঁকে। রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ায় তাঁর দুই পায়ে গ্যাংগ্রিন। হাঁটু থেকে দুটো পা-ই বাদ চলে যেত। চিকিৎসকেরা সদ্য অস্ত্রোপচার করে বাঁচিয়েছেন তাঁর দুটো পা। তুহিনবাবু এখন বর্ধমানের বাড়িতে। তাঁর স্ত্রী ও এক ছেলের কাছে। একমাত্র সন্তান ছোটখাটো ব্যবসা করেন। তাতে কোনওমতে দিন কাটে তাঁদের।

এক ফ্রেমে তুহিন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

এত রকমের অসুস্থতা, অস্ত্রোপচার। চিকিৎসা খাতে তার মানে প্রচুর ব্যয়। কী করে সামলাচ্ছেন সব?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। তুহিনবাবুর আক্ষেপ, “প্রত্যেক মাসে ওষুধের খরচ ২০ হাজার টাকা। আমার কোনও আয় নেই। গত দু’বছর ধরে তাই ওষুধ খেতে পারছি না। চিকিৎসকেরা বকাবকি করছেন। কিন্তু কী করব!” নিজেকে সামলে নিয়ে যোগ করেন, “১৯৮৬-র কথা খুব মনে পড়ছে। ‘পথভোলা’তে আমরা পাঁচ বন্ধু প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, তাপস পাল, অভিষেক চট্টোপাধ্যায়, শক্তি ঠাকুর আর আমি। এঁদের মধ্যে তাপস, অভিষেক, শক্তিদা চিরবিদায় নিয়েছেন। বুম্বা ১০০ বছর বাঁচবে। এ বার হয়তো আমার পালা।”

ঝুলিতে ১৩০টি ছবি। ধারাবাহিকের সংখ্যাও কম নয়। তরুণ মজুমদারের পাঁচটি ছবির অভিনেতা তিনি। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস নিয়ে তৈরি হিন্দি ধারাবাহিক ‘বানজারা’য় তুহিনবাবুর নায়িকা দেবশ্রী রায়। প্রসেনজিতের ‘কনকাঞ্জলি’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। শতাব্দী রায়, অশোক বিশ্বনাথন-সহ বিভিন্ন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁর সহ-অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের মতো তারকা অভিনেতা। তার পরেও কাজ পাচ্ছেন না, কেন? “নিজেও জানি না, কেন আর কেউ ডাকেন না। আমার সময়ে বিনোদন দুনিয়ায় পরিচালকেরাই সব ছিলেন। তাঁরাই অভিনেতা বাছতেন। এখন সেই রীতি বদলে গিয়েছে। ইদানীং পরিচালকদের অন্যের কথা শুনে চলতে হয়।”

ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে তুহিনবাবুর হয়ে বিনোদন দুনিয়ার সহযোগিতা প্রার্থনা করেছেন। প্রবীণ অভিনেতা কি সাড়া পেয়েছেন তাতে?

তুহিনবাবুর কথায়, “ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় অনেক উপকার করেছেন। সাড়া পাচ্ছি অনেকের থেকে। তবে এখনও পর্যন্ত যা আর্থিক সহায়তা পেয়েছি তাতে আমার চিকিৎসার খরচ চলবে না।” তাই আগের মতো কাজের দুনিয়ায় ফিরতে চান। “দৌড়ঝাঁপ করতে পারব না। বসে বা অল্প হাঁটাচলা করে তো অভিনয় করতেই পারব! আমায় দয়া করে কাজের দুনিয়া ফিরিয়ে দিন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement