Superfood Vs Indian Food

ভারতের চেনা খাবার টেক্কা দিতে পারে অ্যাভোকাডো, কিনোয়াকেও, কোনটির বদলে, কী খাবেন?

স্বাস্থ্যসচেতন মানুষজনের রুচিতে ইদানীং বদল এসেছে। পরিচিত খাবারের বদলে তাঁরা বেছে নিচ্ছেন কিনোয়া, অ্যাভোকাডো, কালের মতো সুপারফুড। কিন্তু সত্যি কি ভারতীয় খাবারে এর সমতুল্য পুষ্টিগুণ নেই?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫ ১৭:৫৩
Share:

ভারতের চিরপরিচিত খাবারও টেক্কা দিতে পারে ‘সুপারফুড’ বলে চর্চিত অনেক খাবারকেই। অ্যাভোকাডো, কালে, কিনোয়ার বদলে কী খাবেন? ছবি: আনন্দবাজার ডট কম

ভাল থাকতে গেলে শুধু শরীরচর্চা নয়, দরকার সঠিক পুষ্টিও। স্বাস্থ্য ভাল রাখার নানা রকম কৌশলের সন্ধান এখন মেলে মুঠোফোনে ক্লিক করলেই। সমাজমাধ্যমে এ নিয়ে বিস্তর চর্চা।

Advertisement

এই সব দেখেশুনে অনেকেই স্বাস্থ্যসচেতন হয়ে উঠেছেন। এবং অনেকে সেই পথে পা বাড়িয়েছেন। কিনোয়ার মতো ‘সুপারফুড’-এর গুণাগুণ জেনে রুটি, ভাতের বদলে খাচ্ছেন কিনোয়া। পরিচিত ফলের বদলে বেছে নিচ্ছেন তুলনামূলক দামি ফল অ্যাভোকাডো। সব্জির জায়গায় স্থান পাচ্ছে কালে।

কিনোয়া, অ্যাভোকাডো, কালে— কোনওটিরই পুষ্টিগুণ কম নয়। প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ, স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের সমন্বয় মেলে এই সমস্ত খাবারে। তবে এ দেশে বহু দিন ধরে যে সব খাবার খাওয়ার চল, তাতে এই পুষ্টি মেলে না, এটা কিন্তু ভেবে নেওয়া ঠিক নয়। বরং করিনা কপূরের পুষ্টিবিদ রুজুতা বলছেন, ‘‘ যে খাবারের নাম শোনেননি বা উচ্চারণ করতেই কষ্ট দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সে সব রাখার দরকারই নেই। বরং চেনা-পরিচিত যে সব খাবার পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সেগুলি তৃপ্তি করে খেলেই ওজন বশে থাকবে, শরীর সুস্থ থাকবে।’’

Advertisement

কিনোয়ার বদলে খেতে পারেন কাউনের চাল

কিনােয়ার বদলে খেতে পারেন কাউনের চাল। ছবি: সংগৃহীত।

কিনোয়া নিয়ে এখন যথেষ্ট মাতামাতি। এটি একটি ফুলজাতীয় গাছের দানা। কিনোয়ায় রয়েছে গ্লুটেন ফ্রি হোল গ্রেন কার্বোহাইড্রেট। স্পষ্ট কথায় যাকে বলা যায় বন্ধু কার্বোহাইড্রেট। এতে যেমন কার্ব আছে, তেমনই প্রোটিনে ভরপুর। শস্য না হয়েও যেহেতু শস্যের মতোই কাজ করে, তাই অনেকেই একে সিউডো সিরিয়ালও বলে থাকেন। সাদা, লাল ও কালো— মূলত এই তিন ধরনের কিনোয়া পাওয়া যায়। সাদা কিনোয়া সহজপ্রাপ্য।

তবে কিনোয়াই যে খেতে হবে এমনটা নয়। বদলে ফক্সটেল মিলেট বা কাউনের চালও খাওয়া যেতে পারে। এতেও রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, বি ভিটামিন। কাউনের চালে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জ়িঙ্ক, আয়রন এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট আছে। এটিও গ্লুটেন ফ্রি। উপোসের দিনে কেউ কেউ কাউনের চালের খিচুড়ি বানিয়ে খান। তবে পুষ্টিগুণে এটি কিন্তু অনেক খাবারকেই টেক্কা দিতে পারে।

অ্যাভোকাডোর বদলে নারকেল

অ্যাভাকোডো শরীরের জন্য ভাল, কিন্তু নারকেলের পুষ্টিগুণও কম নয়। ছবি: সংগৃগহীত।

ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ ফলটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভাল। এ দেশে অ্যাভোকাডো এখন মিললেও অন্যান্য ফলের চেয়ে দাম অনেকটাই বেশি। পুষ্টিবিদ বলছেন, অন্যান্য ফলের চেয়ে এতে ক্যালোরির পরিমাণ একটু বেশি। তবে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে কম। এতে মেলে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, নানা রকম ভিটামিন যেমন বি, সি, বি৬ এবং বিভিন্ন খনিজ। তবে ভারতের চিরপরিচিত ফল নারকেলও কিন্তু পুষ্টিগুণে কম যায় না। টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে অ্যাভোকাডোকে। ১০০ গ্রাম নারকেলে ৩৫০ থেকে ৩৭০ ক্যালোরি মেলে। কার্বোহাইড্রেট থাকে ১৫ গ্রাম, ডায়েটরি ফাইবার মেলে ৯ গ্রাম, ফ্যাট ৩৩ গ্রাম, প্রোটিন ৩ গ্রাম। নারকেলে থাকে ম্যাঙ্গানিজ়, যা হাড় ভাল রাখতে সহায়তা করে। পাশাপাশি, নারকেলে থাকা অন্য একটি উপাদান হল সেলেনিয়াম। এটি এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা কোষে দূষিত পদার্থকে জমতে বাধা দেয়। এ ছাড়াও এতে পটাশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, কপার থাকে। নারকেলেও মেলে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। সুতরাং পুষ্টিগুণের বিচারে কোনও ফলই কারও চেয়ে কম যায় না।

কালের বদলে সজনেপাতা

কালের চেয়ে সজনেপাতা পুষ্টিগুণে মোটেই কম নয়। ছবি: সংগৃহীত।

আয়রন, ভিটামিন কে, ফোলিক অ্যাসিড, রাইবো ফ্ল্যাভিন, ভিটামিন সি-সহ নানা রকম উপাদান থাকে কালেতে। সবুজ এই সব্জিটির পুষ্টিগুণের জন্য এ দেশেও কেউ কেউ খাওয়া শুরু করেছেন। তবে কালের বদলে পাতে রাখতে পারেন সজনেপাতা। সজনে গাছের পাতা, ডাঁটা, ফুল— সবই উপাদেয়। প্রোটিন, ফাইবার, ক্যালশিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-১, বি-২, ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ভরপুর মাত্রায় রয়েছে পাতায়। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর সজনেপাতা কেবল রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে না, এর রয়েছে আরও অনেক গুণ। পুষ্টিগুণের হিসাব কষলে কালের মতো সব্জিকে টেক্কা দিতে পারে বাংলার চিরপরিচিত সজনেপাতাও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement