ছবি : সংগৃহীত।
ঘুম থেকে উঠে প্রথম কোন জিনিসটি খাচ্ছেন বা পান করছেন, তার প্রভাব স্বাস্থ্যের উপর পড়তে বাধ্য। তাই নানারকম ঔষধিগুণ সম্পন্ন খাবার বা পানীয় সকালে খালি পেটে খেতে বলা হয়। বহু বছর ধরে খালি পেটে লেবু আর মধু দেওয়া জল খাওয়ার কথা শুনে এসেছেন মানুষ। কিন্তু গত বেশ কয়েক বছরে এই সকালের খাওয়ার অভ্যাস নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়েছে। কেউ খেয়েছেন ঢেঁড়সের জল, কেউ লাউয়ের রস, কেউ দারচিনি বা মেথি ভেজানো জল আবার কেউ ঘি দেওয়া কফিও খেয়েছেন। হিং ভেজানো জল তেমনই এক উপকারী পানীয়। তবে এর উপকারিতা বাকি পানীয়ের থেকে একটু স্বতন্ত্র।
ভারতীয় রান্নাঘরে হিং একটি অত্যন্ত জরুরি মশলা। বিশেষ করে যে সমস্ত রান্না পেঁয়াজ-রসুন ছাড়া করা হয় তাতে হিং দেওয়া হয়। তাতে স্বাদের পাশাপাশি সুগন্ধও বাড়ে খাবারে। আর এই হিংয়ের ঔষধি গুণও রয়েছে। সকালে খালি পেটে হিং ভেজানো জল খেলে বিবিধ উপকার পাওয়া যায়।
কী কী উপকার?
১। পেটের জন্য ভাল
হজমের সমস্যা দূর করতে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য বা গাট হেল্থ ভাল রাখতে হিং অত্যন্ত কার্যকরী। আয়ুর্বেদেও হিংয়ের হজমকারক ক্ষমতার কথা বলা আছে। খালি পেটে হিং ভেজানো জল খেলে শরীরে নানা ধরনের হজমকারক এনজ়াইমের ক্ষরণ বাড়ে। যা খাবারকে ভেঙে সহজপাচ্য করে। ব্লোটিং বা পেট ফাঁপা এবং গ্যাসের সমস্যা থাকলেও হিং ভেজানো জল অত্যন্ত কার্যকরী হতে পারে। এ ছাড়া শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য যে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে বলা হয়, তার জন্যও কার্যকরী হিং।
২। প্রদাহ নাশক
পাকস্থলী থেকে অন্ত্রের বিভিন্ন অংশে প্রদাহের কারণে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া প্রদাহের জন্য শরীরে নানা ব্যথাবেদনা বা জ্বালার সমস্যাও হয়ে থাকে। হিং ভেজানো জল সেই সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
৩। ফুসফুস ভাল রাখে
ঋতুপরিবর্তনের প্রভাব পড়ে ফুসফুস এবং শ্বাসনালীতে। হাঁচি, কাঁশি, সর্দি লেগেই থাকে। খালি পেটে হিংয়ের জল খেলে তা ফুসফুস এবং শ্বাসনালীতে জমা মিউকাস পরিষ্কার করে দেয়। তাতে শ্বাস নিতে সুবিধা হয় ফুসফুস এবং শ্বাসনালী ভাল থাকে। ফলে সর্দি-কাশি, ঠান্ডা লাগা, জ্বর— ইত্যাদি সমস্যা হয় না। এমনকি, হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিসের মতো সমস্যাও দূর করতে সাহায্য করে হিংয়ের জল।
৪। রক্তে শর্কররার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, হিংয়ে রয়েছে হাইপোগ্লাইসেমিক উপাদান। যা রক্তে শর্কররার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। খালি পেটে হিংয়ের জল খেলে ডায়াবিটিসের রোগীরা ভাল থাকবেন।
৫। রোগপ্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে
হিংয়ে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান। দু’টিই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সাধারণ জ্বর-জ্বালা তো বটেই ভাইরাসের মোকাবিলা করতেও শরীরকে সাহায্য করে।