হবু মায়েদের জন্য সতর্কবার্তা সুনীতার গল্পে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
৩৮ বছরের দাম্পত্য যেন খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে। গোবিন্দ আর সুনীতা আহুজার সংসারে নাকি চিড় ধরেছে মাস ছয়েক আগেই। তাই বার বার শিরোনাম দখল করছেন বলিউডের জনপ্রিয় দম্পতি। অভিনেতার ম্যানেজার যদিও জানিয়েছেন, সম্পর্ক এখন আগের থেকে অনেক ভাল। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে স্বামীর সঙ্গে কাটানো এক আবেগঘন মুহূর্তের স্মৃতি রোমন্থন করেন সুনীতা। সেই অভিজ্ঞায় এক দিকে যেমন তাঁদের প্রেম ও ভালবাসার কথা প্রকাশ পাচ্ছে, পাশাপাশি হবু মায়েদের জন্য সতর্কবার্তাও স্পষ্ট হচ্ছে।
গোবিন্দ এবং সুনীতার দুই সন্তান টিনা এবং যশবর্ধন। ছবি: সংগৃহীত।
গোবিন্দ এবং সুনীতার দুই সন্তান। মেয়ে টিনা এবং পুত্র যশবর্ধন। যশবর্ধনের জন্মের সময়ে সুনীতার ওজন দাঁড়িয়েছিল ১০০ কেজিতে। সে কারণে প্রসবের সময়ে নানাবিধ জটিলতা দেখা দেয়। সে সময়ে সুনীতার মনে হয়, মা আর সন্তানের মধ্যে কোনও এক জনকে বাঁচানো সম্ভব হবে। তাই আগেভাগে চিকিৎসকদের তিনি বলে দেন, ‘‘যশকে বাঁচাবেন ডাক্তাবাবু। গোবিন্দের পুত্রসন্তানের শখ ছিল। তাই সন্তানকেই বাঁচাবেন। জন্ম দেওয়ার সময়ে আমি মরে গেলেও অসুবিধা নেই।’’ সে সময়ে লিঙ্গ নির্ধারণ আইনসিদ্ধ ছিল বলে তাঁরা আগে থেকেই জানতেন, পুত্রসন্তান হতে চলেছে। কিন্তু স্ত্রীর মুখে এমন কথা শুনে উচ্চস্বরে কাঁদতে থাকেন গোবিন্দ। এই ঘটনা তাঁদের প্রেমের অভিজ্ঞান হয়ে রয়েছে।
এই ঘটনা থেকে একটি বিষয় বোঝা যাচ্ছে, মাতৃত্বকালীন অতিরিক্ত ওজন মা বা সন্তানের প্রাণও কেড়ে নিতে পারে। স্থূলত্ব এবং অন্তঃসত্ত্বাকালীন অবস্থার সুসম্পর্ক নেই। বিশ্ব জুড়ে স্থূলত্বের সমস্যা রয়েছে। আর সব ক্ষেত্রেই জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে এটি। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ স্কুল অফ মেডিসিন অ্যাট সেন্ট মেরি’জ় হসপিটাল-এর একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছিল, গর্ভে সন্তান থাকাকালীন মাত্রাতিরিক্ত স্থূলতা মায়ের পাশাপাশি শিশুর জন্যও নানা ঝুঁকি তৈরি করে। মায়ের ক্ষেত্রে প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া, ডায়াবিটিস, রক্ত জমাট বাঁধা, সিজ়ারিয়ান প্রসব বা বুকের দুধ খাওয়ানোয় অসুবিধার মতো সমস্যা বাড়ে। অন্য দিকে শিশুর ক্ষেত্রে গর্ভেই মৃত্যু, জন্মগত ত্রুটি, অতিরিক্ত ওজন নিয়ে জন্ম এবং ভবিষ্যতে স্থূলত্বের ঝুঁকি বেড়ে যায়। স্থূলতা কেবল অন্তঃসত্ত্বাকালীনই নয়, পরবর্তী কালেও মায়ের দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যহানির ঝুঁকি বাড়ায়। তাই গর্ভে সন্তান আার আগেই ওজন কমিয়ে নেওয়া উচিত। প্রয়োজন মতো জীবনযাত্রার পরিবর্তন, সুষম খাদ্যাভ্যাস, হালকা ব্যায়াম এবং চিকিৎসকের নিয়মিত পরামর্শ নেওয়া সে ক্ষেত্রে অপরিহার্য।