প্রতীকী চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
সমাজের সর্বস্তরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার নিয়ে নানা মত প্রকাশ্যে এসেছে। চিকিৎসা জগৎও তার ঊর্ধ্বে নয়। এ বারে পার্কিনসন্স রোগ শনাক্ত করে দেবে এআই। নিউ ইয়র্কের রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা সম্প্রতি তাঁদের গবেষণার অধীনে এ রকমই একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন। যন্ত্রটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘পার্ক’।
পার্কিনসন্স কী?
পার্কিনসন্স একটি স্নায়ুরোগ, যা মানুষের হাঁটাচলা, কথা বলা এবং শারীরিক ভারসাম্যকে প্রভাবিত করে। সময়ের সঙ্গে রোগের প্রভাবও বাড়তে থাকে। সাধারণত ৬০ বছরের পর থেকে ব্যক্তির দেহে এই রোগ দেখা দিতে পারে। পার্কিনসন্স নির্মূল করা সম্ভব নয়। তবে ওষুধ এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
‘পার্ক’-এর বিশেষত্ব কোথায়
এই যন্ত্রটি আসলে একটি স্মার্ট হোম ডিভাইসের সঙ্গে মিলে কাজ করে। এই ধরনের যন্ত্র এখন অনেকেই বাড়িতে ব্যবহার করেন। নির্মাতাদের দাবি, যন্ত্রটির মাধ্যমে এআই ব্যক্তিকে কিছু নির্দেশ দিয়ে থাকে, যা বিশ্লেষণ করে ওই ব্যক্তি পার্কিনসন্সে আক্রান্ত হয়েছেন কি না, তা বোঝা সম্ভব।
কী ভাবে কাজ করে
প্রায় ১ হাজার ৩০০ অংশগ্রহণকারীর থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ‘পার্ক’-কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নির্মাতাদের দাবি, যন্ত্রটির মাধ্যমে ব্যক্তিকে বাড়িতে বসেই একাধিক স্নায়ু সংক্রান্ত পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়। তার মধ্যে কথা বলা, মুখের অভিব্যক্তি এবং আঙুলের সঞ্চালন ইত্যাদি রয়েছে। তার পর যন্ত্রটি ব্যক্তির থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে জানিয়ে দেয় তিনি পার্কিনসন্সে আক্রান্ত কি না। পরীক্ষালব্ধ ফলাফলের উপর নির্ভর করে সম্ভাব্য চিকিৎসাপদ্ধতি সম্পর্কেও সুস্পষ্ট ধারণা দেয় ‘পার্ক’। এই পরিষেবা ইন্টারনেট ব্রাউজ়ারের মাধ্যমেও ব্যবহার করা যায়। তবে স্মার্ট হোম ডিভাইসের মাধ্যমে ‘পার্ক’ সবথেকে ভাল ফলাফল প্রদান করতে সক্ষম বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা।
সাফল্যের হার
চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে এআই-এর ব্যবহার নিয়ে এখনও নানা মতামত প্রকাশ্যে আসে। সেখানে নির্মাতাদের দাবি, পার্কিনসন্স শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত ‘পার্ক’-এর সাফল্যের হার ৮৬ শতাংশ। স্নায়ুরোগের চিকিৎসা পরিষেবা যাঁদের নাগালের বাইরে রয়েছে, এই যন্ত্রটির সাহায্যে তাঁরা উপকৃত হবেন বলেই মনে করছেন নির্মাতারা। তার পর প্রয়োজনমতো চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করলে, সময়ে পার্কিনসন্সকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হতে পারে।
বাজারে কবে আসবে
সাধারণ মানুষ কবে থেকে ‘পার্ক’ ব্যবহার করতে পারবেন, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত নির্মাতারা কোনও তথ্য ঘোষণা করেননি। তবে তাঁদের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত অ্যামাজ়ন বা গুগ্লের মতো স্মার্ট হোম ডিভাইস প্রস্তুতকারক বহুজাতিক সংস্থার সঙ্গে তাঁরা কোনও রকম গাঁটছড়া বাঁধেননি। এ ক্ষেত্রে তাঁরা ব্যবহারকারীর তথ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে চাইছেন।