তুলসীর বীজ এত উরকারী? জানলে অবাক হবেন। ছবি:ফ্রিপিক।
পাতিলেবুর শরবত হোক, কি কুলুক্কি (পাতিলেবুর রস, চিনির সিরাপ, তুলসীর বীজ, মশলা সহযোগে তৈরি গরমে খাওয়ার পানীয়)—রকমারি পানীয়ে দেখা যায় কালচে গোল এক রকম বীজ। বাইরে থাকে পিচ্ছিল আবরণ। এ়়টি আসলে তুলসীর বীজ। স্থানীয় নাম সবজা।
গরমের দিনে শরীর ঠান্ডা রাখতে খাওয়া এই তুলসী বীজই না কি ‘সুপারফুড’! এইমস এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা চিকিৎসক সৌরভ শেট্টি তুলসীর বীজ নিয়ে এমনটাই বলছেন। ভারতে এই বীজের ব্যবহার নতুন নয়। তবে তার উপকারিতা যে এতটা, তা অনেকেরই জানা নেই।
চিকিৎসক বলছেন, গরমের দিনে শরীরের জলের অভাব যাতে না হয়, সে কারণে তুলসী বীজ খাওয়ার চল রয়েছে। কারণ, এই বীজ জল ধরে রাখতে সক্ষম। তবে শুধু এ টুকুই নয়, কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, পেট ফাঁপার মতো সমস্যা প্রতিরোধেও এই বীজ কার্যকর। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে দেয় না, কোলেস্টেরল বশে রাখে— সুস্থ থাকার জন্য যা যা দরকার, তার সবটাই মেলে এতে।
ছোট ছোট কালো দানা। কিন্তু জল ভেজালেই ফুলে যায়। সামান্য দানার মধ্যেই রয়েছে ফাইবার, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন। হা়ড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে বীজটি, এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেসও কমায়।
পেটের স্বাস্থ্য: তুলসী বীজ জল শোষণ করে জেলের মতো হয়ে যায়। ফলে পেট পরিষ্কার রাখতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এতে মেলে সলিউবল ফাইবার। অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য তা জরুরি। খাবার হজমেও কার্যকর এতে থাকা ফাইবার। পুষ্টি শোষণেও তা সাহায্য করে। চিকিৎসক বলছেন, এই বীজ জল শোষণ করতে পারে। সেই কারণে, জলে ভেজানো বীজ খেলে শরীরে জলের অভাব হবে না।
ওজন: বীজটি পেটে গিয়ে ফুলে যায়। ফাইবার থাকায় চট করে খিদেও পায় না। পেট ভরা থাকায় অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখে বীজটি। ফলে ওজন কমানোর জন্য এটি আদর্শ।
কোলেস্টেরল, শর্করার মাত্রা: বীজে থাকা ফাইবার ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ফাইবার থাকার ফলেই রক্তে শর্করার মাত্রাও চট করে বাড়তে পারে না। ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজে ভরপুর বীজ ডায়েটে জুড়লে হাড়ের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে। খনিজের ঘাটতি পূরণেও এটি খাওয়া যাবে।
তবে এটি খাওয়ার নিয়ম আছে। শুকনো বীজ খেলে এবং ভেজানো বীজও অতিরিক্ত খেলে সমস্যা হতে পারে।
বীজটি খাওয়ার নিয়ম
১-২ টেবিল চামচ তুলসীর বীজ এক গ্লাস জলে ঘণ্টা খানেক ভিজিয়ে রাখুন। বীজ জল পেয়ে ফুলে গেলে সেটি খাওয়া যাবে। লেবুর জল বা শরবতে মিশিয়ে খাওয়া যায়। স্মুদিতেও মেশানো যেতে পারে। টক দই, ফলের সঙ্গেও ভেজানো তুলসীর বীজ খাওয়া যেতে পারে।