গ্রাফিক— আনন্দবাজার ডট কম।
হাত মুঠো পাকিয়ে তার জোর পরীক্ষা করেছেন কখনও? মুষ্টিবদ্ধ হাতের ঘুষির জোরের কথা হচ্ছে না কিন্তু, দেখতে হবে কতটা জোরে মুঠো পাকাতে পারছেন। বা কোনও জিনিসকে কতটা জোরালো ভাবে মুঠো পাকিয়ে ধরতে পারছেন। সেই যে মুঠোর জোর যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘গ্রিপ’, তাতেই লুকিয়ে স্বাস্থ্যের আয়না! বলছে একটি গবেষণা।
ওই গবেষণার জন্য ১৭টি দেশের প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের উপর নিয়মিত নজর রাখা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, এঁদের কারও মুঠোর জোর যখন সামান্যতমও কমেছে তখন তিনি কোনও না কোনও বড় ধরনের শারীরিক অসুস্থতার কবলে পড়ছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘনিয়ে এসেছে মৃত্যুও।
মেডিক্যাল জার্নাল 'ল্যানসেট'-এ প্রকাশিত ওই গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, বয়স, লিঙ্গ এমনকি, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা কোন দেশে, কোন পরিবেশে রয়েছেন, এই সব বিষয় আলাদা করে কোনও প্রভাবই ফেলেনি ফলাফলে। অংশগ্রহণকারী যে বয়স বা যে লিঙ্গেরই হোন, মুঠোর জোর কমার কিছু দিনের মধ্যেই তাঁদের শারীরিক অসুস্থতা ধরা পড়েছে। কারও হার্ট অ্যাটাক হয়েছে, তো কারও হয়েছে ব্রেন স্ট্রোক। কিডনি, লিভার কিংবা অন্য প্রত্যঙ্গের সমস্যাও দেখা গিয়েছে কোনও কোনও ক্ষেত্রে।
গবেষকেরা হিসাব করে দেখেছেন মুঠোর জোর খুব অল্প মাত্রায় কমলেও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৯ শতাংশ বেড়েছে, স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়েছে ৭ শতাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, মুঠোর জোরে ওজন ধরার ক্ষমতা ৫ কেজি কমলে অসুস্থতার ঝুঁকি বেড়েছে ১৬ শতাংশ।
তবে কি মুঠোর জোর বাড়লেই শরীর ভাল থাকবে?
তেমন কোনও আশ্বাস যদিও দিচ্ছে না গবেষণা। তবে গবেষকেরা বলছেন, হাতের মুঠোর জোর বা গ্রিপের উপর নির্ভর করে পেশির স্বাস্থ্য, হার্টের স্বাস্থ্য এবং মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর স্বাস্থ্যও। সম্ভবত সেই জন্যই বহু ফিটনেস প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ দেওয়ার আগে মুঠোর জোর পরীক্ষা করেন।
কী ভাবে মুঠোর জোর বৃদ্ধি করা সম্ভব?
বাড়িতে বাগান পরিচর্যার কাজ করলে, ঘরের কাজ করলে, রান্নাবান্না করলে মুঠোর জোর বাড়ে। এ ছাড়া কিছু শরীরচর্চার মাধ্যমেও মুঠোর জোর বৃদ্ধি করা সম্ভব। বিভিন্ন ধরনের পুশ-আপস, টেনিস বল স্কুইজ় করা, টাওয়েল টুইস্ট, পিঞ্চ হোল্ডের মতো পেশির চর্চায় মুঠোর জোর বাড়তে পারে।